পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঈদের বাকি আর দুদিন। রাজধানীর শপিংমলগুলো ফাঁকা। ক্রেতা নেই। অলস সময় কাটাচ্ছেন বিক্রেতারা। শপিংমলের কাপড় ব্যবসায়ীরা হতাশ। তারা বলেন, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দোকান খোলা রেখেও ক্রেতার দেখা মিলছে না। বেচাবিক্রি একদম নেই বললেই চলে। এ অবস্থায় দোকান ভাড়া ও কর্মচারীদের বেতন দেয়াই কষ্টকর হয়ে যাবে। তাদের মতে, করোনা সংক্রমণের ভয়ে বিত্তবান বা সামর্থবানরা শপিংমলে আসছেন না। বিকল্প হিসেবে তারা অনলাইনে কেনাকাটা সেরে নিচ্ছেন। মধ্যবিত্ত শ্রেণির কেনাকাটার সামর্থ নেই বললেই চলে। এদের অনেকেই আবার পরিবার-পরিজনকে গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছেন। তবে ফুটপাত ও ছোট মার্কেটগুলোতে বেচাকেনা চলছে মোটামুটি। ক্রেতারা জানান, করোনার সংক্রমণের মধ্যেই অতিক্রান্ত হয়েছে ঈদুল ফিতর। সে সময় কেনাকাটার মতো অবস্থা ছিল না। এবার অল্পের মধ্যে ফুটপাত বা ছোট মার্কেট থেকে তারা কেনাকাটা করছেন। ব্যবসায়ীদের পরিসংখ্যান মতে, পহেলা বৈশাখ, ঈদুল ফিতর আর ঈদ উল আযহা, বছরের এই তিনটি উৎসবেই ৭০ ভাগ পণ্য বেচাকেনা করেন বস্ত্র ব্যবসায়ীরা। যার বাজার মূল্য প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা। করোনার কারণে এবার তিনটি উৎসবই ক্রেতাশূণ্য কাটালেন ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, সরকারের নির্দেশে শপিংমলগুলো খোলা রাখা হচ্ছে সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। কোরবানির ঈদ বলে কেনাকাটা কম। তবে ঈদের কেনাকাটা জমে সন্ধ্যার পর থেকে। যদি ঈদ উপলক্ষে রাত ৯টা পর্যন্ত দোকান রাখা যায়, তাহলে বেচাবিক্রি কিছুটা হলেও বাড়তো।
স্বাভাবিক সময়ে ঈদের ১৫দিন আগে থেকেই জমে উঠতো রাজধানীর শপিংমলসহ বড় বড় মার্কেটগুলো। ঈদের সাত দিন আগে থেকে উপচে পড়া ভিড়ে শপিংমলে প্রবেশ করাও মুশকিল হতো। ক্রেতাদের ভিড়ে বিক্রেতারাও থাকতেন ভীষণ ব্যস্ত। দাম-দর করার সময়ও থাকতো না। করোনার মধ্যে এবার সেই চিত্র একেবারেই ভিন্ন। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর মালিবাগে কনকর্ড অর্কিডে গিয়ে দেখা গেছে ক্রেতাশূণ্য পুরো মার্কেট। বিক্রেতাদের কেউ খোশ গল্প করছেন, কেউবা ঝিমাচ্ছে, কেউ কেউ ঘুমিয়ে গেছেন। মার্কেটে কেউ ঢুকলেই সরগোল পড়ে যাচ্ছে। সবাই মিলে তাকে ডাকাডাকি করছেন। এতে ক্রেতাও কিছুটা বিব্রত। সাজ্জাদ নামে এক ক্রেতা জানান, তিনি তার দুই মেয়ের জন্য দুটো জামা কিনতে এসেছেন। প্রতি বছরই এখান থেকে কেনেন। এবার করোনার ভয়ে মেয়েদেরকে সঙ্গে আনেননি। ফাঁকা দোকান দেখে অস্বস্তি লাগছে জানিয়ে তিনি বলেন, বিক্রয়কর্মীরা যেভাবে ডাকাডাকি করছে তাতে বিব্রত হতেই হয়। এই শপিংমলে তো এমন হওয়ার কথা নয়। এতো ডাকাডাকির মধ্যে কোন দোকানে ঢুকবেন তা নিয়েও দ্বিধাদ্ব›দ্ব দেখা গেছে এই ক্রেতার মধ্যে।
মালিবাগের কর্ণফুলী মার্কেটে এসেছিলেন রামপুরার শাহানা আক্তার। তিনি বলেন, পুরো মার্কেটই খালি। কোন ক্রেতা নেই। করোনার মধ্যে মানুষ আসছে না। সে হিসাবে নিজেকে অনেকটা অসচেতন মনে হচ্ছে। ভাবছি তাহলে আমি কেন এলাম। যদিও ফাঁকা মার্কেটে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি নেই। শাহানা আক্তার বলেন, বাচ্চাদের জন্য অল্প কিছু কেনাকাটা করতে এসেছি। ঈদ বলে কথা, একদম কিছু কিনে না দিলে তো আর চলে না। কয়েক মাস ধরে বাচ্চারা একেবারে গৃহবন্দি হয়ে আছে। এই মার্কেটের একজন বিক্রেতা জানান, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্রেতার দেখা মিলছে খুবই কম। হাতে গোনা কিছু ক্রেতা আসছেন। যে দোকানে ঢুকছেন সেখান থেকেই কেনাকাটা করে চলে যাচ্ছেন। তার মানে ক্রেতারা খুব বেশি সময় নষ্ট করছেন না বা পছন্দ নিয়ে সময়েেক্ষপণ করছেন না। বসুন্ধরা সিটির ব্যবসায়ীরা জানান, ঈদ উপলক্ষে যেভাবে ক্রেতা সমাগম হওয়ার কথা তার সিকিভাগও নেই এবার। কিছু কিছু ক্রেতা আসছেন, তবে তারা কিনছেন খুব সামান্যই। রেডিমেট কাপড় ব্যবসায়ী সায়মন খান বলেন, স্বাভাবিক সময় হলে ঈদের দুদিন আগে আমরা খাওয়া দাওয়া করার সময় পেতাম না। একসাথে ২০-২৫জন কাস্টমার দোকানে ঢুকে যেতো। গত কয়েকদিন ধরে হাতেগোনা কাস্টমার মার্কেটে আসছেন। বাচ্চাদের নিয়ে যারা আসছেন তারা কিছুটা কেনাকাটা করছেন। বাকিদের অধিকাংশ ঘুরাঘুরি করে ফিরে যাচ্ছেন।
যমুনা ফিউচার পার্কের কসমেটিকস ব্যবসায়ী বলেন, করোনার কারণে বিক্রি নেই বললেই চলে। ঈদ উপলক্ষে যতোটুকু আশা করেছিলাম, তার চারভাগের একভাগও হয়তো হবে না। তিনি বলেন, আমাদের আইটেম গিফট হিসাবে মানুষ কিনে থাকে। করোনার মধ্যে কে কাকে গিফট দিবে?
নিউমার্কেটর কাপড়ের ব্যবসায়ী ফকির আশরাফ বলেন, করোনার বিপর্যয়ের মুখে রোযার ঈদে শপিংমলগুলো বন্ধ থাকার পর ভেবেছিলাম এই ঈদে কিছুটা ক্ষতি পুষিয়ে ওঠা যাবে। এখন দেখছি কাস্টামরই নাই। সারাদিনের বেচাবিক্রি দিয়ে কর্মচারিদের বেতনই দিতে পারবো না।
এলিফ্যান্ট রোডের বিক্রেতারা জানান, ফ্যাশন সচেতনদের জন্য নতুন ডিজাইনের পোশাক নিয়ে তারা শতভাগ প্রস্তুত থাকলেও, বিক্রি হচ্ছে খুবই কম। তারা বলেন, গত বার আমরা যে বিক্রি করেছি তার ১০% ও এবার বিক্রি হবে না। ‘রং বাংলাদেশ’ এর প্রধান নির্বাহী সৌমিক দাস বলেন, এভাবে চলতে থাকলে বিশাল জনগোষ্ঠী কর্মহীন হয়ে পরবে এবং অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে সরকারের সুদৃষ্টি আশা করছি। ব্যাংকগুলো যদি লোনের একটা ব্যবস্থা করে দেয় তাহলে এই অর্থনৈতিক চালিকা অতি তাড়াতাড়ি সচল হয়ে যাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।