Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হোয়াইট হাউসে কাউকেই বিশ্বাস করেন না ট্রাম্প

সাবেক নিরাপত্তা উপদেষ্টার বিস্ফোরক অভিযোগ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১০ জুলাই, ২০২০, ১২:০২ এএম

বছর শেষে অ্যামেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। ভোটের দামামা বেজে গিয়েছে। বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার রিপোর্ট বলছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা কমছে। একই কথা বলছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তারই মধ্যে ডয়েচে ভেলেকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্পের সাবেক নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন বেশ কিছু বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। বললেন, ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে কাউকেই বিশ্বাস করেন না। বছরের গোড়াতেও দেশের সাধারণ মানুষের কাছে যথেষ্ট জনপ্রিয় ছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু একের পর এক অভিঘাত ক্রমশ তাকে দেশের মানুষের কাছে অপ্রিয় করে তুলেছে। এক দিকে করোনা পরিস্থিতি, তার জেরে লকডাউন এবং কাজ চলে যাওয়া, অন্যদিকে জর্জ ফ্লয়েড হত্যা- সব মিলিয়ে রীতিমতো উদ্বেগে ট্রাম্প প্রশাসন। সাধারণ মানুষের বক্তব্য, কোনো কিছুই সামলে উঠতে পারছেন না প্রেসিডেন্ট। বিরোধীপক্ষও লাগাতার প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন স¤প্রতি টুইট করে বলেছেন, ‘ট্রাম্পের উচিত নিজের কাজ মন দিয়ে করা।’ এই পরিস্থিতিতেই ফের মুখ খুললেন সাবেক নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন। ১৮ মাস হোয়াই হাউসে প্রেসিডেন্টের সাথে ছিলেন বোল্টন। স¤প্রতি একটি বইও লিখেছেন তিনি। যেখানে ট্রাম্পের একাধিক সমালোচনা করেছেন। প্রেসিডেন্টের ইমপিচমেন্ট শুনানি পর্বেও বার বার বোল্টনের নাম সামনে এসেছে। সেনেটে গিয়ে সাক্ষ্য দিতেও রাজি হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার সাক্ষ্য নেয়া হয়নি। ডয়েচে ভেলেকে বোল্টন জানিয়েছেন, ট্রাম্পের পড়ার বিশেষ অভ্যাস নেই। গুরুত্বপূর্ণ নথিও গোটাটা পড়ে দেখেন না তিনি। হোয়াইট হাউস অবশ্য দাবি করে, ট্রাম্পের কাছে সমস্ত তথ্য থাকে। কিন্তু বোল্টন তা মানতে চাননি। তার বক্তব্য, নিরাপত্তা বিষয়ক নথিও পুরোটা পড়ে দেখেন না ট্রাম্প। তিনি চলেন নিজের মেজাজে। তার যা ভালো মনে হয়, সেটাই করেন। এ প্রসঙ্গেই উত্তর কোরিয়ার প্রধান কিম জং উনের সাথে বৈঠকের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন বোল্টন। জানান, ওই বৈঠকেও ট্রাম্প নিজেকে খুব তৈরি করে যাননি। তাকে যা যা নথি দেয়া হয়েছিল, তার প্রায় কিছুই তিনি মন দিয়ে পড়েননি। এবং সে কারণেই কার্যত বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যেতে হয়েছিল তাকে। শেষ মুহূর্তে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, উত্তর কোরিয়ার ডিল মনে নিলে দেশে প্রবল বিরোধিতার মুখে পড়তে হবে তাকে। হোয়াইট হাউসে তার অভিজ্ঞতার কথাও জানিয়েছেন বোল্টন। তার বক্তব্য, কর্মীদের অধিকাংশকেই বিশ্বাস করেন না ট্রাম্প। শুধু তাই নয়, হোয়াইট হাউসের মধ্যে একটা অবিশ্বাসের বাতাবরণ তৈরি করে রাখেন তিনি। যাতে কেউ কাউকে বিশ্বাস না করেন। এটাই প্রেসিডেন্টের কাজের পদ্ধতি। এবং সে কারণেই কেউ ট্রাম্পের সমালোচনা করতে পারেন না। সমালোচনা করার অর্থ কাজ থেকে বিদায় নেয়া। চাকরি চলে যাওয়ার ভয়ে কেউ আর ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন না। ভুলও ধরিয়ে দেন না। বোল্টনের বক্তব্য, চীনের রাষ্ট্রপ্রধান শি জিনপিং কিংবা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ঈর্ষা করেন ট্রাম্প। তাদের একচ্ছত্র ক্ষমতাই এর কারণ বলে মনে করেন তিনি। এই প্রসঙ্গেই সৌদি আরবের সাথে ট্রাম্পের সম্পর্কের প্রসঙ্গে নিজের মতামত জানিয়েছেন বোল্টন। তার বক্তব্য, সৌদির সাথে ট্রাম্প সুসম্পর্ক না রাখলে পুতিন সেখানে অস্ত্র বিক্রি করতেন। পুতিনের কাছ থেকে এমনটাই জেনেছেন তিনি। সে কারণেই সৌদি আরবের সাথে আমেরিকার সুসম্পর্ক রাখা জরুরি ছিল। ইমপিচমেন্ট নিয়েও নিজের মতামত জানিয়েছেন বোল্টন। তার বক্তব্য, যে কায়দায় ট্রাম্প নিজেকে ইমপিচমেন্টের হাত থেকে বাঁচিয়েছেন, দেশের মানুষ তা খুব ভালো চোখে দেখেননি। তার বক্তব্য, সিনেটে ইমপিচমেন্টের গোটা প্রক্রিয়াটাই পক্ষপাতপূর্ণ ছিল। সকলের চোখেই তা ধরা পড়েছে। ডয়েচে ভেলে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ট্রাম্প


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ