পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে আবারও সক্রিয় হচ্ছে অসাধু সিন্ডিকেট। ২০১৭ সালের ১৯ জুন প্রশাসনিক কারণে বদলীকৃত কর্মকর্তাকে স্বপদে ফিরিয়ে আনতে তৎপর হয়ে উঠেছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের একটি চক্র। অথচ বিষয়টি প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন। আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর মামলার শুনানির দিন। তা স্বত্তেও শুনানির আগেই বড় অঙ্কের বাণিজ্যের মাধ্যমে তাকে পূর্বের পদে ফিরিয়ে আনছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের একটি অসাধু চক্র। দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বদলীকৃত বহুল আলোচিত এই কর্মকর্তার নাম মনির উজ্জামান চৌধুরী। যাকে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের বিক্রয় ও সংগ্রহ শাখা থেকে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে প্রশসানিক শাস্তি হিসেবে বদলী করা হয়। এছাড়া তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) মামলাও রয়েছে।
সূত্র মতে, প্রশাসনিক কারণে স্বাস্থ্য অধিদফতর ২০১৭ সালের ১৯ জুন জনস্বার্থে মনির উজ্জামান চৌধুরীকে বদলী করে। একই সঙ্গে ওই পদে অন্য একজনেক দায়িত্ব দেয়া হয়। পাশাপাশি বদলী প্রজ্ঞাপন জারীর ৩ কর্মদিবসের মধ্যে ন্যাস্তকৃত কর্মস্থলে যোগদানের নির্দেশ দেয়া হয় মনির উজ্জামানকে। কিন্তু বদলীর আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নির্দিষ্ট সময়ে কর্মস্থলে যোগদান না করে ২০১৭ সালের ২ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদফতরের আদেশ বাতিল চেয়ে প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল-১ ঢাকায় এ.টি মামলা (২৩৯/২০১৭) করেন মনির উজ্জামান চৌধুরী। মামলায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ ৫ জনকে প্রতিপক্ষ করা হয়। পরে আদালত ৯ আগস্ট মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বদলীর আদেশ স্ট্রে করে। এরপর থেকে মামলাটি চলমান যার পরবর্তী শুনানির দিন আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর। এদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতরে মামলাবাজ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত মনির উজ্জামান। এর আগেও দুর্নীতির দায়ে তাকে অন্যত্র বদলি করা হয়। কিন্তু তিনি মামলা করে আরও একটি বদলীর আদেশ ঠেকিয়ে দর্ঘিদিন একই পদে থেকে সিন্ডিকেট বাণিজ্য গড়ে তুলেন।
জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট থেকে বদলীর কারণ হিসেবে ওই সময়ে দায়িত্বে থাকা এক উধ্বর্তন কর্মকতা বলেন, মনির উজ্জামান দীর্ঘদিন একপদে বহাল থেকে সরকারের পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুল (পিপিআর) নীতিমালা অমান্য করে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কোটি টাকার কেনাকাটা করেন। এর মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিক বনে যান মনির। তার এবং পরিবারের নামে ঢাকায় একাধিক ফ্ল্যাট ও গাড়ি রয়েছে। পরে তার দুর্নীতি ও অনৈতিক কর্মকান্ডের বিষয়ে মন্ত্রণালয়সহ সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। আর তদন্তে তা প্রমাণ হওয়ায় তাকে শাস্তি হিসেবে বদলী করা হয়। এছাড়াও ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানিয়েছেন, অফিস আঙিনা, কর্মচারী কোয়ার্টার এলাকা, রাস্তা ও সাততলা বস্তির আশপাশে শতাধিক বড় গাছ ছিল জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে। ২০১৭ সালে দায়িত্বে থাকা পরিচালককে না জানিয়ে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে সব গাছ কেটে বিক্রি করেন মনির উজ্জামান।
এদিকে, ২০১৭ সালের ১৯ জুনের বদলীর আদেশ স্ট্রে করেই বসে নেই মনির উজ্জামান। তিনি স্ত্রী শামীমা ইয়াসমিনকে মালিক করে মেয়ে হিমির নামে ‘মেসার্স হিমি এন্টারপ্রাইজ’ খুলে ঠিকাদারী কাজ করছেন। এই প্রতিষ্ঠানের নামে আজিমপুর মেটারনাল এন্ড চাইল্ড হেল্থ ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে কাজও করেছেন। তবে সেই কাজেও অনিয়ম ও জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে। এ অনিয়মের বিষয়টি দুদকে তদন্ত চলছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরের আরেক ‘আবজাল’ এই মনির উজ্জামান। জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও স্বাস্থ্য অধিদফতরে ঠিকাদারী সিন্ডিকেট তৈরি করেছেন। ইতোমধ্যে বদলীর আদেশ বাতিল করে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে যোগদানে তদবির করেই ঠিকাদারদের নিয়ে সভা করেছেন। পদে আসলে কাকে কি কাজ দিবেন তা নিয়ে আলোচনা করেছেন। তারা বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে শুনেছি আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়নে মনির উজ্জামানকে স্বপদে আনা হচ্ছে। তাদের মতে, তাহলে ৩ বছর পরে কেন আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়ন করার প্রচেষ্টা চলছে।
জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের বিক্রয় ও সংগ্রহ কর্মকর্তা মনির উজ্জামান চৌধুরীর সঙ্গে এ বিষয়ে মোবাইলে কথা বলার জন্য কল করলেও তিনি রিসিভ করেন নি।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের আইন উপদেষ্টা দেবাশীষ নাগ ইনকিলাবকে বলেন, আদালতের নির্দেশের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। আগের পদে পদায়নের সুপারিশের মতামত চেয়ে কোন কাগজ আমার কাছে আসেনি। মামলার শুনানি আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর। তাই বিচারাধীন বিষয়ে এর আগে কিছু বলা যাবে না বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মনির উজ্জামানের জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে যোগদানের আদেশের বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের সঙ্গে এ বিষয়ে একাধিকবার কথা বলার চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. মুহাম্মদ আব্দুর রহিম ইনকিলাবকে বলেন, বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন তাই এ নিয়ে কিছু বলার নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।