Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মারাত্মক ঝুঁকিতে জনস্বাস্থ্য

গরু মোটাতাজাকরণে বগুড়ায় ভেজাল-মানহীন ওষুধের রমরমা ব্যবসা ওইসব গরুর দুধ ও গোশত থেকেই মানুষের কোলন ক্যান্সার ও কিডনি বিকল রোগ হচ্ছে

মহসিন রাজু , বগুড়া থেকে : | প্রকাশের সময় : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০১ এএম

বগুড়ায় এখন অবাধে চলছে গবাদি পশুর জন্য ভেজাল, নকল ও মানহীন ওষুধের উৎপাদন ও বিপনন। সেই সাথে চলছে অপরিকল্পিতভাবে গরু মোটাতাজাকরণ। কতিপয় মুনাফাখোর এই খাতে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিলেও গবাদি পশু কিডনি, ফুসফুস ও যকৃতের মারাত্মক পীড়ায় ভুগে ক্ষেত্র বিশেষে মারা যাচ্ছে। তেমনি ভেজাল, নকল ও মানহীন ওষুধ খাওয়ানোর ফলে ওইসব অবলা প্রাণীর দুধ পান করে এবং গোশত খেয়ে মানুষও লিভার ও কোলন ক্যান্সারের মত প্রাণঘাতি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কিডনি। ফলে সামগ্রিকভাবে ঝুঁকিতে রয়েছে জনস্বাস্থ্য।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বগুড়া সদরেই ১৫/১৬টি এবং পুরো জেলায় অর্ধশতাধিক নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠান প্রাণী সম্পদ বিভাগের অনুমোদন নিয়ে গবাদি পশুর মোটাতাজাকরণ ও দুধ বৃদ্ধির জন্য হরমোন জাতীয় মানহীন ওষুধ উৎপাদন ও বিপনন করছে। উৎপাদনকারীদের কেউ কেউ আবার বিভিন্ন বিদেশি ও বহুজাতিক কোম্পানির জনপ্রিয় ব্রান্ডের ওষুধের মোড়ক ছাপিয়ে সেগুলোতে ভেজাল ও নকল ওষুধ বিপনন করছে। এসব উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোতে অত্যন্ত কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকলেও নেই কোন সার্টিফিকেটধারী কেমিষ্ট ও দক্ষ জনশক্তি। তবে এরা ওষুধ বিপননে দক্ষ সেলসম্যান ও অভিজ্ঞ জনশক্তি নিয়োগ দেয় যারা বিপননের পাশাপাশি সব সেক্টরের ম্যানেজের কাজটিও দক্ষতার সাথে করে থাকে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বগুড়ার কয়েকজন অভিজ্ঞ খামারি জানান, বগুড়ার কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ওষুধ ব্যাবহার করে গরু মোটাতাজা করতে গিয়ে কোরবানির হাটে নেওয়ার পথেই একাধিক গরু মারা গেছে। এতে লাখ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। অনেককে কেনার পর কোরবানির আগেই একই পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়েছে। শখ করে লাখ টাকার গরু কিনে এনে কোরবানির আগেই সেই গরু মারা যাওয়ায় কোরবানিই দিতে পারেননি বগুড়ায় এমন অনেক উদাহরণ রয়েছে!
বগুড়ার গোশত বিক্রেতারা জানিয়েছেন, ভারত থেকে গরু আসা বন্ধ হওয়ায় মোটাতাজাকরণ প্রকল্পের ওপরই তারা নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। তবে এইসব গরু জবাইয়ের পর দেখা যায় কলিজা ও ফুসফুস নষ্ট। ফলে তাদেরও গুনতে হয় লোকসান। চামড়ার দাম পড়ে যাওয়া এবং কলিজা ফুসফুস নষ্ট হওয়ায় দামের সমন্বয় করতে গেলে বাধ্য হয়েই গরুর গোশতের দাম বেড়ে যায়।

বগুড়ার ক্যান্সার ও কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলেছেন, ইদানীং যে কোলন ক্যান্সার ও কিডনি বিকলের সমস্যা বেড়েছে সেটা অপরিকল্পিতভাবে ও নিম্ন মানের ওষুধ খাওয়া গরুর দুধ ও মোটাতাজাকরণের ওষুধ খাওয়া গরুর গোশতে থাকা ক্যামিকেলের প্রভাবেই হচ্ছে বলে তারা মনে করেন। এ প্রসঙ্গে বগুড়া সরকারি আজিজুল হক বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের রসায়ন বিভাগের প্রধান প্রফেসর মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, দ্রুত দুধ বিক্রি এবং গরু মোটাতাজাকরণ করতে গিয়ে গবাদি পশুর শরীরের অতিরিক্ত কেমিকেল দুধ সেবন ও গোশত খাওয়ার ফলে মানবদেহে প্রবেশ করে প্রাণঘাতি রোগের বিস্তার ঘটাচ্ছে। একই ধরনের অভিমত জানিয়েছেন প্রাণীবিদ্যা বিভাগের সহকারি প্রফেসর এম মুস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, একদল মুনাফালোভীর চাহিদা মেটাতে গিয়ে উচ্চ মাত্রার হরমোন প্রয়োগের ফলে গবাদি পশু যেমন মারাত্মক অসুস্থ্যতার যন্ত্রনা ভোগ করছে তেমনি মানব স্বাস্থ্য পড়ছে মারাত্মক ঝুঁকিতে।

এ ব্যাপারে সুশাসনের জন্য প্রচারাভিযান (সুপ্র) বগুড়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কে জি এম ফারুক বলেন, গবাদি পশুর দুধ ও গোশত এখন রীতিমত নকল। ভেজাল ও মানহীন ওষুধের অপপ্রয়োগের কারনে ভোক্তাদের কাছে আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যারা মানহীন, ভেজাল ও নকল ওষুধ উৎপাদন ও বিক্রির সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া এবং প্রয়োজনে বারবার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা দরকার। বগুড়া পৌরসভার স্যানিটারি ইন্সপেক্টর শাহ আলী বলেন, করোনার আগে অভিযুক্ত একাধিক প্রতিষ্ঠানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমানা করা হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির কারনে অভিযান ও পরিদর্শন বন্ধ রয়েছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফের অভিযান শুরু হবে।

বগুড়া জেলা প্রাণী সম্পদ বিভাগের উপজেলা কর্মকর্তা ডা. এমডি আব্দুস সামাদ বলেন, তারা সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের অনুমতির ক্ষেত্রে তদন্ত রিপোর্ট দিয়ে থাকেন। অনুমতি দেয় মন্ত্রণালয়। সময় সুযোগমত তদারকির কাজ নিয়মিত করেন। কোথাও অনিয়মের অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থাও নেওয়া হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মারাত্মক ঝুঁকিতে জনস্বাস্থ্য

১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->