Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভাঙন রোধে নেই ব্যবস্থা

প্রতিবছর নদীগর্ভে বিলীন ১০ হাজার হেক্টর জমি চলতি মাসে বন্যার শঙ্কা

পঞ্চায়েত হাবিব | প্রকাশের সময় : ২৩ জুন, ২০২০, ১২:০২ এএম

নদী শাসন এবং ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা না থাকায় দেশে প্রতিবছরই বিস্তীর্ণ এলাকা নদী ভাঙনের শিকার হয়। প্রতিবছর এভাবে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়। ঘরবাড়ি, ফসলের জমি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যায় কোটি মানুষ। বিগত চার দশকে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, গঙ্গা, যমুনা ও পদ্মার ভাঙনে প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার হেক্টর জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ২ হাজার ৪০০ কিলোমিটার নদীর তীর ভাঙনের ঝুঁকির মুখে থাকে। কমবেশি ১০০টি উপজেলা বন্যা ও নদী ভাঙনের শিকার হয়।

গত বছরই দেশের বন্যার পানির উচ্চতা বৃদ্ধি এর আগের কম বেশি সব কয়টি জেলায় রেকর্ড ভেঙেছে। এবার তেমন কিছু হবে কি না, সেই পূর্বাভাস এখনো পাওয়া না গেলেও বন্যা এবার আগেভাগে শুরু হতে পারে। এরই মধ্যে দেশের তিনটি বড় নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও তিস্তার পানি দুইক‚ল ছাপিয়ে যেতে পারে। ইতোমধ্যে কুড়িগ্রামের উলিপুর, লালমনিরহাট, রংপুর, গাইবান্ধা, নীলফামারী, জামালপুর, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জে বন্যা দেখা দিয়েছে। নদী পানি বৃদ্ধিও সঙ্গে সঙ্গে নদীভাঙন বৃদ্ধি পেতে পারে বলে সরকারের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে।

সংস্থাটি বলছে, জুলাইয়ের শুরুতে পদ্মা অববাহিকা ও চট্টগ্রামের নদ-নদীগুলোর দুই পারের নিম্নাঞ্চলে বন্যা শুরু হতে পারে। একেকটি এলাকার বন্যার পানি কমপক্ষে এক সপ্তাহ থাকতে পারে। তারপর পানি নেমে গিয়ে আবার আগস্ট-সেপ্টেম্বরে আরেক দফা বন্যা হতে পারে। এদিকে বিভিন্ন জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীদের কাছে বরাদ্দ না থাকা নদীভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা করতে পারছে না বলে জানা গেছে।
কুড়িগ্রামের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, আমার কাছে বরাদ্দ নাই। বরাদ্দ আসলে আমি কাজ করবো। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্যা ও পানি ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বন্যা অস্বাভাবিক হয়ে উঠছে। পানিচক্রের এই পরিবর্তনের সঙ্গে মানুষের জীবন-জীবিকা ও অবকাঠামো কীভাবে টিকে থাকবে, সেই পরিকল্পনা এখন থেকেই করতে হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক আমিনুল হক ইনকিলাবকে বলেন, বর্তমানে নদী শাসনের ফলে নদীর ভাঙনের তীব্রতা বছরে ৬ হাজার হেক্টরে (৬০ কিমি) নেমে এসেছে। দেশের বড় নদীগুলো ক্রমাগত তার চ্যানেল পরিবর্তন করে। ফলে নদী তীরের অবস্থান পরিবর্তন হয়। নদীভেদে প্রতিবছর ৬০ মিটার থেকে ১৬০০ মিটার পর্যন্ত নদীর তীর স্থানান্তরিত হয়।

অপরদিকে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভ‚ঁইয়া ইনকিলাবকে বলেন, উজানে অস্বাভাবিক বৃষ্টি হচ্ছে। ওই বৃষ্টি এক সপ্তাহের মধ্যে দেশের নদী অববাহিকাগুলোতে চলে এসে বন্যা দেখা দিতে পারে। দেশের বিভিন্ন নদ-নদীর ১০১টি পয়েন্টের মধ্যে ৬৮টি পয়েন্টেই পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে।
গত কয়েক মাস ধরে যেসব এলাকায় নদীর ভাঙন শুরু হয়েছে সেই এলাকাগুলো হচ্ছে, কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর, রংপুরের গঙ্গাছড়া, কাউনিয়া, পীরগছা, লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা, তিস্তা, গাইবান্ধা, নীলফামারী, জামালপুর, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর জেলার বিভিন্ন এলকা।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ