Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইনকিলাবের করোনা জয়ী খলিলের প্লাজমা দিয়ে সিলেট প্লাজমা থেরাপি শুরু

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৮ জুন, ২০২০, ১২:০৮ পিএম

করোনা বিজয়ী দৈনিক ইনকিলাবের স্টাফ রিপোর্টার খলিলুর রহমান নিজের প্লাজমা আরেকজন আক্রান্ত রোগীকে প্রদান করেছেন। বুধবার সিলেটে করোনা চিকিৎসার একমাত্র ‘শহীদ ডা: শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে’ তার প্লাজমা প্রয়োগ করা হয় ওই রোগীকে । এর মধ্যে দিয়ে হাসপাতালে প্রথমবারের মতো কোনো রোগীকে প্রদান করা হয়েছে প্লাজমা । দৈনিক ইনকিলাবের স্টাফ রিপোর্টার খলিলুর রহমান গত ২২ এপ্রিল করোনায় আক্রান্ত হন। পরে রাজধানীর মুগদা জেনালের হাসপাতালে ১৯ দিন চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হন তিনি। পরে আরো ১৪ দিন নিজ বাড়িতে আইসলোশনে ছিলেন। পরবর্তী গত ৭ জুন সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে গিয়ে আবার নমুনা দেন। ১৬ জুন দ্বিতীয়বারের মত নেগেভিট রিপোর্ট আসে। পরে বুধবার প্লাজমা দিয়েছেন তিনি । জানা গেছে, নগরীর খরাদিপাড়ার এক ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়ে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তার রক্তের গ্রুপ আর সাংবাদিক খলিলের রক্তের গ্রুপ একই। এজন্য সুস্থ হওয়া খলিল তাকে প্লাজমা প্রদান করেছেন। নগরীর আখালিয়াস্থ মাউন্ট এডোরা হাসপাতালে খলিলের শরীর থেকে প্লাজমা সংগ্রহ করা হয়। পরে সে প্লাজমা শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে ভর্তি থাকা ওই রোগীর শরীরে দেওয়া হয়েছে। সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত আরএমও) জন্মেজয় দত্ত জানান, কোভিড আক্রান্ত থেকে সেরে ওঠা খলিলুর রহমানের শরীর থেকে প্লাজমা সংগ্রহ করা হয়। 'বি পজেটিভ' গ্রুপ রক্তের প্লাজমা দেওয়া খলিল সিলেটের বাসিন্দা হলেও চাকরি সূত্রে ঢাকায় থাকেন তিনি। ঢাকায় থাকাকালে কোভিডে আক্রান্ত হন তিনি । প্রায় চার সপ্তাহ আগে ঢাকার মুগদা জেনারেল হাসপাতালে করোনা চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হন তিনি। তাঁর শরীর থেকে মাউন্ট এডোরা হাসপাতালের সহায়তায় সংগ্রহ করা হয় প্লাজমা ।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৮ জুন ওই নারীর করোনা শনাক্ত হন। পরে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। মুমূর্ষু অবস্থায় ছিলেন তিনি। হাসপাতালের চিকিৎসক জানান, প্লাজমা সংগ্রহের জন্য সরঞ্জাম প্রয়োজন। তবে প্লাজমা সংগ্রহের সরঞ্জাম নেই শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে। শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আরএমও জন্মেজয় দত্ত বলেন, আক্রান্ত নারীর পরিবার প্লাজমাদাতা জোগাড় করেছেন। আমরা প্রথমবারের মতো আক্রান্ত কারও শরীরে প্লাজমা প্রয়োগ করলাম। ওই নারীর শারীরিক অবস্থার এখন অনেকটা উন্নতি হয়েছে। প্লাজমাদাতার শরীর থেকে সংগ্রহ করা যায় দুই ব্যাগ প্লাজমা। খলিলুর রহমানের শরীর থেকে দুই ব্যাগ প্লাজমা সংগ্রহ করা হয়েছে। এক ব্যাগ আক্রান্ত নারীকে প্রয়োগ করার পর অন্যটি সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে। জন্মেজয় দত্ত আরো বলেন, এখন থেকে প্লাজমাদাতা পাওয়া গেলে ও রোগীদের প্রয়োজন হলে প্লাজমা থেরাপি প্রয়োগ অব্যাহত থাকবে।
প্লাজমা প্রদান প্রসঙ্গে সাংবাদিক খলিলুর রহমান জানান, বলেন, ‘আল্লাহর রহমতে সুস্থ হয়েছি আমি । এখন আমার প্লাজমা দিয়ে যদি অন্য আরেকজন সুস্থ হয়, সেটা আমার জন্য আনন্দের হবে। আর মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে তো দাঁড়াতেই হবে।’
মাউন্ট এডোরা হাসপাতালের কনসালটেন্ট ও রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘কেউ ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হলে তার শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। যা এ ভাইরাসের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে। এই অ্যান্টিবডি রক্তের প্লাজমাতে বিদ্যমান থাকে।’ তিনি বলেন, ‘আক্রান্ত ব্যক্তি পরিপূর্ণ ভালো (জঞ-চঈজ ঘবমধঃরাব) হওয়ার ১৪ দিন পর তার শরীর হতে প্লাজমা সংগ্রহ করা যায়। একজন করোনা থেকে সুস্থ হওয়া ব্যক্তি সপ্তাহে দুই বার প্লাজমা দিতে পারবেন। এতে প্লাজমাদাতার কোন শরীরিক ক্ষতির সম্ভাবনা নেই এবং স্বাভাবিক খাবার গ্রহণের মাধ্যমেই মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যেই এ ঘাটতি পূরণ হয়ে যায়। সিলেট মাউন্ট এডোরা হাসপাতালে আইসিইউ ইনচার্জ ডা. সৌরভ দেব রাজ সাংবাদিক খলিলুর রহমানের শরীর থেকে প্লাজমা সংগ্রহের দায়িত্বে ছিলেন। তিনি বলেন, আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে ২০০ থেকে ৪০ মিলি প্লাজমা প্রদান করা যায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ