পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জেকেজির চেয়ারম্যান ও জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের কার্ডিয়াক সার্জন ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জেকেজি হেলথ কেয়ারের করোনা টেস্ট নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে এরইমধ্যে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী আরিফ চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সাবরিনা তার স্ত্রী। অন্যদিকে জেকেজি হেলথকেয়ারের চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী নামে পরিচিত ডা. সাবরিনা শারমিন হুসাইনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। গতকাল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবদুল মান্নানের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের ডিসি মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে যেসব প্রশ্ন করা হয়েছে তিনি সেগুলোর সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি। তাই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলার তদন্তের জন্য তাকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। সোমবার (আজ) তাকে আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ড চাইবে পুলিশ। এর আগে গতকাল দুপুর সোয়া ১টায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তেজগাঁও ডিসি কার্যালয়ে আনা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন জেকেজির প্রতারণা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ডিসিসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। দুই ঘণ্টা পর বিকেল সোয়া ৩টার দিকে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
ডা. সাবরিনা জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক। তিনি গণমাধ্যমে নিজেকে জেকেজির ‘চেয়ারম্যান নয়’ বরং প্রতিষ্ঠানটির ‘কোভিড-১৯ বিষয়ক পরামর্শক’ দাবি করেছেন। তবে পুলিশের তদন্ত বলছে, সাবরিনাই জেকেজির চেয়ারম্যান।
পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে সাবরিনা কী বলেছেন, তা জানা না গেলেও গত শনিবার একটি বেসরকারি চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার দেন তিনি। সেখানে সাবরিনা দাবি করেন, আমার জেকেজির চেয়ারম্যান হওয়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। বরং এটা ওভাল কোম্পানির একটি অঙ্গ সংগঠন। ওভাল গ্রæপ ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। যেখানকার মালিক হচ্ছেন আরিফুর রহমান।
ডিসি হারুন আরো বলেন, এর আগে করোনাভাইরাস পরীক্ষার নামে জালিয়াতির অভিযোগে জেকেজির যেসব সদস্য গ্রেফতার হয়েছেন তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাদের সবাই বলেছেন সাবরিনাই জেকেজির চেয়ারম্যান। তাছাড়া তেজগাঁও কলেজে জেকেজির বুথে হামলার অভিযোগ উঠলে সাবরিনাই প্রতিষ্ঠানটির মুখপাত্র হিসেবে সংবাদমাধ্যমে বক্তব্য দেন। অভিযানের একদিন আগে তিনি নিজে প্রতিষ্ঠান থেকে সরে যান। সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে তিনি কখনই কোনো প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানের দায়িত্বপালন করতে পারেন না।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কী তথ্য দিয়েছেন সাবরিনা জানতে চাইলে হারুন অর রশিদ বলেন, তিনি জেকেজির সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেন। আমরা জিজ্ঞাসা করেছিলাম তিতুমীর কলেজে জেকেজির বুথে হামলার বিষয়ে গণমাধ্যমে আপনি প্রতিষ্ঠানের মুখপাত্র হিসেবে বক্তব্য দিয়েছিলেন কেন? তখন তিনি জানান, আমার স্বামী বলতে বলেছিল। আবার তিনি ফেসবুকে স্বামীর সঙ্গে আলাদা থাকছেন দুই মাস ধরে এসবও লিখেছেন। আসলে আমাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
সূত্র জানায়, স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষ থেকে বিনামূল্যে নমুনা সংগ্রহ করার চুক্তি করেছিল জোবেদা খাতুন সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা (জেকেজি হেলথকেয়ার)। কিন্তু বাসা থেকে ৫ হাজার থেকে ৮ হাজার ৬০০ টাকার বিনিময়ে তারা নমুনা সংগ্রহ করছিলেন এবং ভুয়া প্রতিবেদন দিচ্ছিলেন। একজন ভুক্তভোগীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ প্রথমে সাবরিনা আরিফ চৌধুরীর স্বামী আরিফুল হক চৌধুরীসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করে। গত শনিবার স্বাস্থ্য অধিদফতর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, জেকেজি তাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর জেকেজি ওভাল গ্রæপ অব লিমিটেডের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান।
পুলিশ জানিয়েছে, জেকেজি হেলথকেয়ার থেকে ২৭ হাজার রোগীকে করোনা টেস্টের রিপোর্ট দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১১ হাজার ৫৪০ জনের করোনার নমুনা আইইডিসিআরের মাধ্যমে সঠিক পরীক্ষা করানো হয়েছিল। বাকি ১৫ হাজার ৪৬০ রিপোর্ট প্রতিষ্ঠানটির ল্যাপটপে তৈরি করা হয়। জব্দ করা ল্যাপটপে এর প্রমাণ মিলেছে। জেকেজির মাঠকর্মীরা ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, সাভার, কেরানীগঞ্জ ও নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে করোনা উপসর্গ দেখা দেয়া মানুষের নমুনা সংগ্রহ করতো। প্রতি রিপোর্টে পরীক্ষার কথা বলে ৫-১০ হাজার টাকা নিতো। আর বিদেশিদের কাছ থেকে নিতো ৮০ থেকে ১০০ ডলার। সেই হিসাবে করোনা পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্টে প্রতিষ্ঠানটি প্রায় ৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে পুলিশের ধারণা।
এদিকে, ডা. সাবরিনাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। গতকাল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবদুল মান্নানের সই করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. সাবরিনা শারমিন হুসাইন চাকরিতে থেকেও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান জেকেজি’র চেয়ারম্যান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। করোনা পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট প্রদান ও অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন বলে গতকাল পুলিশের হাতে তিনি গ্রেফতার হয়েছেন।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, সরকারি কর্মকর্তা হয়ে সরকারের অনুমতি ছাড়াই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত থাকা এবং অর্থ আত্মসাৎ সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাই ডা. সাবরিনা শারমিন হুসাইনকে সরকারি কর্মচারী বিধিমালার বিধি ১২ (১) অনুযায়ী সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। সাময়িক বরখাস্তকালীন সময়ে তিনি বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা প্রাপ্ত হবেন। এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।