Inqilab Logo

বুধবার ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অবতরণের আগে করোনা নিয়ে আলোচনা, পাইলটের ভুলেই পাকিস্তানে ভেঙে পড়েছিল বিমান

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ জুন, ২০২০, ৩:১৬ পিএম

পাকিস্তানে গত ২২ মে এক ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল ৯৭ জনের। পরে বিমানটির ব্ল্যাকবক্স উদ্ধার হলে শুরু হয় তদন্ত। সেই তদন্তে জানা গেছে, বিমান অবতরণ করানোর সময় মহামারী করোনাভাইরাস নিয়ে আলোচনা করছিলেন পাইলট এবং তার সঙ্গে থাকা কন্ট্রোলার। বুধবার পাকিস্তানের পার্লামেন্টে এ কথা জানিয়েছে দেশটির বিমানমন্ত্রী গুলাম সরওয়ার খান।

মন্ত্রী জানিয়েছেন, যান্ত্রিক ত্রুটি নয় বরং মানুষের ভুলেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। কারণ বিমান অবতরণের সময় পাইলট এবং কন্ট্রোলার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে আলোচনায় মগ্ন ছিলেন। সম্ভবত এর ফলেই সঠিক ভাবে সব নিয়ম অনুসরনের দিকে তারা মনোযোগ দিতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘আকাশে ওড়ার জন্য ১০০ শতাংশ ফিট ছিল ওই বিমান। কোনও যান্ত্রিক গোলযোগ ছিল না। ফলে বিমানে ত্রুটির কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেনি। বরং পাইলট এবং কো-পাইলটের অন্যমনস্কতায় তারা এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলারের সব নির্দেশ ঠিক ভাবে শুনতে পাননি। তার জেরেই অবতরণের আগে ভেঙে পড়ে যাত্রীবোঝাই বিমান।

প্রসঙ্গত, গত ২২ মে করাচি বিমানবন্দরের এই ঘটনার জেরে রীতিমতো তোলপাড় পড়ে যায় গোটা পাকিস্তানে। ঘটনার তড়িঘড়ি তদন্তের নির্দেশ যায় ইমরান খানের দফতর থেকে। যাত্রী এবং ক্রুসহ মোট ৯৯ জন ছিলেন সেই বিমানে। লাহোর থেকে করাচির উদ্দেশে রওনা হয়েছিল পাকিস্তান এয়ারলাইন্সের পিকে-৮৩০৩ বিমানটি। করাচির জিন্না আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের আগেই ঘটে অঘটন। করাচি বিমানবন্দরে নামার আগেই ভেঙে পড়ে বিমানটি।

জানা গেছে, বিমানবন্দর থেকে প্লেন যখন ১৫ নটিক্যাল মাইল দূরে তখন প্রথম ওয়ার্নিং বা সতর্কবার্তা পাঠায় এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার বা এটিসি। ৭০০০ ফুটের বদলে তখন প্লেন উড়ছিল ১০ হাজার ফুট উচ্চতায়। দ্বিতীয়বার সতর্কবার্তা আসে যখন বিমানবন্দর থেকে প্লেনের দূরত্ব ১০ নটিক্যাল মাইল। সেসময় ৩০০০ ফুটের বদলে বিমান উড়ছিল সাত হাজার ফুট উচ্চতায়। তবে পরপর দুটো সতর্কবার্তার পরেও কোনও হেলদোল দেখাননি পাইলট। যখন কন্ট্রোল টাওয়ার বিমানের উচ্চতা বাড়ানোর জন্য আবেদন করে, তখন একজন পাইলট জানিয়ে দেন, ‘আমি ম্যানেজ করে নেব।’ এরপর তারা করোনায় কতগুলি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা নিয়ে গল্প গুজব করছিলেন বলে জানা গিয়েছে।

অবতরণের ঠিক আগের মুহূর্তেও এটিসি থেকে ওয়ার্নিং পাঠানো হয় পাইলটকে। জবাবে পাইলট জানান পরিস্থিতি নিয়ে তিনি চিন্তিত নন। বরং সব সামলে ল্যান্ডিংয়ের জন্য প্রস্তুত তিনি। এরপরেই ঘটে দুর্ঘটনা। করাচি বিমানবন্দরে নামার আগেই আছড়ে ভেঙে পড়ে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের এয়ারবাস এ-৩২০। বিমান ল্যান্ড করানোর আগে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে আলোচনা করাই কাল হয়ে দাঁড়ায়। সূত্র: রয়টার্স।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাকিস্তান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ