Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

পরিচ্ছন্ন ও সবুজ নগরী হচ্ছে চট্টগ্রাম

প্রকাশের সময় : ৩১ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আইয়ুব আলী : ক্লিন ও গ্রিন সিটি তথা পরিচ্ছন্ন ও সবুজ নগরীতে রূপান্তর হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম মহানগরী। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। দায়িত্ব গ্রহণের এক বছর পূর্তিতে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন চট্টগ্রামকে দৃষ্টিনন্দন ও বিশ্বমানের নগরী হিসেবে গড়ে তোলার পাশাপাশি বিশ্বদরবারে চট্টগ্রামকে ক্লিন ও গ্রিন সিটির মডেল হিসেবে গড়ে তুলতে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এর প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর দীর্ঘ দিনের জঞ্জাল চট্টগ্রাম মহানগরীর বিলবোর্ড মুক্ত করার উদ্যোগ নেন এবং এক্ষেত্রে সফলও হন। মেয়র আ জ ম নাছিরের দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম বছরটি অতিক্রান্ত হওয়ার পর চাটগাঁ নগরবাসী মেয়র তথা সিটি কর্পোরেশনের সফলতা ব্যর্থতা নিয়ে এখানে সেখানে চুলচেরা আলোচনায় মেতে উঠেছেন।
নগরীকে দুর্গন্ধমুক্ত করতে দিনের পরিবর্তে রাতে বর্জ্য অপসারণ করা হচ্ছে। এর আগে দিনের বেলায় ডাস্টবিন এবং আবর্জনাবাহী গাড়ি থেকে উপচেপড়া ময়লার দুর্গন্ধে ছাত্র-ছাত্রী, পেশাজীবী, কর্মজীবী এবং সাধারণ পথচারীদের পথচলা দুঃসাধ্য হয়ে পড়ত। মানুষের দুর্ভোগ দূর করতে মেয়র দিনের পরিবর্তে রাতের বেলা রাস্তাঘাট ও ডাস্টবিনের ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহ ও অপসারণের উদ্যোগ নেন। সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত নিকটস্থ ডাস্টবিনে ময়লা ফেলার জন্য চসিকের পক্ষ থেকে নগরবাসীকে তাগাদা দেয়া হয়। গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর থেকে এ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন, নগরজুড়ে লিফলেট বিতরণ, নিয়মিত মাইকিংয়ের মাধ্যমে নগরবাসীকে সচেতন করার উদ্যোগ নেয়া হয়। এ কর্মসূচি চালুর পর নগরী আবর্জনামুক্ত হয়ে উঠে।
গত ২৫ জুলাই আ জ ম নাছির উদ্দীন মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে আয়োজিত সুধী সমাবেশে বলেন, আগামী তিন বছর পর চট্টগ্রাম হবে একটি বিশ্বমানের নগরী। সেই লক্ষ্যে নিরলস কাজ করছি। আমি নগরবাসীকে বিশ্বমানের নগরী উপহার দেবো। কিন্তু বিশ্বমানের নগরীর পূর্বশর্ত বিশ্বমানের নাগরিক। সেটি তাদের নিশ্চিত করতে হবে।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মূল দায়িত্ব তিনটি। রাস্তাঘাট নির্মাণ ও মেরামত, পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম পরিচালনা, শহর আলোকায়ন করা। সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব আয়ে পরিচ্ছন্ন কার্যক্রমসহ অন্যান্য অপরিহার্য সেবা শতভাগ নিশ্চিত করা সম্ভব হয়ে উঠছে না। তাছাড়া ডাস্টবিন নির্মাণের জায়গা স্বল্পতা, অপর্যাপ্ত ডাম্প ট্রাক, পরিচ্ছন্ন কর্মী স্বল্পতাসহ নানাবিধ সমস্যার কারণে বর্তমানে চলমান পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম জনগণের প্রত্যাশা পূরণে শতভাগ সক্ষম হচ্ছে না। এ লক্ষ্যে ডোর টু ডোর পদ্ধতিতে আবর্জনা সংগ্রহপূর্বক সরাসরি ডাম্পিং ডাম্পে অপসারণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে চসিক। আগামী ১ আগস্ট থেকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ৫ ধাপে ৪১ ওয়ার্ডে ডোর টু ডোর বর্জ্য সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে অতিরিক্ত ২ হাজার সেবক, ১০ লাখ বিন ও ২ হাজার রিকশাভ্যান সংগ্রহ করা হচ্ছে। এ খাতে বেতন বাবদ প্রায় ২৪ কোটি টাকা এবং ভ্যান ও বিন বাবদ ৬০ থেকে ৬৫ কোটি টাকার প্রয়োজন হবে। ইতোমধ্যে সিটি মেয়র ক্লিন ও গ্রিন সিটির ভিশন বাস্তবায়নে সরকারি- বেসরকারি বিভিন্ন আর্থিক ও সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সাথে মতবিনিময় করে এ সকল প্রতিষ্ঠানের সিএসআর খাত থেকে সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।
এদিকে নগরীকে ক্লিন সিটিতে রূপান্তরে দীর্ঘদিনের জঞ্জাল ৪ হাজার ৯৫৮টি বিলবোর্ড ওভারহেড, ইউনিপোল, মিনিপোল, মেগা সাইন, বেল সাইন, রাউন্ড এবাউট, সাইনবোর্ড অপসারণ করা হয়।
এ লক্ষ্যে গৃহীত পরিকল্পনাসমূহ বাস্তবায়ন করা গেলে আগামী ২ বছরের মধ্যে চট্টগ্রাম মহানগরীকে পূর্ণাঙ্গ গ্রিন সিটিতে রূপান্তর করা সম্ভব বলে চসিক সূত্রে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়। এসব প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সকল রাস্তার ডিভাইডার ও ফুটপাতকে যথাযথ বিউটিফিকেশনের আওতায় আনা, সবুজায়নসহ সবুজ প্রকৃতিকে রক্ষা করা। ইতোমধ্যে নগরীর জামাল খান ওয়ার্ডের সড়কের ডিভাইডারকে বিউটিফিকেশনের আওতায় আনা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পরিচ্ছন্ন ও সবুজ নগরী হচ্ছে চট্টগ্রাম
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ