Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রিয়ালের শিরোপা পুনরুদ্ধার

মাদ্রিদে উৎসবের রাতে বার্সেলোনায় হারের লজ্জা

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৮ জুলাই, ২০২০, ১২:০০ এএম

রিয়াল মাদ্রিদের হার আর বার্সেলোনার জয় এই দুই সমীকরণই পারতো কেবল শিরোপা নিষ্পত্তির বাধা হয়ে দাঁড়াতে। যার কোনোটিই হয়নি। বার্সার হারের লজ্জার দিনই দুর্দান্ত এক জয় দিয়ে ৩৪তম স্প্যনিশ লা লিগার শিরোপা উৎসবে মাতল রিয়াল।
গতপরশু রাতে একই সময় শুরু হওয়া দুটি ম্যাচের ৯০ মিনিটের সময়ই বোঝা গিয়েছিল দু’বছর পর চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী বার্সার কাছ থেকে শিরোপা যাচ্ছে রিয়ালের ঘরে। একদিকে নিজেদের মাঠে ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে এগিয়ে রিয়াল। অপরদিকে বার্সেলোনায় ওসাসুনার বিপক্ষে সমতা। শেষ মুহ‚র্তে গোল খেলেও তাই চ্যাম্পিয়ন হতো রিয়াল। সেখানে বার্সেলোনা উল্টো ৯৪ মিনিটে গোল হজম করে সব হিসেব মিটিয়ে দিলো। লিগে ২০১৮ সালের পর এই প্রথম নিজেদের মাঠে হারল বার্সেলোনা। কাকতালীয় হলেও এদিন বার্সেলোনার ডাগআউটে যিনি ছিলেন, সেই কিকে সেতিয়েনই সেবার ছিলেন প্রতিপক্ষের ডাগআউটে!
ঘরের মাঠ আলফ্রেদো ডি স্তেফানো স্টেডিয়ামে শিরোপা উদযাপনের মঞ্চ তৈরি ছিল রিয়ালের জন্য। সহজ সমীকরণ সামনে রেখে দারুণ পারফরম্যান্স উপহার দিয়ে ২-১ গোলে জিতেছে দলটি। দুই অর্ধে দুবারই লক্ষ্যভেদ করলেন স্ট্রাইকার করিম বেনজেমা। শেষ দিকে ঘুরে দাঁড়ালেও স্বাগতিকদের অপ্রতিরোধ্য যাত্রায় বাধা হতে পারেনি ভিয়ারিয়াল। তাতে এবারের আসরে টানা দশম জয়ের স্বাদ নিয়েই শিরোপা উল্লাসে মেতেছে জিনেদিন জিদানের দল। স্পেনের পেশাদার ফুটবলের শীর্ষ স্তরে এটি তাদের রেকর্ড ৩৪তম শিরোপা। ২০১৬-১৭ মৌসুমের পর প্রথমবারের মতো সেরার মুকুট জিতে নিয়েছে সফলতম স্প্যানিশ ক্লাবটি।
ভালদেবেবাসে ততক্ষণে উৎসব শুরু হয়ে গেছে। ন্যু ক্যাম্পে ওসাসুনার কাছে একই ব্যবধানের হারে রিয়ালের শিরোপা জয়ের স্বাদ আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে বার্সা। ঘরের মাঠে ১০ জনের দলটির বিপক্ষেও পেরে ওঠেনি গত দুই বারের চ্যাম্পিয়নরা। জয়ী দলের হয়ে গোল দুটি করেন হোসে আরনাইজ ও রোবের্তো তোরেস। ফ্রিকিক থেকে বার্সার গোলটি পান অধিনায়ক লিওনেল মেসি। ৩৭ ম্যাচ শেষে রিয়ালের পয়েন্ট ৮৬। আর দ্বিতীয় স্থানে থাকা দুই আসরের চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনার ঝুলিতে ৭৯ পয়েন্ট।
শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলা রিয়াল ২৯তম মিনিটে এগিয়ে যায়। মাঝমাঠে বল দখলে নিয়ে ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার কাসেমিরো খুঁজে নেন লুকা মদ্রিচকে। এই ক্রোয়েশিয়ান মিডফিল্ডার খানিকটা এগিয়ে ডি-বক্সের ভেতরে পাস দেন ফরাসি তারকা বেনজেমাকে। নিখুঁত শটে অতিথি গোলরক্ষকের দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে বল জালে পাঠান তিনি। ৭৭তম মিনিটে সফল স্পট-কিক থেকে ব্যবধান দ্বিগুণ করে রিয়ালের জয় প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেন বেনজেমা। সার্জিও রামোস ডি-বক্সে ফাউলের শিকার হওয়ায় পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন রেফারি।
সেসময় অবশ্য তৈরি হয়েছিল বেশ নাটকীয়তা। প্রথমে স্পট-কিক নেন রিয়াল অধিনায়ক রামোস। তিনি গোলমুখে শট না নিয়ে বল বাড়িয়ে সামনে দেন। ডি-বক্সের বাইরে থেকে দৌড়ে এসে জালের ঠিকানা খুঁজে নেন বেনজেমা। কিন্তু বাতিল হয় গোলটি। কারণ, রামোস বলে পা ছোঁয়ানোর আগেই বেনজেমা ডি-বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন। তাই ফের স্পট-কিক নিতে হয় রিয়ালকে। দ্বিতীয় দফায় অবশ্য বাড়তি কোনো কৌশলের আশ্রয় নেয়নি তারা। গড়ানো শটে চলতি লিগে নিজের ২১তম গোলটি করেন বেনজেমা। গোলদাতাদের তালিকায় তিনি আছেন দুইয়ে। ২৩ গোল নিয়ে তার সামনেই আছেন বার্সার লিওনেল মেসি।
ছয় মিনিট পর ম্যাচের স্কোরলাইন ২-১ করেন ভিসেন্তে ইবোরা। ডান দিক থেকে মারিও গ্যাসপারের ক্রসে হেড করে রিয়ালের জাল কাঁপান এই স্প্যানিশ মিডফিল্ডার। ব্যবধান কমানোর পর সমতায় ফিরতে মরিয়া হয়ে খেলতে থাকে ভিয়ারিয়াল। কিন্তু ৮৮তম মিনিটে দুটি দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করে দলটি। সতীর্থের কর্নারে বিপজ্জনক জায়গায় বল পেয়েও ব্রুনো সোরিয়ানো পা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হওয়ার পর উড়িয়ে মারেন সোফিয়ান চাকলা। দ্বিতীয়ার্ধের যোগ করা সময়ে মার্কো আসেনসিও লক্ষ্যভেদ করেছিলেন। তবে ভিএআরের সাহায্যে গোলটি বাতিল করে দেন রেফারি। উল্টো তিনি হ্যান্ডবলের বাঁশি বাজান। কারণ, আসেনসিওকে পাস দেওয়ার আগে বল লেগেছিল বেনজেমার হাতে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শিরোপা-পুনরুদ্ধার
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ