বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
রাজবাড়ী গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নে এবার পদ্মা নদীর ব্যাপকহারে ভাঙন শুরু হয়ে গেছে, গত কয়েক বছর ধরে চলছে পদ্মার তান্ডব। ইতোমধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ গ্রামের পর গ্রাম, ফসলী জমি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নদীতে বিলীন হয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে কয়েক হাজার পরিবার। শুধু গতবারের ভাঙনেই গৃহহারা হয়েছেন ১২শ' পরিবার।
ভাঙন ঠেকাতে অনেক আকুতি, মানববন্ধন, স্মারকলিপি পেশসহ নানা কর্মসূচি পালন করা হলেও কার্যত তাতে কোনো কাজ হয়নি।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, নদী ভাঙন হতে শুধুমাত্র দৌলতদিয়া ফেরিঘাটগুলোকে রক্ষা করতে ঘাট এলাকায় বিআইডব্লিউটিএ’র তত্ত্বাবধানে জিও ব্যাগ ফেলানোর কাজ করছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এর বাইরে ঘাটের উজানে নদীতে বিলীন হওয়ার পর অবশিষ্ট থাকা দেবগ্রাম ইউনিয়নের মুন্সীপাড়া কাওয়ালজানি ও মধ্য কাওয়ালজানি পাড়া, দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ১নং ব্যাপারী পাড়া, সাহাজদ্দিন ব্যাপারী পাড়া, লালু মন্ডল পাড়া, নতুন পাড়া, ফেরি ঘাটের ভাটিতে বাইরের চরের সাত্তার ফকির পাড়া এবং ঘাট এলাকার সিদ্দিক কাজীর পাড়া বড় মসজিদ পাড়া ও সাহাদত মেম্বার পাড়ার অন্তত ১ হাজার পরিবার এখনো প্রচন্ড ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। স্থানীয়দের আশঙ্কা এবারের ভাঙনে এগ্রামগুলো বিলীন হয়ে যাবে। সেই ক্ষেত্রে শত চেষ্টা করেও জিও ব্যাগ ফেলে লঞ্চ ও ফেরিঘাটকে রক্ষা করা যাবে না।
দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ১নং ব্যাপারী পাড়ার বাসিন্দা বাদল মন্ডল (৮০) বলেন, গতবারের ভাঙনে আমাদের এ গ্রামের বেশিরভাগ অংশ বিলীন হয়ে গেছে। নদী আমার বাড়ি থেকে অল্প কয়েক গজ দূরে আছে। ভাঙন শুরু হওয়া মাত্রই আর এখানে থাকতে পারবো না। এ অবস্থায় গত কয়েকদিনে নদীর পারে থাকা ১৪-১৫টি পরিবার তাদের বাড়ি ঘর ভেঙে অন্যত্র চলে গেছে। আরো অনেকেই যাওয়ার জন্য বাড়ি ঘর ভাঙতে শুরু করেছে। কিন্তু আমার যাওয়ার মতো কোনো ব্যবস্থা নেই। এই ভিটাতেই খেয়ে না খেয়ে পড়ে আছি।
৩নং ওয়ার্ডের শাহিন বলেন, গতবার আমার বাড়ি ঘর নদীতে বিলিন হয়ে গেছে, একটু ফসলি জমি ছিল তাও এবার নদীতে চলে গেলো। এখন আমার খেয়ে না খেয়ে জীবন কাটাতে হবে।
দেবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম জানান, নদী ভাঙনে তার ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকা ইতোমধ্যে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। এবারো ২, ৪ ও ৫নং ওয়ার্ডের আঙ্শিক এলাকা হুমকির মুখে রয়েছে। আমরা বহুবার নদী ভাঙন রোধে স্থানীয় এমপি, প্রশাসন ও সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আবেদন করেছি। কিন্তু কোনো ফল পাইনি। ভরা বন্যার সময় যখন ভাঙনের তান্ডব শুরু হয় তখন মানুষকে শান্তনা দেয়ার জন্য শুধুমাত্র কিছু জিও ব্যাগ ফেলা হয়। তাতে অর্থের অপচয় ছাড়া আর কিছুই হচ্ছে না ।
এ ব্যাপারে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবায়েত হায়াত শিপলু জানান, গত বছরে ভয়াবহ নদী ভাঙনের শিকার হয়ে ১২শ' এর অধিক পরিবার সর্বশান্ত হন। এবারো চরম ঝুঁঁকির মধ্যে রয়েছে দৌলতদিয়া লঞ্চ ও ফেরিঘাটসহ অন্তত ১ হাজার পরিবার। ঘাট এলাকায় বিআইডব্লিউটিএ’র তত্ত্বাবধানে জিও ব্যাগ ফেলার কাজ চলছে। এর বাইরে ঘাট থেকে উজানে সাড়ে ৪ কিমি. এলাকাকে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করে জরুরি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সরকারের উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।