মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতে গরু ও গোশত নিয়ে সহিংসতায় যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ
ইনকিলাব ডেস্ক : ভারতে দিন দিন বেড়েই চলেছে অসহিষ্ণুতা। গরুর মাংসের ব্যবসা করায় মানুষ হত্যা থেকে শুরু করে দলিত সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন- সবকিছুই ভয়াবহ উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। আর এমন ক্রমবর্ধমান অসহিষ্ণুতা ও হিংসার ঘটনায় উদ্বিগ্ন ওয়াশিংটন। এ বিষয়ে ভারত সরকারকে সতর্ক করেছে মার্কিন প্রশাসন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মোদি সরকারকে সবরকম ক্ষমতা প্রয়োগের পরামর্শ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। খবরে বলা হয়, গরু ও গরুর গোশতকে কেন্দ্র করে ভারতে যে অসহিষ্ণুতা ও সহিংসতা মাথাচাড়া দিয়েছে তাতে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জন কিরবি। ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক অসহিষ্ণুতার প্রশ্ন ঘিরে কয়েক মাস আগে যে বিতর্ক উত্তাল করেছিল ভারতকে, সেই প্রশ্নই এবার তুলে ধরল যুক্তরাষ্ট্র। কিরবি বলেন, দৃশ্যত কিছুদিনের বিরতির পর বিজেপি শাসিত ভারতে গো-রক্ষা আন্দোলন নতুন করে চাঙা হচ্ছে। এক শ্রেণীর হিন্দুত্ববাদীর হাতে সম্প্রতি গরুকে কেন্দ্র করে মুসলিম এমনকি নিম্নবর্ণের হিন্দুদের হয়রানি ও লাঞ্ছিত করার পরপর কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জন কিবরি এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, এধরনের অসহিষ্ণুতা ও সহিংসতায় আমরা বাস্তবিকই উদ্বিগ্ন। আমরা চাই ভারত সরকার তার নাগরিকদের অধিকার রক্ষা করে অপরাধীদের কড়া শাস্তি দিক। ধর্মীয় আচার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা এবং অসহিষ্ণুতার মোকাবিলায় ভারতের জনগণ ও সরকারের পাশে আমরা দৃঢ় সমর্থন নিয়ে আছি। বিজেপি গত সাধারণ নির্বাচনে ভারতের ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশে গো-রক্ষা আন্দোলন তীব্র হয়েছে। সেইসঙ্গে বিজেপি শাসিত বিভিন্ন রাজ্যে চালু হয়েছে গো-হত্যা ও গরুর গোশত নিষিদ্ধ আইন। এ নিয়ে ভারতজুড়েই অশান্তি লেগে আছে। দেশটির কোনো না কোনো এলাকায় এ সংক্রান্ত ঘটনা ঘটছেই। গত বছর দিল্লির লাগোয়া উত্তর প্রদেশের দাদরিতে বাড়িতে গরুর গোশত পাওয়ার অভিযোগে এক মুসলিম পরিবারের ওপর মারাত্মক হামলা চালানো হয়। আকলাখ আহমেদ নামে ওই বাড়ির প্রবীণ গৃহকর্তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলেন স্থানীয় লোকজন। সেই থেকে প্রায়ই মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশে অশান্তি লেগেই আছে। সম্প্রতি দুটি ঘটনায় নতুন করে শুরু হয়েছে অসহিষ্ণুতা বিতর্ক। গরু মেরে তার চামড়া ছাড়ানোর অভিযোগে বিজেপি শাসিত গুজরাটে দলিত সম্প্রদায়ের চারজনকে নগ্ন করে গাড়ির সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক পেটানো হয়। অত্যাচারের সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। সংসদ উত্তাল হয়ে ওঠে। ক’দিন পরই মধ্য প্রদেশের এক ট্রেন স্টেশনে দুই মুসলিম নারীকে পুলিশের সামনেই মারধর করা হয়। অভিযোগ, তাদের কাছে গরুর গোশত পাওয়া গেছে। যদিও তদন্তে দেখা যায়, তাদের কাছে থাকা গোশত ছিল মহিষের। এদিকে, গুজরাটে দলিত-নিগ্রহের রেশ সেই রাজ্যে নতুন সংকটের জন্ম দিয়েছে। গরুর চামড়া ছাড়ানোর কাজ এ দেশে যারা করেন, তারা প্রায় সবাই হয় মুসলমান অথবা দলিত সম্প্রদায়ের মানুষ। গুজরাটের দলিতরা নিগৃহীত হওয়ার পর তারা সেই কাজ করা বন্ধ রেখেছেন। রাজ্যের চর্মকারদের এই সিদ্ধান্তের ফলে শুরু হয়েছে নতুন প্রশাসনিক সংকট। বাড়ছে উত্তেজনাও। এমনিতেই গো-হত্যা নিষিদ্ধ হওয়ায় দেশের চামড়াশিল্প বিপন্ন। পাশাপাশি গরুর গোশত রপ্তানিও মারাত্মক কমে গেছে। গো-রক্ষার নামে রাজ্যে রাজ্যে উগ্র হিন্দু সংগঠনগুলোর দাপাদাপিতে সহিংসতাও বেড়ে চলেছে। বিবিসি, রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।