Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দেশের জন্য বলিউডের সুযোগ ছেড়েছিলেন এন্ড্রু কিশোর

বিনোদন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৮ জুলাই, ২০২০, ১১:৫১ এএম

সময় ফুরিয়ে গেলে পৃথিবী আর কাউকে আলিঙ্গন করে রাখে না। নিষ্ঠুরভাবে বলে দেয়, বিদায়! হয়তো গানের সুরে সেকথা আরও সহজ করে দিয়েছিলেন কিংবদন্তি এন্ড্রু কিশোর। শিল্পীর কণ্ঠে যে আর কখনও শোনা যাবে না নতুন গান, এই সত্যটা কিছুতেই মানতে পারছেন না তার ভক্ত-অনুরাগীরা।

এন্ড্রু কিশোরের দরাজ কন্ঠের সুর প্রায় চার প্রজন্মকে মাতিয়ে তুলেছেন। ক্যারিয়ারে ১৫ হাজারের বেশি গানে কন্ঠ দিয়েছেন তিনি। বাংলা গানে অসামান্য অবদানের জন্য পেয়েছেন 'প্লেব্যাক সম্রাট' উপাধি। অর্জনের ঝুলিতে জমা পড়েছে রেকর্ড পরিমান ৮ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।

তবে জানেন কি, নিজের জীবনের গল্পটা অন্যভাবে সাজাতে পারতেন এন্ড্রু কিশোর? যেমনটা সাজিয়েছেন সত্যজিৎ রায়, ঋতিক ঘটক, সুচিত্রা সেনের মতো কিংবদন্তিরা। ঠিক তেমনই ঢাকায় সিনেমার 'প্লেব্যাক সম্রাট' না হয়ে বলিউডের জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী হতে পারতেন তিনিও। কিন্তু সেটা করেননি বাংলা গানের রাজপুত্র।

এন্ড্রু কিশোরের দরাজ কণ্ঠে মুগ্ধ হয়ে বলিউডের কিংবদন্তি সঙ্গীত পরিচালক আরডি বর্মন নিজেই তাকে হিন্দি গান গাইতে এবং মুম্বাইয়ে স্থায়ী হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু দেশের টানে বিনয়ের সঙ্গে সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন এই সঙ্গীতশিল্পী।

জীবিত থাকাকালীন সময়ে এক সাক্ষাৎকারে সেই ঘটনার কথা নিজেই জানিয়েছিলেন এন্ড্রু কিশোর। তিনি বলেছিলেন, একমাত্র বাংলাদেশী হিসেবে আরডি বর্মনের সুরে গান গেয়েছি। ১৯৮৫ সালে দুই বাংলার প্রযোজনায় 'শত্রু' সিনেমায় ৩ টি গান গেয়েছিলাম। দুইটি হিন্দিতে ও একটি বাংলায়। স্বনামধন্য গীতিকার মাজরু সুলতানপুরির দুটি হিন্দি গানের পাশাপাশি বাংলা 'মুখে বলো তুমি হ্যাঁ', 'এর টুপি এর মাথায়', এবং 'আজো বয়ে চলে পদ্মা মেঘনা' গানগুলো গেয়েছিলাম।

ওই সাক্ষাৎকারে তিনি আরও জানিয়েছিলেন, এসব গান করতে গিয়ে মুম্বাইয়ে আমার যাওয়া আসা শুরু হলো। তখনই আরডি বর্মনের সঙ্গে আমার ভালো একটি সম্পর্ক তৈরী হয়। কখনোই তিনি আমার নাম ধরে ডাকতেন না, আদর করে 'ঢাকাইয়া' বলতেন। সেসময় তিনি বলতেন, 'ঢাকাইয়া' তোকে ডেকে এনে এখানে গান গাওয়ানো সম্ভব না। তবে একটা কাজ করতে পারিস, এখানে তুই স্থায়ী হয়ে যা। ভালো একজন মেয়েকে বিয়ে করে মুম্বাইয়ে স্যাটেল হয়ে যা। বলিপাড়ায় ক্যারিয়ার গড়। বাকিটা আমিতো আছিই, চিন্তা করিস না।

এন্ড্রু কিশোর এই প্রস্তাব পেয়ে কোনো বিলম্ব না করেই আরডি বর্মনকে বলেছিলেন, 'দাদা, এটা আমার জায়গা না। আমার দেশের মাটিতে আমি বেশ ভালো আছি। সত্যি বলতে এই জগৎটা আমার জন্য না।' শিল্পীর এমন সাহসী মন্তব্য শুনে তাকে বুকে জড়ে নিয়েছিলেন বর্মন। তখন তিনি বলেছিলেন, তুই বাঘের বাচ্চা। আজ পর্যন্ত এমন কাউকে খুঁজে পেলাম যে, আমার দেওয়া প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে। কিন্তু তুই একমাত্র শিল্পী যে আমার মুখের উপরে না করে দিলো।'



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ