পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাষ্ট্রায়ত্ত ২৬টি পাটকলের প্রায় ২৫ হাজার শ্রমিককে গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে পাওনা বুঝিয়ে দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কিন্তু শ্রমিক, শ্রমিক সংগঠন এবং বামধারার দলগুলো পাটকল বন্ধের বিরুদ্ধে সোচ্চার। অন্যদিকে সরকার থেকে বলা হচ্ছে আপাতত বন্ধ রেখে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলো পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় আধুনিকায়নের মাধ্যমে ছয় মাসের মধ্যে চালু করা হবে। সরকারের এই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন এ খাতের ব্যবসায়ী ও রফতানিকারকরা।
অন্যদিকে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) ও বামদলগুলো বলছে পিপিপির নামে পাটকলগুলো সরকার নিজ দলের ব্যবসায়ীদের দেয়ার পরিকল্পনা করছে। আবার কৃষকদের মধ্যে ভীতি আতঙ্ক শুরু হয়ে গেছে। কারণ পাটকল বন্ধ থাকলে কৃষকরা উৎপাদিত পাট পণ্য বিক্রি করতে পারবেন না। বিক্রি করলেও কম দামে বিক্রি করতে হবে। পাট বিক্রির জন্য চাষিরা যাবে কোথায়? মূলত পাটকল বন্ধ ও পিপিপির আওতায় আনার পরিকল্পনা দিয়ে সব মহলের অসন্তোষ ও সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে।
চীন বাংলাদেশের পাটকলগুলোর পুরনো যন্ত্রপাতি ফেলে দিয়ে নতুন করে লাভজনক করার প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু আমলারা ‘অবৈধ কেনাকাটায় দুর্নীতির সম্ভাবনা’ না থাকায় রাজি হয়নি। সিপিবি, বাসদ, ঐক্যফ্রন্ট, ওয়ার্কাস পার্টিসহ শ্রমিক নেতারা বলছেন, আদমজীর মতোই ২৫ পাটকল গিলে খাওয়ার জন্যই এই পরিকল্পনা করা হচ্ছে। আর বিশিষ্টজনরা বলছেন, সেকেলে যন্ত্রপাতি আর ‘দুর্নীতি-অপচয়ের’ দায়ে ডুবে যাওয়া সরকারি পাটকলগুলো পিপিপির ভিত্তিতে চালু করতে বেসরকারি খাত সহসা এগিয়ে আসবে না। আবার কেউ বলেছেন, পিপিপি যদি সফলও হয়, সেজন্য দীর্ঘ সময় লাগবে। এতে পাটপণ্যের বাজার চলে যাবে ভারতের হাতে। এর বদলে মিল বন্ধ না রেখেও আধুনিকায়নের মাধ্যমে উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব ছিল।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাটখাতের রফতানি আয় বাড়ছে। এ অবস্থায় সরকারের পাটকল পিপিপির অধীনে দেয়ার সিদ্ধান্ত অবাক করেছে এ খাতের অনেককে। করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে এসব পাটকলের ২৪ হাজার ৮৮৬ জন স্থায়ী কর্মচারীকে গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে অবসরে পাঠানো নিয়েও সমালোচনা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্তের পেছনে সরকারের যুক্তি, ‘বিজেএমসির ব্যর্থতায়’ পাটকলগুলোর লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা। সেজন্য শ্রমিকদের ভুগতে হচ্ছে, সরকারকেও প্রতি বছর বিপুল অংকের টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে।
জানতে চাইলে শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদের (স্কপ) শহীদুল্লাহ চৌধুরী বলেন, এক হাজার ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিক করা হলে শ্রমিক ছাঁটাই করতে হতো না, উৎপাদনও বাড়ত তিন গুণ। জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশের সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা বলেন, রাষ্ট্রীয় পাটকল লুটপাটকারীদের হাতে ছেড়ে দেয়া যায় না। যাদের ভুল নীতি ও দুর্নীতির কারণে পাটকলগুলো লোকসান করেছে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
বাংলাদেশ জুট গুডস এক্সপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান বলেন, টেকনিক্যালি হয়তো সরকার বলছে ছয় মাসের মধ্যে পাটকল চালু করবে। ছয় মাসের মধ্যে এটা কে নেবে? যে ভাঙাচোরা মিল, মিলের যে অবস্থা, ৫০-৬০ বছর আগের মেশিনারিজ, প্রাইভেট সেক্টরের কেউ এই মুহূর্তে এগিয়ে আসবে না।
বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিজেএমএ) মহাসচিব আব্দুল বারিক খান বলেন, পিপিপির রাস্তায় না গিয়ে এসব পাটকল চালু রেখেই আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজন করা ভালো হত। মিলগুলো চালু আছে। মেশিনারিজ চেইঞ্জ করে আধুনিকায়ন করতে ৬ মাস লাগতো। পাটকলগুলো চালু থাকলে তারা তো কিছু পাট কিনত। মৌসুমে মিল বন্ধ থাকলে পাট কেনা হবে না। পাটকল টিকিয়ে রাখতে ভারত সরকার বেসরকারি খাতকে ২০ পারসেন্ট অনুদান দিয়ে বলছে, তোমরা পুরনো মেশিন বিক্রি করে দাও, নতুন মেশিন নিয়ে আস। কিন্তু আমাদের দেশে বেসরকারি খাতে তো সরকারি বিনিয়োগ নেই। সরকারি পাটকল চালু রাখতে নতুন বিনিয়োগ নেই।
কৃষিবিদরা বলছেন, পাটকল সমায়িক বন্ধে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবে দেশের কৃষক। এক সময়ের সোনালী আঁশ পাট আবার আলোর মুখ দেখতে শুরু করেছে। এ সময় পাটকল বন্ধ করে চাষিদের পাট উৎপাদনে নিরুৎসাহিত করা হবে। তাছাড়া ভারতে নতুন নতুন পাটকল চালু হয়েছে। কৃষকরা বাধ্য হয়েই পাটপণ্যে দাম পেতে বাঁকা পথে ভারতে পাঠাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।