পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থনৈতিক উন্নয়ন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির কারণে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে রোল মডেল; দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সেরা। এডিবি, বিশ্বব্যাংক, আইএমএফের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশকে উপমহাদেশের উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে দেখছে। তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার করে সর্বত্রই ডিজিটালাইজেশন, মানবিকতা, শিল্পায়ন, জীবনমানের উন্নয়ন, কৃষি আধুনিকায়নে সাফল্যের শিখরে উঠেছে দেশ। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে রেখে সামাজিক সমৃদ্ধি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করে পরিবেশ উন্নয়ন, তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার, বন্ধুত্বপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি সবক্ষেত্রে সাফল্য এসেছে গত কয়েক বছরে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যাদুকরী নেতৃত্ব এবং একের পর এক সাহসী পদক্ষেপ কার্যত দেশকে এই অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির পথে নিয়ে গেছে।
দক্ষিণ এশিয়া তথা সার্কভুক্ত ৮ দেশের (আফগানিস্তানসহ) মধ্যে বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশ ভারত যা পারেনি; বাংলাদেশ তা করে দেখিয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিকদের জন্য শেখ হাসিনা হয়ে গেছেন একজন অনুকরণীয় নেতৃত্ব। তিনি দেশ-বিদেশের নেতাদের কাছে হয়ে গেছেন আস্থা ও ভরসাস্থল। তার একাগ্রতা, দৃঢ়তা ও চিন্তাশীল নেতৃত্ব দেশের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। পার্বত্য শান্তিচুক্তি, সমুদ্র বিজয়, নিজস্ব স্যাটেলাইটের মাধ্যমে মহাকাশ বিজয়, নারীর ক্ষমতায়ন, অর্থনৈতিক উন্নতি, স্বাধীনতার মর্যাদা রক্ষা সমুজ্জ্বল হয়েছে।
এমনকি করোনা মোকাবিলায় শক্তিধর দেশগুলো নাকানিচুবানি খেলেও শক্ত হাতে শেখ হাসিনা অদৃশ্য ভাইরাস সামাল দিচ্ছেন। অন্য যে কোনো দেশের তুলনায় বাংলাদেশে এখনো আক্রান্ত ও মৃতের হার কম। করোনায় বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেই রেমিট্যান্স ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। শেখ হাসিনার সাহসী নেতৃত্বের জন্যই করোনাকালে দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৮.২ ধরে সংসদে চলতি অর্থবছরের বাজেট পাস করা হয়েছে। পররাষ্ট্র নীতিতে নিজ দেশের মর্যাদা সমুন্নত রেখে কী প্রতিবেশি, কী ক্ষমতাধর রাষ্ট্র সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব রেখেই বাংলাদেশ উন্নয়নে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। দেশে তো বটেই, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর নেতৃত্বে এখন শেখ হাসিনার অবস্থান সবার শীর্ষে।
শেখ হাসিনার ডায়নামিক লিডারশিপ দেশকে অন্যন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে। নারীর ক্ষমতায়নসহ অনেক বিষয়ে বিশ্বের বহু দেশের কাছে বাংলাদেশ এখন উদাহরণ। প্রাকৃতিক বিপর্যয়, ঝড়-বন্যা-খরা সামাল দেয়ার ক্ষেত্রেও তাই। দেশের উন্নয়ন, বেসরকারি খাততে সহায়তা, অভ্যন্তরীণ রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ এবং বিরোধপূর্ণ বিশ্ব রাজনৈতিক পরিমন্ডলে বিদেশনীতিতে ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব’ এমন ক্যারিশম্যাটিক নেতৃত্ব খুব কম নেতাই দেখাতে পেরেছেন। বিশ্বের অধিকাংশ দেশেরই প্রতিবেশীর সঙ্গে বিরোধ ওপেন সিক্রেট।
পাশের দেশ ভারত প্রায় সব প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়েছে; ব্যতিক্রম শুধু বাংলাদেশ। শেখ হাসিনার দৃরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বের কারণেই বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বন্ধুত্বটা এখনো রয়ে গেছে। সুপার পাওয়ার চীন ও ভারতের অবস্থান মুখোমুখি। দুই দেশই বাংলাদেশকে অন্য দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক রক্ষার বিপক্ষে। কিন্তু কৌশলি নেতৃত্ব দিয়ে দুই বিরোধপূর্ণ দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক রক্ষা করে চলছে বাংলাদেশ।
শুধু কি তাই, পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে তথাকথিত প্রগতিশীলদের অনেকেই উস্কে দিয়েছিল; কিন্তু শেখ হাসিনা সেই উস্কানিতে কান দেননি। পাকিস্তানের সঙ্গে সুসম্পর্ক রক্ষা করে চলছেন। গার্মেন্টস পণ্যে আমেরিকার জিএসপি সুবিধা বন্ধ। কিন্তু বাংলাদেশ দমে যায়নি; এগিয়ে গেছে। ইউরোপ ছাড়াও তৈরি পোশাকের নতুন নতুন বাজার খুঁজে নিয়েছে।
শেখ হাসিনা ক্রমান্বয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় একক নেতৃত্বের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর দিকে তাকালে আমরা কী দেখি? ভুটান ছোট দেশ, ছোট অর্থনীতি। সে দেশের প্রধানমন্ত্রী ডা. লোটে শেরিং বাংলাদেশের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ছাত্র ছিলেন। দেশটির অর্থনীতি তেমন উল্লেখ করার মতো নয়। মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন আবদুল গাইয়ুম রাজনৈতিক চাপের মুখে রয়েছেন। এক সময়ের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধ রাষ্ট্রটির অর্থনীতি এখন ভঙ্গুর। দেশটির ছোট অর্থনীতিতে চীন শতকরা ৭০ ভাগ সহায়তা করলেও রাজনৈতিক অস্থিরতা কাটছে না।
চীন ও ভারত দেশটির রাজনীতির নিয়ন্ত্রণের প্রতিযোগিতা করায় যে কোনো সময় সরকার পড়ে যেতে পারে। শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে ভাল নেই। যুগের পর যুগ ধরে ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণের সঙ্গে চলা গৃহযুদ্ধের অবসান হলেও অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক হানাহানি কমেনি। জাফনায় এখনো তামিলদের প্রাধান্য। ভঙ্গুর অর্থনীতির দেশটিতে সব সময় রাজনৈতিক অস্থিরতা। জাতিগত সংঙ্ঘাত দেশটির সামনে অগ্রসরের পথ আটকে দিয়েছে।
ভারতের খপ্পর থেকে নেপাল বের হয়ে এসে চীনের সহায়তায় অর্থনীতি সচল রেখেছে। কিন্তু ভারতের ষড়যন্ত্র এখনো বন্ধ হয়নি। নানাভাবে বিভিন্ন অঞ্চলের নাগরিকদের উস্কানি দিচ্ছে ভারত। অভ্যন্তরে রাজনৈতিক বিরোধ চলছে। রাজনৈতিক সঙ্ঘাত বেড়ে যাওয়ায় দেশটিতে এখন ক্ষমতার টলটলায়মান অবস্থা। আফগানিস্তানে কার্যত মেরুদন্ডহীন সরকার। আমেরিকার অনুকম্পায় সরকার দেশ চলালেও নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেয়ার কোনো ক্ষমতা নেই। আমেরিকাও সেখানে বিপর্যয়ের মুখে। তালেবানদের সঙ্গে সমঝোতা করে চলতে হচ্ছে। গোষ্ঠিগত সঙ্ঘাত তো পাহাড় পর্বতের দেশটিতে লেগেই রয়েছে। দেশটি অর্থনৈতিকভাবে এগোতে পারছে না।
মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে ইমরান খান সুসম্পর্ক রক্ষা করলেও পাকিস্তানের সার্বিক অবস্থা ভাল নয়। জাতিগত সঙ্ঘাত ছাড়াও দেশটিতে ইসলামী ধারার রাজনৈতিক দলগুলো বছরজুড়ে থাকে হানাহানিতে ব্যস্ত। জাতিগত বিরোধ তো রয়েছেই। পিপিপি ও মুসলিম লীগের মতো দল দেশের স্বার্থের বদলে নিজেরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ধর্ণা দিচ্ছে। নির্বাচনে ক্ষমতার পালাবদল ঘটলেও এখনো সেনাবাহিনী সর্বেসর্বা। চীনের সঙ্গে বন্ধুত্বকে কাজে লাগিয়ে অর্থনীতিকে এগিয়ে নিলেও সাবেক ক্রিকেটার প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান কার্যত কঠিন সময় অতিক্রম করছেন। ক্রিকেট খেলার মতো পাকিস্তান এখনো অনিশ্চয়তার দেশ।
আয়তন-লোকসংখ্যায় বড় হলেও একরোখা নেতৃত্বের কারণে ভারত কার্যত অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে। আরএসএসের ভাবশিশ্য নরেন্দ্র মোদি দেশকে রামরাজত্ব কায়েমের চেষ্টা করায় এখন সর্বত্রই হানাহানি। গান্ধীর দেশ ভারতে সামাজিক বন্ধন ভেঙে গেছে এবং সর্বত্রই সামাজিক বিশৃঙ্খলা। ড. অমর্ত্য সেনসহ সে দেশের অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মোদি ভারতের অর্থনীতি এমন ভঙ্গুর অবস্থায় নিয়েছেন যে, বিগত ৫০ বছরে দেশটির অর্থনীতি এতো খারাপ হয়নি। মোদির আগ্রাসী নীতিতে বন্ধুহীন হয়ে পড়ছে দেশটি। ছোটবড় প্রতিবেশী সব দেশের সঙ্গে সীমান্ত বিরোধ। ফলে ভুটান ও নেপালের মতো দেশ ভারতকে চোখ রাঙায়।
গোটা ভারতকে হিন্দুরাষ্ট্র বানানোর নীলনকশায় দেশটির অন্যসব রাজনৈতিক দল মেনে নিতে পারছে না। তাদের শঙ্কা, রাশিয়ার পুতিনের মতো মোদি দীর্ঘদিন ভারতের ক্ষমতায় থাকতে গেরুয়া পোশাকধারীদের প্রাধান্য দিচ্ছেন। দেশটির লেখক, বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজ সকলেই হিন্দুত্ববাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার। করোনায় নাস্তানাবুদ ভারত বড় অর্থনীতির দেশ হয়েও লাদাখে চীনের কাছে ধরাশায়ী (২৩ সেনা নিহত) হওয়ায় মোদি এখন চাপের মুখে। তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আনপ্যারালাল। অর্থনৈতিকভাবে সবল এবং শক্ত নেতৃত্বের হাতে দেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অপ্রতিদ্ব›দ্বী। দেশে নানা পথ-মতের মানুষের রাজনীতি থাকলেও শেখ হাসিনা কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছেন। সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখেই উন্নয়নের মহাসড়কে উঠেছে দেশ। শেখ হাসিনার দূরদর্শী সাহসী সিদ্ধান্ত ও যোগ্য নেতৃত্বের কারণে দক্ষিণ এশিয়ার সকলকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তার দৃঢ় সিদ্ধান্ত ও সাহসী পদক্ষেপে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে চ্যালেঞ্জ করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ এখন বাস্তব। মেট্রোরেল, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ অসংখ্য মেগাপ্রকল্পের কাজ চলছে। দেশে এখন সবকিছুই ডিজিটাল।
ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করে অনলাইনে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়-মাদরাসার ক্লাস নেয়া হচ্ছে। সর্বত্রই পণ্য কেনাবেচা হয় অনলাইনে। করোনায় সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করতে অনলাইনে কোরবানির পশু কেনাবেচার প্রস্তুতি চলছে। শেখ হাসিনার সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত ও সাহসী নেতৃত্বের কারণে এটা সম্ভব হয়েছে। বিদ্যুতের চাহিদার চেয়েও দেশে এখন বেশি উৎপাদন হয়। প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষের কুঁড়েঘরে বিদ্যুতের আলোর ঝলকানি। গ্রামাঞ্চলেও এখন ইন্টারনেট-ডিশ লাইন।
ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে ক্ষমতায় এসে শেখ হাসিনা অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে গভীর সমুদ্রের তলদেশে অপটিক্যাল ফাইবার, মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, মোবাইল ব্যাংকিং, উপজেলা শহরে ব্যাংকের এটিএম বুথ, সহজলভ্য ইন্টারনেট সেবা ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছেন। তার ‘ঘরে ফেরা’ কর্মসূচি ও নাগরিকদের ‘আইডি কার্ড’ দেয়ার কর্মসূচি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্র বাস্তবে রূপ দিয়েছেন।
তিনি ৩০ বছরের গঙ্গা পানি চুক্তি, পার্বত্য শান্তি চুক্তি, জাতিসংঘে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্বীকৃতি, মিয়ানমার ও ভারতের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে সমুদ্রসীমা বিজয়, ভারতের সঙ্গে স্থলসীমান্ত চুক্তি, ছিটমহল সঙ্কটের সমাধান করেছেন। তিনি মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে বিশ্বে মহানুভবতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। যার পুরস্কার হিসেবে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ সম্মান অর্জন করেছেন। শেখ হাসিনা শিল্পায়নের পাশাপাশি কৃষিতে সাফল্য দেখিয়েছেন। কৃষিতে আধুনিকায়ন এবং নতুন নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন করায় ধান উৎপাদনে ইন্দোনেশিয়াকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশ বিশ্বের তৃতীয় অবস্থানে উঠতে যাচ্ছে।
ইসলামবিদ্বেষী পশ্চিমারা সব সময় মুসলমানদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত। ফলে ৯২ ভাগ মুসলমানের এই বাংলাদেশে ‘জঙ্গিবাদ’ তকমা চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছে। পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলোতে এ নিয়ে অপপ্রচার হয়েছে বছরের পর বছর ধরে। নানা ধরনের উস্কানি ছিল। জঙ্গিরা হলি আর্টিজান হত্যাকান্ডসহ বেশ কয়েকটি পৈচাশিক ঘটনাও ঘটিয়েছে। কিন্তু শেখ হাসিনার শক্ত নেতৃত্বে পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনীসহ সকল বাহিনীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় জঙ্গিদের মেরুদন্ড ভেঙে দেয়া হয়েছে।
শুধু কি তাই, বৈশ্বিক মহামারি করোনার মোকাবিলায় শেখ হাসিনা আমলা, রাজনীতিক যাকে যেভাবে পারছেন ব্যবহার করছেন, কাজে লাগাচ্ছেন। করোনাকালে ৭ কোটি মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছেন। ২ কোটি পরিবারকে অর্থ সহায়তা দিয়েছেন ডিজিটাল ব্যাংকিং চ্যানেলে। করোনায় ভারতের বেহাল অবস্থা। অথচ করোনা দুর্যোগে সবকিছু বন্ধের মধ্যেই প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। গত জুন মাসে ১৮৩ কোটি ডলারের সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। কারণ শেখ হাসিনা রেমিটেন্সে প্রণোদনা দিয়েছেন।
রেমিট্যান্সের মতোই নতুন মাইলফলক অতিক্রম করেছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রিজার্ভের পরিমাণ এখন ৩৬ বিলিয়ন (৩ হাজার ৬০০ কোটি ডলার)। শেখ হাসিনার মতো নেতৃত্বের পক্ষেই এমন সাফল্য সম্ভব। করোনার মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবিলা করেছেন শক্তভাবেই। অথচ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এখনো আম্পানের ছোবলে কোমর সোজা করতে পারেনি। শেখ হাসিনা হয়ে গেছেন মানুষের ভরসাস্থল। অনেকের কাছে অপ্রিয় হলেও সত্য, শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্বে ১৮ কোটি মানুষের দেশ এখন শান্তিপূর্ণ মুসলিম রাষ্ট্র।
এই সাফল্যের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা শেখ হাসিনাকে নানাভাবে সম্মানিত করেছে। তিনি জাতিসংঘের ‘এজেন্ট অব চেঞ্জ পুরস্কার’, ‘প্ল্যানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’ পুরস্কার, আবহাওয়া পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়ন অব দি আর্থ’ এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন ও তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নে বিশেষ অবদানের জন্য ‘আইসিটি টেকসই উন্নয়ন পুরস্কার’ পেয়েছেন।
এছাড়াও রাজনীতিতে নারী-পুরুষের বৈষম্য কমানোর ক্ষেত্রে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় নেতৃস্থানীয় ভ‚মিকা পালনে ‘পান ওম্যান ইন পার্লামেন্ট (ডব্লিউআইপি) গ্লোবাল অ্যাওয়ার্ড’, নারী ও শিশু শিক্ষা উন্নয়নে বিশেষ অবদানের জন্য ‘শান্তি বৃক্ষ পদক’, ‘সাউথ সাউথ অ্যাওয়ার্ড’, জাতিসংঘের ‘মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল অ্যাওয়ার্ড’, ‘ডিপ্লোমা অ্যাওয়ার্ড’, ‘কালচারাল ডাইভারসিটি অ্যাওয়ার্ড’, ‘গ্লোবাল ডাইভারসিটি অ্যাওয়ার্ড’, ‘ইন্দিরা গান্ধী শান্তি পদক’, ‘ডক্টরস অব হিউম্যান লেটার্স’, ‘মাদার তেরেসা পদক’, ‘নেতাজি মেমোরিয়াল পদকসহ অর্ধশতাধিক পদক পেয়েছেন।
তিনি বিদেশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও ডিগ্রি ও সম্মাননা পেয়েছেন। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি যা পেয়েছেন, বাংলাদেশ তো নয়ই; দক্ষিণ এশিয়ার আর কোনো নেতার পক্ষে অর্জন সম্ভব হয়নি। পুরস্কারের পাশাপাশি তিনি নেতৃত্ব ও ব্যক্তিত্বের কারণে বিভিন্ন স্বীকৃতিও অর্জন করেন। বিশ্বখ্যাত ফোর্বস সাময়িকীর দৃষ্টিতে বিশ্বের ক্ষমতাধর শত নারীর তালিকায় ৩৬তম এবং নিউইয়র্ক টাইমস সাময়িকীর জরিপে ২০১১ সালে বিশ্বের সেরা প্রভাবশালী নারী নেতাদের তালিকায় সপ্তম স্থান দখল করেন। নেতৃত্বের সাফল্যের জন্য তার আরো অনেক অর্জন রয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক দল ও সরকারে সফল নেতৃত্বের ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার কার্যত আনপ্যারালাল-অপ্রতিদ্ব›দ্বী। অধ্যবসায় আর কঠোর পরিশ্রমী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রতিদ্ব›দ্বী দেশে নেই। সংসদে যে বিরোধী দল রয়েছে; সেই জাতীয় পার্টি তার অনুগ্রহে চলে। আর মাঠের বিরোধী দল হিসেবে পরিচিত বিএনপি হয়ে গেছে পথহারা পাখি। নেতৃত্বের ভুলে দলটি এখানে-সেখানে মুরুব্বি খুঁজতে ঘুরে বেড়াচ্ছে। দেশপ্রেমের সঠিক পথ খুঁজে পাচ্ছে না। ফলে শেখ হাসিনার সামনে কোনো চ্যালেঞ্জ নেই। তার নেতৃত্বে ২০২১ সালে দেশ এগিয়ে যাবে। দক্ষিণ এশিয়ার রাষ্ট্রনায়কদের মধ্যে তার অবস্থান শীর্ষে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।