Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

করোনায় শিক্ষার্থীদের হালচাল

ইবি সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৯ জুন, ২০২০, ৭:২২ পিএম

‌মরনব্যাধি করোনা ভাইরাসের আক্রমণ প্রতিহত করতে সরকার কর্তৃক সর্বপ্রথম সারা দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয়। পরবর্তীতে ২৬ মার্চ হতে সরকারি এবং বেসরকারি অফিসসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয়। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঘরে থাকতে বলা হয় এবং বাইরে বের হতে নিষেধ করা হয়। এমতাবস্থায়, ঘরে সময় ভালো কাটাবার উপায় নিয়ে শিক্ষাবিদ, পুষ্টিবিদ, মনোবিদ এবং স্বাস্থ্যবিদগণ চমৎকার পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। সবচেয়ে বড় সমস্যাটি হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। প্রতিদিনের একাডেমিক ব্যস্ততা, ছোটা-ছুটি, খেলাধুলা, গান শেখা, নাচ শেখা, হোমওয়ার্ক করা, এক ছোট্ট ভাইরাসের আক্রমণে থেমে গেছে । ফলে শিক্ষার্থীরা একদিকে বাসায় অস্থির হয়ে উঠছে অন্যদিকে বাৎসরিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। বিষয়টি অনুভব করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এটুআইয়ের কারিগরি সহযোগিতায় শিক্ষার্থীদের পাঠে ধরে রাখার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সংসদ টেলিভিশনে প্রচারিত হচ্ছে বিষয়ভিত্তিক শ্রেণি কার্যক্রম। স্বল্প সময়ের প্রস্তুতিতে শুরু করা এই কার্যক্রমে কিছু ভুলত্রুটি থাকলেও শিক্ষার্থীরা উপকৃত হচ্ছে। করোনা ভাইরাসে বর্তমানে পুরো বিশ্ব দিশেহারা।ভ্যাকসিন আবিস্কারের কোথাও কোন সুখবরের আভাস নেই, আছে শুধু আক্রান্ত আর মৃত্যুর মিছিলের সংবাদ। অর্থনৈতিক অবস্থা দিন দিন আশঙ্কাজনক হারে অবনতি হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার ব্যপারে নেই কোন সবুজ সংকেত, বিভিন্ন দেশে সীমিত আকারে খুললেও স্বস্তি পাচ্ছে না অভিভাবক ও শিক্ষাবিদরা।

কারন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হচ্ছে যেন শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় অমনোযোগী না হয়ে যায় কিন্তু এ উদ্যোগে তেমন সুফল পাচ্ছে না বিভিন্ন দেশে, কারন ফ্রান্স,চীন,ইতালি, স্পেনে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার কারনে অনেক শিক্ষার্থী মরন ব্যাধি করোনায় আক্রান্ত হয়েছে।আমাদের দেশেও অনেকে ই বলতেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সীমিত আকারে খুলে দেওয়া হোক, এই কথার উত্তরে আমাদের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ড.দিপু মনি, সুন্দর একটা উত্তর দিয়েছেন" যে আপনার সন্তান একবছর পড়াশোনা না করলে মূর্খ হয়ে যাবে না তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিলে অনেক মায়ের কোল খালি হয়ে যাবে"। মাননীয় মন্ত্রীর কথাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং সময়োপযোগী। অন্য দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভি সি স্যাররা অনলাইন ক্লাস নিতে শিক্ষকদের অনুরোধ জানাচ্ছেন, সীমিত আকারে নিচ্ছেনও তবে অনলাইন ক্লাস একটু ব্যয়বহল, যেকারণে অর্থনৈতিক ভাবে দূর্বল শিক্ষার্থীদের এই ব্যয় বহন করা কষ্টসাধ্য, আবার গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে নেটওয়ার্ক সমস্যা হয়। অনেক শিক্ষার্থীর হয়তো বা স্মার্ট ফোনও নেই, তার ক্লাস করা সম্ভব না। এই পদ্ধতিতেও সব শিক্ষার্থী উপকৃত হচ্ছে না। এই নানা সমস্যার কারনে পড়াশোনায় শিক্ষার্থীরা দিশেহারা। যেহেতু এটা একটা রাষ্ট্রীয় দূর্যোগ, তাই সমস্যা পুরাপুরি দূর না হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া সম্ভব নয়।এখন শিক্ষার্থীদের করণীয় হলো সাস্থ্য বিধি মেনে চলা, বাসায় থাকা,শরীর চর্চা করা,বই পড়া, সর্বোপরি ভালো সময় কাটানো। সম্মানিত অভিভাবক, এই দু:সময়ে সন্তানকে সময় দিন, অনলাইনে তার সমস্যা সমাধান করতে সহায়তা করুন এবং তার উপযোগী অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোর সাথে সন্তানকে যুক্ত করে দিন।সম্মানিত শিক্ষকগণ ব্যক্তিগতভাবে কিংবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সাথে নিয়ে শ্রেণিভিত্তিক গ্রুপে শিক্ষার্থীদের সহায়তায় এগিয়ে আসতে পারেন। নিশ্চয়ই মেঘ কেটে যাবে, আমাদের শিক্ষাঙ্গন মুখরিত হবে শিক্ষার্থীদের কলকাকলিতে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ