বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
কয়েকদিনের বৃষ্টিতে জমিতে পর্যাপ্ত পানি জমে আছে। বীজতলায় চারাও প্রস্তুত। এই সুযোগে জমিতে চাষ দিয়ে সার ছিটিয়ে আমন চারা রোপনের কাজ শুরু করে দিয়েছেন পঞ্চগড়ের কৃষকরা। প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল এই আমন ধানের কচি চারা জমিতে লাগানোর ধুম পড়েছে গোটা জেলায়। শেষের দিকে বৃষ্টি না হওযার আশঙ্কায় সব কৃষক একসাথে জমিতে চারা রোপন শুরু করায় দেখা দিয়েছে শ্রমিক সঙ্কট। সেই সাথে রয়েছে হালের সঙ্কট। তারপরও আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় এবার আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে কৃষি বিভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করেছে।
পঞ্চগড় জেলায় সাধারণত মধ্য আষাঢ় থেকে শুরু করে মধ্য শ্রাবণ পর্যন্ত আমন ধানের চারা জমিতে রোপন করা হয়। এ বছর আষাঢ়ের শুরু থেকেই বৃষ্টি শুরু হওযায় কৃষকরা মধ্য আষাঢ় থেকেই শুরু করে দিয়েছেন জমিতে আমন চারা রোপনের কাজ। প্রথম অবস্থায় কৃষকরা আগাম জাতের আমন চারা রোপন শুরু করেছেন। পরবর্তিতে অন্যান্য ধানের চারা রোপন করা হবে। মৌসুমের শেষে এসে ধানের চারা তুলে জমিতে পুনরায় রোপন করা হবে। এদিকে, সব কৃষক একসাথে চারা লাগানোর কাজ শুরু করে দেয়ায় দেখা দিয়েছে শ্রমিক সঙ্কট। ৫শ’ টাকায় পুরুষ ও ৩শ’ টাকায় নারী শ্রমিকদের মজুরি দিয়েও তাদের পাওয়া যাচ্ছে না। অধিকাংশ শ্রমিক প্রতি বিঘা ১ হাজার ৫শ’ টাকা চুক্তিতে আমন চারা লাগাচ্ছেন। জেলা সদরের বলেয়া পাড়া গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম চৌধুরী জানান, ৫ বিঘা জমিতে চারা লাগানোর জন্য জমি ও চারা প্রস্তুত। কিন্তু শ্রমিকের অভাবে এখনো চারা লাগানো শুরু করতে পারিনি। কৃষকের হালের বলদ কমে যাওয়ায় অধিকাংশ কৃষক কলের লাঙ্গলের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে দুই বার চাষ দিতে নিচ্ছে এক হাজার টাকা করে। তারপরও সিরিয়াল দিতে হয় কয়েক দিন আগে। কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, চলতি বর্ষা মৌসূমে পঞ্চগড় জেলায় আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯৯ হাজার ৬৯৫ হেক্টর। এ থেকে ৩ লাখ ২৬ হাজার ৬৪৬ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমিতে আমন চারা লাগানো হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ পরিচালক আব্দুল মতিন জানান, এবার আবহাওয়া অনুক‚লে থাকায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি জমিতে আমন চাষ হবে। এতে করে ফলনের লক্ষ্যমাত্রাও অতিক্রম করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এদিকে, রাজশাহী অঞ্চলে আউশের আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। ইরি বোরোর বাম্পার ফলন ও দাম বেশি পাওয়াতে কৃষকরা এবার আউশ চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার রাজশাহীতে আউশের আবাদ লক্ষ্যমাত্র ছাড়িয়েছে। গত বছর আউশের আবাদ হয়েছিলো ৪৯ হাজার ৭৪৮ হেক্টর এবার তা বেড়ে ৫০ হাজার ৯৭০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। যার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিলো ৫০ হাজার ৯৬০ হেক্টর। এবার জেলায় ১২শ’ ২২ হেক্টর আবাদ বেশি হয়েছে।
উপজেলার মহিশালবাড়ী এলাকার কৃষক আব্দুল মাতিন জানান, গতবারের চেয়ে এবার বেশি ধান রোপন করা হয়েছে। ধানের দাম ভালো পাওয়া ও ফলন বেশি হওয়াতে আউশের আবাদ বৃদ্ধি করেছি। টানা কিছুদিন বৃষ্টির করণে ধানের রোগ বালাই বেশি হলেও কৃষি অফিসের সহযোগিতায় তা কাটিয়ে উঠেছেন বলে জানান। পৌর এলাকার হেলিপ্যাড লালবাগের কৃষক মজিবুর রহমান জানান, গতবার ২ বিঘা ধান আবাদ করেছিলাম এবার ধানের দাম বেশি হওয়াতে তিন বিঘা ধান আবাদ করেছি। ভাজনপুর এলাকার কৃষক দুলুদেব জানান, গতবার ধান চাষ করিনি। এবার ধানের দাম পাওয়াতে আনন্দে ধান লাগিয়েছি। সরকার খাদ্যগুদামে ধান কিনলেও কৃষকরা দিতে পারে না তাই ধানের দামটা ঠিক রাখলে ও সারের দাম কমালে কৃষকরা উপকৃত হবে বলে জানান তিনি।
গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, এবার আউশের আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। ধানের দাম পাওয়াতে এবার আবাদ বেড়েছে। আবহাওয়াও ভালো আছে। কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে কাজ করছেন। আশা করা যায় কৃষক আনন্দের সহিত আউশ চাষাবাদ করছেন এবং করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের পাশাপশি তারা ভ‚মিকা রাখবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।