Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোযা রোগ প্রতিরোধ ও সুস্থ থাকার অন্যতম উপায়

চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের দৃষ্টিতে রোযা

মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ | প্রকাশের সময় : ১৯ জুন, ২০২০, ১২:০৩ এএম | আপডেট : ১২:০৬ এএম, ১৯ জুন, ২০২০

রমজান মাসের রোযা ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভের মধ্যে তৃতীয় সম্ভব। রমজানের রোযা মুসলমানের উপর ফরয করা হয়েছে। রোযার গুরুত্বের ব্যাপারে কুরআন-হাদিসে ব্যাপক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। ইসলামের পূর্ব রোযার প্রচলন ছিল। কিন্তু অবাধ স্বাধীনতার ফলে রোযার ভাবমূর্তি ও প্রাণশক্তি নষ্ট করা হয়েছিল। আল্লাহর নৈকট্য লাভের অন্যতম মাধ্যম যুহে যুগে তা অন্ত:সারশূণ্য করে নিছক এক অনুষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছিল। এমন পরিস্থিতি থেকে মুক্ত করে আবার আত্মিক ও নৈতিক ইবাদতে পরিনত ও সুন্দর করে উম্মতে মোহাম্মদীর উপর ফরয করে দেন আল্লাহ তাআলা। রোজার মাধ্যমে মানুষের দুনিয়ার মানসিক প্রশান্তি আসে এবং পারলৌকিক জীবনে সফলতা পাওয়া যায়।
আল কুরআনুল কারীমে আল্লাহ পাক ঘোষনা করেছেন: “হে মুমিনগণ! তোমাদের উপর রমজান মাসের রোযা ফরয করা হয়েছে। যেমন বিধান তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর ফরয করা হয়েছিল। যাতে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।”(-সুরা বাকারা-১৮৩)। আল্লাহ তাআলা আরো বলেন, তোমাদের মধ্যে যারা এ মাস (রমজান) পাবে তারা যেন সিয়াম সাধনা করে। (সুরা বাকার, ২:১৮৫)।
চলমান আলোচনায় ইসলামি দৃষ্টিকোন থেকে আলোচনা না করে ‘চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষিটকোন থেকে আলোচনার চেষ্টাই মূল লক্ষ্য । কেননা, বিজ্ঞান সম্মত এ ইবাদতকে অযুক্তিকভাবে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার ব্যর্থ চেষ্টা করতে দেখা যায়। তাদের ধারণা রোযা বিজ্ঞান সম্মত নয়। রমযানের রোজা রাখার সুফল পাওয়া যায় না মূলত খাদ্যাভ্যাসের কারণে। এ সব অবান্তর কথার সমাধান দিয়েছেন চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা। হা, সেহরি-ইফতার যদি ক্ষতিকর খাবার হয় তাহলে ক্ষতি তো হবেই। তাতে রোযার কি দোষ? বাংলাদেশের মানুষ ইফতার ও সাহরীতে সহজপাচ্য খাবার গ্রহণ না করে মুখরোচক মশলাদার খাবার গ্রহণ করে। এতে পাকস্থলীর এসিডিটি, আলসার, বদহজম আরো বেড়ে যায়।
তিরমিজি শরীফে এসেছে রাসূল (সা.) মাগরিবের নামাজের পূর্বে কয়েকটি তাজা খেজুর দ্বারা ইফতার করতেন। খেজুর না থাকলে কয়েক কোশ পানিই পান করতেন। রাসূল (সা.) বলেছেন: ‘‘যখন তোমাদের কেউ ইফতার করে সে যেন খেজুর দ্বারা ইফতার করে। কেন না এতে বরকত রয়েছে। যদি খেজুর না পায় তবে যেন পানি দ্বারা ইফতার করে। কারণ পানি হলো পবিত্রকারী।” আসল বিষয় হলো রমযানের উদ্দেশ্য পূরণে রকমারি খাবার আয়োজন রোজার সুফলকে ¤øান করে দেয়। আর এ সুযোগে প্রকৃত জ্ঞান বিবর্জিতরা রোযার বিরুদ্ধে কথা প্রশান্তি লাভের চেষ্টা করে।
রোযার অর্থ হলো বিরত থাকা। ইসলামী পরিভাষায় সুবহে ছাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার, স্ত্রী সংঘম থেকে বিরত থাকাকে সিয়াম বা রোযা বলে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নত গবেষণার ফলে জানা যায়, রোযার নানাবিধ উপকারিতার কথা। রোযা পালন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়। বরং রোযা রোগমুক্তির বিশেষ অষুধ এবং সুস্থ্য হওয়ার বিরাট নিয়ামত।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে সুস্থ্য জীবনের জন্য কম খাওয়ার আবশ্যক। একটি কথা আছে, “বেশি বাঁচবি তো কম খা”। এই বাক্যটি বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত।
প্রখ্যাত চিকিৎসক ইবনেসিনা তাঁর রোগিদের ৩ সপ্তাহের জন্য উপবাস পালনের নির্দেশ দিতেন। কারণ, বৎসরে ১ মাস রোযা রাখার কারণে মানব দেহের বিভিন্ন অঙ্গ প্রতঙ্গের বিশ্রাম ঘটে। সকল বিষয়ে বিশ্রাম অনিবার্য। মানুষের শরীরে এক প্রকার জৈব বিষ জমাট সৃষ্টি হয়। এই জৈব বিষ দেহের ¯œায়ু এবং অন্যান্য জীব কোষকে দুর্বল করে দেয়। এক মাসের রোযার ফলে এই জৈব বিষ দূর হয়ে যায়। রোযা দেহের রক্ত প্রবাহকে পরিশোধন করে। রোযা মানুষের হাইপারটেনশন কমাতে সাহায্য করে।
রাশিয়ার শরীর বিজ্ঞানী অধ্যাপক ডাক্তার ডি,এন, নাকিটন বলেছেন: “তিনটি নিয়ম পালন করলে শরীরের বিষাক্ত দ্রব্যাদি বের হয়ে যাবে এবং বার্ধক্য থামিয়ে দিবে। তা হলো- অধিক পরিশ্রম করা, অধিক পরিমাণে ব্যায়াম করা এবং প্রত্যেক মাসে একদিন উপবাস থাকা।”
ডক্টর ডিউই জোড় দিয়ে বলেছেন-রোগাক্লিষ্ট মানুষের পাকস্থলি থেকে খাদ্য দ্রব্য সরিয়ে ফেল, দেখবে রুগ্ন মানুষটি উপবাস থাকছে না, উপবাস থাকছে তার শরীরে বাসা বেঁধে থাকা দীর্ঘদিনের রোগটি।”
চিকিৎসা শা¯্ররে জনক ডাক্তার হিপ্পোক্রিট্যাস বহু শতাব্দি পূর্বে বলেছেন, “অসুস্থ্য দেহে যতই খাবার দিবে ততই রোগ বাড়তে থাকবে।” (চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে রোযা)।
মুসলিম গবেষকগণ বলেন, পেপটিক আলসার রোযার কারণে তাড়াতাড়ি ভালো হয়। রোযার কারণে পাকস্থলী খাদ্যমুক্ত থাকে। এ সুযোগে পাকস্থলীর ক্ষতস্থান বা আলসার নিরাময়ে লেগে যায়। পাকস্থলী খালী হওয়া মাত্রই তার ক্ষয় পূরণ এবং পুনঃগঠনের কাজ শুরু হয়। এভাবে দীর্ঘ এক মাসের রোযা মানুষের পেপটিক আলসার রোগ নিরাময় করতে সাহায্য করে। অনিয়মিত খাবার, অত্যধিক চা পান, ধুমপান, দুঃশ্চিন্তা ও টেনশন পেপটিক আলসার সৃষ্টি করে। নিয়মিত রোযা পালনে কারণেই পেপটিক আলসার থেকে মানুষের মুক্তি পাওয়া সম্ভব। নিয়মিত পেট খালি রাখলে এবং নিয়মিত আহার করলে পেটে এমন এক পরিবেশ সৃষ্টি হয়, যাতে আলসার বা ক্ষত শুকাতে সহায়ক হয়।
ডাক্তার ক্লীভ তার পেপটিক আলসার নামক গবেষনা মুলক পুস্তকে লিখেছেন: ভারত, জাপান, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ নাইজেরিয়াতে অন্যসব এলাকার তুলনায় মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় এই পেপটিক আলসার রোগের প্রকোপ অনেক কম। কেননা তারা সিয়াম পালন করে থাকেন। তাই তিনি জোর দিয়ে বলেছেন- “সিয়াম কোন রোগ সৃষ্টি করে না”।
১৯৫৮-১৯৬৩ সাল পর্যন্ত ডাক্তার মুহাম্মদ গোলাম মুয়ায্যমসহ কয়েক জন ডাক্তার ঢাকা ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজে রোযার বিভিন্ন দিক নিয়ে দীর্ঘ গবেষনা করেছেন। এ গবেষণায় দেখা গেছে যে, শতকরা প্রায় ৮০ জন রোযাদারের বেলায় গ্যাস্ট্রিক এসিড স্বাভাবিক পাওয়া গেছে। শতকরা প্রায় ৩৬ জনের অস্বাভাবিক এসিডিটি স্বাভাবিক হয়েছে। প্রায় শতকরা ১২ জন রোযা পালনকারীর এসিড একটু বেড়েছে, তবে কারো ক্ষতিকর পর্যায়ে যায়নি। সুতরাং রোযায় পেপটিক আলসার হতে পারে এমন ধারণা ভুল ও মিথ্যা।(স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও ইসলাম)।
শরীরের অধিক ওজন কমানোর জন্য রোযা এক প্রকার থেরাপিউটিক ব্যবস্থা। প্রফেসর ডাক্তার মোহাম্মদ গোলাম মোয়ায্যম সহ কয়েকজন ডাক্তার ৬ বৎসর (১৯৫৮-১৯৬৩) ব্যাপী গবেষণা করে দেখিয়েছে যে, রোযা পালনের ফলে শতকরা প্রায় ৮০ জন রোযাদারের শরীরের ওজন কিছু কমেছে। কিন্তু কোন রোযাদার এতে দুর্বলতার অভিযোগ করেননি বরং বেশি ওজনের লোকদের অনেকে ওজন হ্রাসের কারণে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। (স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও ইসলাম)।
বিশিষ্ট চিকিৎসা বিজ্ঞানী ডাক্তার আলেক্স হেইগ (উৎ. অষবী ঐবরম) বলেছেন-“সিয়াম হতে মানুষের মানুষিক শক্তি এবং বিশেষ বিশেষ অনুভূতিগুলো উপকৃত হয়, স্মরণ শক্তি বাড়ে, মনোযোগ ও যুক্তি শক্তি পরিবর্ধিত হয়, প্রেম, প্রীতি, ভালবাসা, সহানুভূতি, অতীন্দ্রিয় এবং আধ্যাত্মিক শক্তির উন্মেষ ঘটে। ঘ্রানশক্তি, দৃষ্টিশক্তি ও শ্যবনশক্তি বেড়ে যায়। রোযা খাদ্যে অরুচি ও অনিহা দূর করে। সিয়াম শরীরের রক্তের প্রধান পরিশোধক। রক্তের পরিশোধন এবং বিশুদ্ধি সাধন দ্বারা দেহ প্রকৃতপক্ষে জীবনশক্তি লাভ করে। যারা রুগ্ন তাদেরকেও রোযা পালন করা উচিত”। (চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে রোযা)।
ইউরোপের ঘরে ঘরে ইদানীং রোজা করার হিড়িক পড়েছে। সবার মুখে এক কথা- শরীরটাকে ভালো রাখতে চাওতো রোজা কর। এ ধরনের চেতনা সৃষ্টির পিছনে সত্তর দশকে প্রকাশিত একটি বই বিশেষত: দায়ি। বইটি হচ্ছে প্রখ্যাত জার্মান চিকিৎসাবিদ ড. হেলমুট লুটজানার-এর ঞযব ঝবপৎবঃ ড়ভ ঝঁপপবংংভঁষ ঋধংঃরহম অর্থাৎ উপবাসের গোপন রহস্য। বইটিতে মানুষের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রতঙ্গের গঠন ও কার্যপ্রণালী বিশ্লেষণ করে নিরোগ, দীর্ঘজীবী ও কর্মক্ষম স্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হলে বছরের কতিপয় দিন উপবাসের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ড. লুটজানারের মতে, খাবারের উপাদান থেকে সারাবছর ধরে মানুষের শরীরে জমে থাকা কতিপয় বিষাক্ত পদার্থ (টকসিন), চর্বি ও আবর্জনা থেকে মুক্তি পাবার একমাত্র সহজ ও স্বাভাবিক উপায় হচ্ছে উপবাস। উপবাসের ফলে শরীরের অভ্যন্তরে দহনের সৃষ্টি হয় এবং এর ফলে শরীরের ভিতর জমে থাকা বিষাক্ত পদার্থসমূহ দগ্ধীভূত হয়ে যায়। আর আরবি ‘রামাদান’ শব্দটি ‘রমদ’ ধাতু থেকে উৎপত্তি। অর্থ দহন করা, জ্বালিয়ে দেয়া ও পুড়িয়ে ফেলা। এভাবে ধ্বংস না হলে, ঐসব বিষাক্ত পদার্থ শরীরের রক্তচাপ, একজিমা, অন্ত্র ও পেটের পীড়া ইত্যাদি বিভিন্ন রোগব্যাধির জন্ম দেয়।
রোজা পালনের ফলে মানুষের শরীরে কোন ক্ষতি হয় না বরং অনেক কল্যাণ সাধিত হয়, তার বিবরণ কায়রো থেকে প্রকাশিত ‘ঝপরবহপব ঈধষষং ভড়ৎ ঋধংঃরহম’ গ্রন্থে পাওয়া যায়।
ডক্টর ডিউই বলেছেন, ‘‘রোগজীর্ণ এবং রোগক্লিষ্ট মানুষটির পাকস্থলী হতে খাদ্যদ্রব্য সরিয়ে ফেল, দেখবে রুগ্ন মানুষটি উপবাস থাকছে না, বরং সত্যিকাররূপে উপবাস থাকছে রোগটি।’’
পাশ্চাত্যের প্রখ্যাত চিকিৎসাবিদগণ একবাক্যে স্বীকার করেছেন, “ঞযব ঢ়ড়বিৎ ধহফ বহফঁৎধহপব ড়ভ ঃযব নড়ফু ঁহফবৎ ভধংঃরহম পড়হফরঃরড়হং ধৎব ৎবসধৎশধনষব : অভঃবৎ ধ ভধংঃ ঢ়ৎড়ঢ়বৎষু ঃধশবহ ঃযব নড়ফু রং ষরঃবৎধষষু নড়ৎহ ধভৎবংয.”
অর্থাৎ রোজা রাখা অবস্থায় শরীরের ক্ষমতা ও সহ্যশক্তি উল্লেখযোগ্য : সঠিকভাবে রোজা পালনের পর শরীর প্রকৃতপক্ষে নতুন সজীবতা লাভ করে।
রোজা একই সাথে দেহে রোগ প্রতিষেধক ও প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। রোজা পালনের ফলে দেহে রোগ জীবাণুবর্ধক জীর্ণ অন্ত্রগুলো ধ্বংস হয়, ইউরিক এসিড বাধাপ্রাপ্ত হয়। দেহে ইউরিক এসিডের মাত্রা বৃদ্ধি পেলে বিভিন্ন প্রকার নার্ভ সংক্রান্ত রোগ বেড়ে যায়। রোজাদারের শরীরের পানির পরিমাণ হ্রাস পাওয়ার ফলে চর্মরোগ বৃদ্ধি পায় না।
আধুনিক যুগের চিকিৎসা বিজ্ঞানে রোজার ব্যবহারিক তাৎপর্য উপলব্ধি করেই জার্মান, সুইজারল্যান্ড প্রভৃতি দেশে ব্যবস্থাপত্রে রোযার কথা বলা হয়।
ডা. জুয়েলস এমডি বলেছেন, ‘‘যখনই একবেলা খাওয়া বন্ধ থাকে, তখনই দেহ সেই মুহূর্তটিকে রোগমুক্তির সাধনায় নিয়োজিত করে।’’ ডাঃ এ, এম গ্রিমী বলেন, ‘‘রোজার সামগ্রিক প্রভাব মানব স্বাস্থ্যের উপর অটুটভাবে প্রতিফলিত হয়ে থাকে এবং রোজার মাধ্যমে শরীরের বিশেষ বিশেষ অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলো যথেষ্ট শক্তিশালী হয়ে ওঠে।’’ বিখ্যাত মনোবিজ্ঞানী সিগমন্ড নারায়াড বলেন, ‘রোজা মনস্থাত্তি¡ক ও মস্তিষ্ক রোগ নির্মূল করে দেয়। মানবদেহের আবর্তন-বিবর্তন আছে। কিন্তু রোজাদার ব্যক্তির শরীর বারংবার বাহ্যিক চাপ গ্রহণ করার ক্ষমতা অর্জন করে। রোজাদার ব্যক্তি দৈহিক খিচুনী এবং মানসিক অস্থিরতার মুখোমুখি হয় না।’’ ডাঃ আর, ক্যাম ফোর্ডে মতে: ‘‘রোজা হচ্ছে পরিপাক শক্তির শ্রেষ্ঠ সাহায্যকারী।’’
ডাঃ বেন কিম তাঁর এক প্রবন্ধে বেশ কিছু রোগের ক্ষেত্রে উপবাসকে চিকিৎসা হিসেবে গ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে উচ্চ রক্তচাপ, শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহ (হাঁপানী), দীর্ঘদিনের মাথাব্যথা, অন্ত্রনালীর প্রদাহ, ক্ষতিকর নয় এমন টিউমার ইত্যাদি। এসব ক্ষেত্রে তিনি বলেন, উপবাসকালে শরীরের যেসব অংশে প্রদাহ জনিত ঘা হয়েছে তা পূরণ এবং সুগঠিত হতে পর্যাপ্ত সময় পেয়ে থাকে। বিশেষত খাদ্যনালী পর্যাপ্ত বিশ্রাম পাওয়াতে তার গায়ে ক্ষয়ে যাওয়া টিস্যু পুনরায় তৈরি হতে পারে। প্রখ্যাত চিকিৎসক ডাঃ জন ফারম্যান এক প্রবন্ধে সুস্বাস্থ্য রক্ষায় উপবাস এবং খাবার গ্রহণের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে উপবাসের স্বপক্ষে মত দিয়েছেন।
বাংলাদেশের জাতীয় অধ্যাপক ডাঃ নূরুল ইসলাম বলেছেন, ‘‘রোজা মানুষের দেহে কোন ক্ষতি করে না। ইসলামে এমন কোন বিধান নেই, যা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। গ্যাষ্ট্রিক ও আলসার এর রোগীদের রোজা নিয়ে যে ভীতি আছে তা ঠিক নয়। কারণ রোজায় এসব রোগের কোন ক্ষতি হয় না বরং উপকার হয়। রমযান মানুষকে সংযমী ও নিয়মবদ্ধভাবে গড়ে তুলে। (চলবে)

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোজা


আরও
আরও পড়ুন