মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
চীনের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়াকে নতুনভাবে প্রস্তুত করতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী এবার সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী এবং আক্রমণাত্মক প্রতিরক্ষা কৌশল গ্রহণ করছে। প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বুধবার প্রতিরক্ষা বাহিনী একাডেমিতে স্পষ্ট করে কিছু কথা বলেছেন।
নতুন প্রতিরক্ষা কৌশলের আওতায় নিজেদের সেনা সংখ্যা অনেক বাড়ানো, শত্রুর যুদ্ধজাহাজে আঘাত করতে সক্ষম দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র কেনা, সাইবার যুদ্ধের ক্ষমতা বাড়ানো হবে এবং এখন থেকে নিজেদের প্রতিরক্ষা নীতির একচ্ছত্র নজর হবে ভারত-প্রশান্তমহাসাগরীয় এলাকার দিকে।
নতুন প্রতিরক্ষা কৌশল তুলে ধরার সময় মরিসন বলেছেন, অস্ট্রেলিয়া চায় ইন্দো-প্যাসিফিক অর্থাৎ এশিয়া প্রশান্তমহাসাগরীয় অঞ্চল থাকবে মুক্ত, যেখানে কোনো একটি দেশের আধিপত্য এবং জবরদস্তি চলবে না। তিনি যে চীনকে ইঙ্গিত করেছেন তা নিয়ে কারো কোনো সন্দেহ নেই।
চীন নাখোশ হওয়ার মতো কোনো কথা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অস্ট্রেলিয়ার রাজনীতিবিদরা বলতেন না। কিন্তু বুধবার মরিসন ছিলেন অনেক স্পষ্ট। তিনি পরিষ্কার করে বলেছেন, চীনের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়াকে প্রস্তুত করতে বদ্ধপরিকর।
প্রধানমন্ত্রী মরিসন বলেন, এশিয়া এবং প্রশান্ত-মহাসাগরীয় অঞ্চলে প্রাধান্য বিস্তার নিয়ে চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, তার ফলে দিনদিন উত্তেজনা বাড়ছে এবং যে কোনো সময় ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফলে মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
তিনি চীন-ভারত চলমান সীমান্ত নিয়ে উত্তেজনার কথাও বলেছেন। দক্ষিণ চীন সাগরে একচ্ছত্র প্রভাব বিস্তারে চীনের অব্যাহত চেষ্টার কথাও বলেছেন তিনি।
চীন-মার্কিন কিংবা চীন-ভারত এই প্রতিযোগিতায় অস্ট্রেলিয়া যে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে থাকবে সেটাও স্পষ্ট করে বলেছেন মরিসন। কারণ শত শত কোটি ডলার খরচ করে আগামী বছরগুলোতে অত্যাধুনিক অস্ত্র-সম্ভার কেনার যে পরিকল্পনা তিনি করেছেন, তা আসবে প্রধানত যুক্তরাষ্ট্র থেকে।
জানা গেছে, অস্ট্রেলিয়া তাদের নৌবাহিনীর জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে অত্যাধুনিক এজিএম ১৫৮ সি ধরনের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র কিনবে; যা ৩৭০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে সক্ষম।
বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার কাছে যে ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে তার পাল্লা সর্বোচ্চ ১২৪ কিলোমিটার। পাশাপাশি তারা নিজেরই দূরপাল্লার হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির প্রকল্প হাতে নেবে; যা কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরত্ব পাড়ি দিতে পারবে।
সেই সঙ্গে চালক-বিহীন ড্রোন বিমানের সংখ্যা অনেক বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সাইবার যুদ্ধ মোকাবেলার ক্ষমতা ব্যাপক মাত্রায় বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
গত মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ার সাইবার নিরাপত্তা বিভাগ নতুন পাঁচশজন বিশেষজ্ঞ নিয়োগের পরিকল্পনার ঘোষণা করেছে। এই কাজে ১৩৫ কোটি ডলারের জোগান আসবে প্রতিরক্ষা বাজেট থেকে।
সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আমেরিকান স্টাডি সেন্টারের পরিচালক এবং প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক অধ্যাপক অ্যাশলে টাউন্সেন্ড বলেছেন, অস্ট্রেলিয়ার প্রধান লক্ষ্য হলো সঙ্কট তৈরি হলে তারা যেন চীনা সেনাবাহিনী, চীনা স্বার্থ এবং অবকাঠামোতে আঘাত করতে পারে।
সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক টিউন্সেন্ড বলছেন, এই অঞ্চলে স্থিতাবস্থা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা দিনের পর দিন কমছে, অন্যদিকে সেই শূন্যস্থান পূরণে চীন অত্যন্ত আক্রমণাত্মক কৌশল অনুসরণ করছে। যার ফলে, এই অঞ্চলে বিপজ্জনক সামরিক রেষারেষি তৈরি হচ্ছে।
এদিকে ২০১৫ সাল থেকে প্রতি বছর জাপান-ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র যে যৌথ নৌ মহড়া করছে, তাতে এতদিন পর্যন্ত মূলত ভারতের আপত্তিতে অস্ট্রেলিয়া ছিল না। চীন অখুশি হবে বলে ভারত এ মহড়ায় অস্ট্রেলিয়ার ব্যাপারে অনীহা জানিয়ে এসেছে।
কিন্তু চীন-ভারত সীমান্ত বিরোধ সেই পরিস্থিতি বদলে দিয়েছে। ভারতীয় একাধিক গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাপারে ভারত এবার তাদের আপত্তি তুলে নিচ্ছে এবং আগামী আগস্টে যে মহড়া হওয়ার কথা, তাতে হয়ত এবার অস্ট্রেলিয়াও থাকছে। সূত্র : বিবিসি বাংলা
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।