পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে আজ শুক্রবার জুমার নামাজে মসজিদে মসজিদে মুসল্লিদের উপচে পড়া ভীড় পরিলক্ষিত হয়। অধিকাংশ মসজিদে জায়গা সঙ্কুলান না হওয়ায় মুসল্লিদের রাস্তার ওপর জুমার নামাজ আদায় করতে হয়েছে। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের প্রবেশ পথে জীবাণুনাশক বুথ স্থাপন করা হয়। নগরীর মহাখালিস্থ মসজিদে গাউছুল আজম কমপ্লেক্সেও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে প্রচুর মুসল্লির সমাগম ঘটে। করোনা মহামারী থেকে মুক্তি পেতে গুনাহমুক্ত জীবন অর্জন করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন খুৎবা পূর্ব বয়ানে পেশ ইমামরা।
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম মুফতি মুহিউদ্দিন কাশেম খুৎবা পূর্ব বয়ানে বলেন, করোনা মহামারীতে যে ব্যক্তি অসহায় বিপদগ্রস্ত মানুষের সাহায্যে হাত বাড়াবেন আল্লাহপাক তার সাহায্যে এগিয়ে আসবেন। হাদীসে এসেছে যে ব্যক্তি মানুষের কল্যাণে এগিয়ে আসবে সেই ব্যক্তিই আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয়। সুতরাং সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারলে আমরা আল্লাহপাকের প্রিয় বান্দা হতে পারবো। পেশ ইমাম চিকিৎসকদের উদ্দেশ্যে বলেন, শুধু করোনার অজুহাত দেখিয়ে রোগীদেরকে বিপদের মুখে ঠেলে দেয়া উচিৎ হবে না। নিজেদের সুরক্ষা বজায় রেখে অসুস্থ অসহায় রোগীদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, করোনা বিপদের সময়েও আমাদের নীতি নৈতিকতার পরিবর্তন ঘটেনি। আল্লাহপাকের নৈকট্য হাসিলে এখনো সচেষ্ট হইনি আমরা। নির্যাতন, জুলুম, ধর্ষণ, খুন খারাবি, দুর্নীতি প্রতারণা এখনো আমরা ছাড়তে পারছি না। করোনা থেকে মুক্তি পেতে সমস্ত অন্যায় অপরাধ ছেড়ে আল্লাহর দিকে ধাবিত হতে হবে। গুনাহমুক্ত জীবন অর্জন করতে হবে। আল্লাহপাক আমাদের তৌফিক দান করুন। আমীন।
নগরীর চকবাজার ইসলামবাগ বড় মসজিদের খতীব শাইখুল হাদীস মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি খুৎবার বয়ানে বলেন, ভয়াবহ করোনা মহামারী পরিস্থিতিতে যদি আমাদের মধ্যে মনুষ্যত্ববোধ জাগ্রত না হয় এবং আল্লাহ ও পরকালমুখী না হই তা’হলে এর চেয়ে বড় দুর্ভাগ্য আর কিছুই হতে পারে না। তিনি বলেন, এমন এক মহাবিপদের সময়ে যারা চিকিৎসা ও ত্রাণের নামে মানুষের সাথে প্রতারণা করছে তারা প্রকৃত পক্ষে মানুষ নয় বরং অমানুষ। এ প্রসঙ্গে পেশ ইমাম বলেন, হাদীসে পরিষ্কার উল্লেখ করা হয়েছে, যে ব্যক্তি প্রতারণার আশ্রয় নেয় সে নবী (সা.) এর উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়।
ঢাকার ডেমরার ঐতিহ্যবাহী দারুননাজাত সিদ্দিকীয়া কামিল মাদরাসা জামে মসজিদের সহকারি পেশ ইমাম অধ্যাপক মাওলানা মো. ফরিদ উদ্দিন (ফরিদগঞ্জী হুজুর) খুৎবার বয়ানে বলেন, করোনা মহামারীর কারণে পবিত্র হজের প্রস্তুতি নিয়েও বিশ্বের মুসলমানরা এবার হজে অংশ নিতে পারছেন না। তবে যাদের হজের পুরোপুরি প্রস্তুতি ও নিয়ত ছিল আল্লাহপাক তাদেরকে হজের পুরো সওয়াব দান করবেন। হাদীস অনুযায়ী যে হজ করে ফিরেন নবজাতকের ন্যায় গুনাহমুক্ত হয়েই ফিরেন। পেশ ইমাম বলেন, নবী (সা.) বলেছেন, তোমরা পর পর হজ ও ওমরাহ পালন করো। কেননা হজ ও ওমরাহ দারিদ্রতা এবং গুনাহ দূর করে দেয়। হজ্জে মাবরুর যথা মাকবুল হজের প্রতিদান কেবল জান্নাত।
কারওয়ান বাজার আম্বরশাহ জামে মসজিদের খতিব ও বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমীরে শরীয়ত মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী জুমার বয়ানে হিফজুল কুরআন মাদরাসা খুলে দেয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমরা আশা করছি এভাবে অচিরেই কুরআন-হাদীসের শিক্ষাকেন্দ্রের সকল কওমী মাদরাসা খুলে দেয়ার ঘোষণা করবেন। এ দেশের সকল ওলামায়ে কেরামের দাবি ছিল কওমী মাদরাসার সকল বিভাগ খুলে দেয়া। সরকার সে দাবিটি আংশিক মেনে নিয়েছে। ঈদুল আজহার দিন কওমী মাদরাসার ছাত্ররা তাদের ঈদের আনন্দ ত্যাগ করে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কুরবানির পশু জবাই করে আসছে। মাদরাসা বন্ধ থাকলে কুরবানিদাতারা চরম দুর্ভোগে পরবেন। অন্য দিকে মাদরাসাগুলোও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তিনি দেশের জনগণের স্বার্থে আগামী এক সাপ্তাহের মধ্যে কিতাব বিভাগও খুলে দেয়ার আহবান জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।