Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হংকংয়ে বিশেষ নিরাপত্তা আইন পাসের বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড়

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ জুলাই, ২০২০, ৪:১৯ পিএম

হংকংয়ে চীন কর্তৃক বিতর্কিত বিশেষ নিরাপত্তা আইন পাস করায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় বইছে। বুধবার বিকালে এই আইনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামা শতাধিক প্রতিবাদকারীকে গ্রেফতার করেছে হংকংয়ের নিরাপত্তা বাহিনী।
১৯৯৭ সালে ব্রিটিশ সরকার হংকংকে চীনের কাছে হস্তান্তর করার সময় চুক্তিতে লিখিত ছিল, ৫০ বছর বিশেষ স্বাধীনতা ভোগ করবে এ নগররাষ্ট্রের মানুষ। কিন্তু নতুন নিরাপত্তা আইন পাস হওয়ায় এই স্বাধীনতার সমাপ্তি ঘটবে বলে মনে করছেন সমালোচকরা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি বলেন, ‘এটা নির্দয় আইন, হংকংয়ের মানুষের ওপর ব্যাপক নিপীড়ন ও ধড়পাকড়ই বলছে, প্রতিশ্রুত স্বাধীনতা ধ্বংস করার অভিপ্রায় এটা।’
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলছেন, এই আইন পাস ১৯৮৫ সালে সাইনো-ব্রিটিশ যৌথ ঘোষণার ‘পরিষ্কার ও গুরুতর’ লঙ্ঘন। সেই ঘোষণার আলোকেই ১৯৯৭ সালে হংকংকে চীনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তখন চীনের কাছ থেকে এই অঙ্গীকার নেয়া হয়, ৫০ বছর ধরে বিশেষ স্বাধীনতা ভোগ করবে হংকং এবং এই নগররাষ্ট্রে ‘এক দেশ, দুই নীতি’ চালু থাকবে।
চীন বলছে, ২০১৯ সালে হংকংয়ে যে ধরণের প্রতিবাদ সংঘটিত হয়েছে তা বন্ধ করতেই এমন আইন পাসের দরকার হয়ে পড়ে।
এদিকে, বেইজিংয়ের এই আইনের বিরুদ্ধে হংকং-বিষয়ক নানা নিষেধাজ্ঞার অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদ। নিষেধাজ্ঞার কারণে চীনের কোনো কর্মকর্তার সঙ্গে লেনদেন কিংবা ব্যবসা করলে শাস্তির মুখে পড়বে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংক। নিষেধাজ্ঞাটি সর্বসম্মতভাবে পাস হয়েছে। যদিও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সাক্ষর করার আগে সিনেটেরও অনুমোদন পেতে হবে।
হংকং ইস্যুতে বৃটেন সেই দেশের কমপক্ষে ৩০ লাখ অধিবাসীকে বৃটেনে বসবাসের সুযোগ দেয়ার প্রস্তাব করেছে। বলা হয়েছে, তারা বৃটেনের পূর্ণাঙ্গ নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। অস্ট্রেলিয়াও হংকংয়ের নাগরিকদের আবাসিক সুবিধা দেয়ার বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে। প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেছেন, এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব শিগগিরই বিবেচনা করবে মন্ত্রীপরিষদ।
এই আইনের নিন্দা জানিয়েছে জাপানও। তারা চীনের এই আইনকে দুঃখজনক বলে অভিহিত করেছে। জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তোশিমিটসু মোটেগি বলেছেন, এই আইনের ফলে এক দেশ, দুই ব্যবস্থা নীতির প্রতি আস্থা কমে যাবে। ইউরোপীয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট চার্লস মিশেল এই আইনের নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই আইন বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও আইনের শাসনের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে। অন্যদিকে হংকং সফরের ওপর ভ্রমণ সতর্কতা পরিবর্তন করেছে কানাডা। এতে বলা হয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এই নতুন আইন খেয়ালখুশি মতো গ্রেপ্তারের ঝুঁকি বৃদ্ধি করেছে। এমনকি চীনের ভিতর গ্রেপ্তার করে পাঠিয়ে দেয়া হতে পারে।
তবে বিদেশীদের এসব সমালোচনাকে উড়িয়ে দিয়েছেন চীনের কর্মকর্তারা। তারা বলেছেন, হংকং ইস্যুতে বিদেশীদের কিছু বলার নেই। চীনের পাশে এ সপ্তাহে দাঁড়িয়েছে কিউবা সহ ৫৩টি দেশ। জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের ৪৪তম অধিবেশনে কিউবা বলেছে, আমরা বিশ্বাস করি সব দেশেরই আইন প্রণয়ের মাধ্যমে তার জাতীয় নিরাপত্তা সুরক্ষিত রাখার অধিকার আছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ