বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
এপ্রিলের ৯ তারিখ পটুয়াখালীতে প্রথম করোনা আক্রান্তীত রোগীর মৃত্যুর মাধ্যমে শুরু হয়ে আজ ২৪ জুন সকাল পর্যন্ত আড়াইমাসে জেলায় করোনা শনাক্তকৃত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৫৫ তে।ইতোমধ্যে এ সনাক্তকৃত রোগীদের মধ্যে ১৫ জন মারা গিয়েছেন।যতই দিন যাচ্ছে ততই বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা,জেলার সচেতন নাগরিকগন মনে করেছেন করোনা শনাক্তকরনে বিলম্বতা জেলায় আ্রকান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারন ।
পটুয়াখালী সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে,গতকাল ২৩ জুন পর্যন্ত পটুয়াখালী থেকে ৩৬৫৩ টি নুমনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় ,এর মধ্যে ২৮৮৪ টি নমুনার রিপোর্ট গতকাল পর্যন্ত পাওয়া গিয়েছে। যার মধ্যে ২৬৩৪ জন নেগেটিভ এবং ২৫০ জন পজেটিভ।
জেলার ৮ টি উপজেলার মধ্যে পটুয়াখালী সদর উপজেলাই আক্রান্তের সংখ্যা ১৩০ এর মধ্যে পটুয়াখালী পৌর শহরেই আক্রান্তের সংখ্যা ৭১।ইতোমধ্যে জেলায় ১৫ জন ব্যাক্তি মারা গিয়েছেন,যার মধ্যে বাউফলে ৭ ,দুমকীতে ৩ ,গলাচিপাতে ১ ,কলাপাড়াতে ২ ,সদর উপজেলায় ১ এবং মির্জাগঞ্জ উপজেলায় ১ জন।
এ যাবৎ প্রাপ্ত রির্পোটের পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে জেলায় সংগ্রহীত নমুনার রিপোর্ট আসতে ৫ থেকে ৭ দিন সময় লেগে যাচ্ছে।নমুনা প্রদানকারী ব্যাক্তিরা নমুনা প্রদানের পরে রিপোর্ট আসতে বিলম্ব করায় পরিবার সহ সমাজে বিভিন্ন জায়গায় স্বাভাবিক কাজকর্ম করে যাচ্ছেন । পরবির্ততে যখন ১ সপ্তাহ পরে রিপোর্ট আসে পজেটিভ,তখন তার সংস্পর্শে আসা লোকজন সহ অধিক সংখ্যক ব্যাক্তিকে পরীক্ষা করাতে হচ্ছে।
বরিশাল বিভাগের ৬ টি জেলার একমাত্র ল্যাব বরিশাল মেডিক্যাল কলেজের ল্যাবের সীমাবদ্ধতার কারনে সেখান থেকে অনেক সময় টেস্ট করানো সম্ভব হয়না ,তখন পাঠানো হয় ঢাকায় ,যার ফলে রিপোর্ট আসতে সময় লেগে যাচ্ছে।এমনকি হাসপাতালে সেবা প্রদানকারী চিকিৎসকদের নমুনা প্রদানের পরও কমপক্ষে ৪ থেকে ৫ দিন লেগে যাচ্ছে রিপোর্ট পেতে ।এরকম পটুয়াখালীতে একাধিক চিকিৎসক তাদের নমুনা প্রদানের পরে হাসপাতালে নিয়মিত চিকিৎসা কাজে নিয়োজিত থাকার পরে ৫ দিন পরে রিপোর্ট পেয়েছেন পজেটিভ। পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার মোঃ কামরুজ্জামান জানান ,যত তাড়াতাড়ি রিপোর্ট পাওয়া যাবে ততোই শনাক্তকরণের মাধ্যমে মহামারী ভাইরাস থেকে সকলে সতর্ক হওয়া সম্ভব হবে।
রিপোর্ট প্রাপ্তির এ বিলম্বতার কারণে জেলায় করোনা পজিটিভ আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে বলে অধিকাংশ সচেতন মানুষ মনে করছেন। ১৮লক্ষাধিক জনসংখ্যা অধ্যুষিত পটুয়াখালী জেলার জনমানুষের জীবনকে মহামারীর হাত থেকে রক্ষা করতে পটুয়াখালী জেলায় অবিলম্বে একটি করোনা সনাক্তকরণ ল্যাবের দাবি উঠেছে জোরেশোরে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ পটুয়াখালীর রাজনৈতিক ,সামাজিক, বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন সহ সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ এ দাবির প্রতি একাত্মতা পোষণ করে বিবৃতি সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দাবির পক্ষে বিভিন্ন প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
পটুয়াখালী -১ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট মো: শাহজাহান মিয়া গত ৭ জুন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব বরাবরে পটুয়াখালীতে পিসিআর ল্যাব স্থাপনের অনুরোধ জানিয়ে ডিও লেটার প্রদান করেছেন।
জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ভিপি আবদুল মান্নান বলেন,আমি আমার নমুনা দেয়ার ৭ দিন পরে রিপোর্ট পেয়েছি, পটুয়াখালীতে করোনা শনাক্তকরন ল্যাব থাকলে এ বিলম্বটা হতো না , ইতোমধ্যে আড়াই শতাধিক পজেটিভ রোগী শনাক্ত হয়েছেন ।এ সংখ্যা আরো বেশী হবে,পটুয়াখালীতে ল্যাব না থাকার কারনে রিপোর্ট পেতে বিলম্ব হচ্ছে ,এটা সাধারন মানুষ জেনে গেছে,ফলে তার নমুনা দিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করছে।অতিদ্রুত করোনা শনাক্তকরন ল্যাব পটুয়াখালীতে প্রতিষ্টার মাধ্যমে পজেটিভ লোকদের শনাক্ত করা হোক,না হলে এ মাহামারী ভাইরাস দ্বারা ব্যাপক জনগোষ্টি আক্রান্ত হয়ে যাবেন।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি কাজী আলমগীর বলেন ,অতিদ্রত পটুয়াখালীতে একটি করোনা সনাক্তকরন ল্যাব চালু করা গেলে জেলাবাসীকে এ দূর্যোগের হাত থেকে রক্ষা করতে তা বড় ভুমিকা পালন করবে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট আফজাল হোসেন বলেন, পটুয়াখালীতে দ্রত একটি করোনা শনাক্তকরণ ল্যাব প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি উচ্চ পর্যায়ে রাজনৈতিকভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মো: মতিউল ইসলাম চৌধুরী জানান, করোনা সনাক্তকরন ল্যাবের বিষয়ে জেলা পর্যায়,সহ বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার দপ্তর থেকে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তবনা পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের এর চেয়ারম্যান জেলার দায়িত্ব প্রাপ্ত সম্মানিত সচিব জনাব মো: সামছুর রহমান বিষয়টি মনিটরিং করছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।