Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পটুয়াখালীতে তিনদিনেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৮৩ থেকে ১৫৬

পটুয়াখালী জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৩ জুন, ২০২০, ৭:০৬ পিএম

তিনদিন আগে যেখানে পটুয়াখালীতে ৮৩ জন করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছিলেন,তিনদিন পরে এখন এ সংখ্যা দ্বিগুনের কাছাকাছি ১৫৬ তে পৌছেছে। যতই দিন যাচ্ছে ততই বাড়ছে জেলায় করোনা পজেটিভ সনাক্তের সংখ্যা যা রীতিমত আতংকের সৃষ্টি করেছে পটুয়াখালী জেলা বাসীকে। আক্রান্ত ব্যক্তিকে শনাক্তকরন পক্রিয়ার বিলম্বতার কারনে প্রতিদিনই নতুন রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।পাশাপাশি প্রতিদিনই বাড়ছে মৃতের সংখ্যা ।
এদিকে পটুয়াখালীর ১৮ লক্ষাধিক জনগনের স্বার্থে অবিলম্বে পটুয়াখালীতে একটি করোনা সনাক্তকরন ল্যাবের দাবীতে বর্তমান পরিস্থিতীতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাবে জনমত গড়ে তুলে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষনে বিভিন্ন মুখী কার্যক্রম শুরু করেছে জেলাবাসী ।
পটুয়াখালী -১ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট মো: শাহজাহান মিয়া গত ৭ জুন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব বরাবরে পটুয়াখালীতে পিসিআর ল্যাব স্থাপনের অনুরোধ জানিয়ে ডিও লেটার প্রদান করেছেন। এ ছাড়াও পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসকও পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের সুপারের অনুরোধপত্রের অলোকে সেবা বিভাগের সচিব বরাবরে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পিসিআর ল্যাব স্থাপনের দাবী জানিয়ে গত ৮ জুন অনুরোধ পত্র প্রদান করেছেন।
এ দিকে পটুয়াখালী জেলায় করোনা সনাক্ত করন রিপোর্ট প্রাপ্তীতে বিলম্বতার কারনে জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করেছেন জেলার সুশীলসমাজ,রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সহ সাধারন মানুষ।
একটি পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে জেলায় প্রাপ্ত রিপোর্র্টের অধিকাংশই আসতে ৫ থেকে ৭ দিন সময় লেগে যাচ্ছে।যার ফলে নমুনা প্রদানকারী অনেক ব্যাক্তির মধ্যে তেমন বড় ধরনের কোন উপসর্গ দেখা না দেয়ায় নমুনা প্রদানের পরে রিপোর্ট আসতে বিলম্ব করায় পরিবার সহ সমাজে বিভিন্ন জায়গায় স্বাভাবিক কাজকর্ম করে যাচ্ছেন তারা। পরবির্ততে যখন ১ সপ্তাহ পরে রিপোর্ট আসে পজেটিভ,তখন তার সংস্পর্শে আসা লোকজন পরে যান আতংকের মধ্যে,তখন বাধ্য হয়ে অনেক ব্যাক্তির নমুনা সংগ্রহ করতে হয় ।
বরিশাল বিভাগের ৬ টি জেলার একমাত্র ল্যাব বরিশাল মেডিক্যাল কলেজের ল্যাবের সীমাবদ্ধতার কারনে সেখান থেকে অনেক সময় টেস্ট করানো সম্ভব হয়না ,তখন পাঠানো হয় ঢাকায় ,যার ফলে রিপোর্ট আসতে সময় লেগে যাচ্ছে।গত ১০ জুন রাতে পটুয়াখালী জেলায় যে ২৯ জন করোনা পজেটিভ সনাক্তের রিপোর্ট বরিশাল মেডিক্যাল কলেজের ল্যাব থেকে চিহ্নিত হয়ে পাঠানো হয়েছে,তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয় পটুয়াখালী থেকে ৩ জুন।এক সপ্তাহ পরে রিপোর্ট পটুয়াখালীতে আসে।যার মধ্যে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আউট ডোরে রুগী দেখেন একজন মহিলা উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিক্যাল অফিসার তিনি বিগত ১ সপ্তাহ যাবৎ হাসপাতালে ডিউটি করেছেন বলে নিশ্চীত করেছেন পটুয়াখালী হাসপাতালের আরএমএও।তিনি বলেন রিপোর্টের এ বিলম্বতার কারনে সেবা দাতা ও গ্রহীতা সহ সবাই হুমকীর মধ্যে পড়ে যাচ্ছি।
এদিকে পটুয়াখালীর বিভিন্ন সামাজিক ,রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ পটুয়াখালীতে একটি পূর্নাঙ্গ আরটি-পিসিআর ল্যাবের দাবী জোড়েশেড়ে শুরু করেছেন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে।
পটুয়াখালীতে করোনা টেস্টের ল্যাব চাই নামে একটি ফেইসবুক ভিক্তিক সংগঠনের উদ্যোক্তা এ্যাডভোকেট মুশফিকুর রহমান তুহিন বলেন,পটুয়াখালীতে অবিলম্বে একটি করোনা সনাক্তকরন ল্যাবের দাবীতে তারা ফেইসবুকের মাধ্যমে সংগঠিত হয়েছেন।গত তিনদিনে যেভাবে সংক্রমন বৃদ্ধি পেয়েছে সেটা রীতিমত উদ্বেগজনক।
ফেইসবুক ভিক্তিক সামাজিক অন্দোলনে অংশগ্রহনকারী সংগঠন হ্যাপী ক্লাবের এ্যাডমিন এ্যাডভোকেট তৌফিক হোসেন মুন্না বলেন, তিনি বলেন পুরাতন ১৯ টি জেলার ১টি পটুয়াখালী,যেখানে পটুয়াখালীতে একটি বিজ্ঞান ওপ্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থাকা সত্বেও কেন ল্যাব স্থাপন করা যাচ্ছেনা ,এটা এখন সময়ের দাবী যেখানেই হোক পটুয়াখালীকে ঝুকিমুক্ত করতে অতি দ্রুত একটি ল্যাব স্থাপনের দাবীতে সকলের সাথে কাজ করতে তারা একমত।
এ বিষয়ে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি পটুয়াখালী জেলা শাখার সভাপিত কমরেড মোতালেব মোল্লা বলেন,করোনা সনাক্ত করন ল্যাবের অভাবে টেস্টের রিপোর্ট পেতে বিলম্বতার কারনে রোগ ছড়াচ্ছে। আমাদের পরিকল্পনায় রয়েছে পটুয়াখালীতে দ্রুত ল্যাব স্থাপনের বিষয়ে স্বাস্থ্য বিধী মেনে অবস্থান কর্মসূচীর।
পটুয়াখালীতে অতিদ্রুত করোনা সনাক্ত করন ল্যাব স্থাপনের মাধ্যমে সংক্রমন প্রতিরোধ সহ জেলা পর্যায়ে হাসপাতাল গুলিতে আইসিইউ বেড স্থাপনের দাবী জানিয়েছেন যুদ্ধকালীন পটুয়াখালীর ডেপুটি কমান্ডার,জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান শওকত।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি কাজী আলমগীর বলেন ,আমি ইতোমধ্যে এ বিষয়ে সামাজিক যোগোযোগ মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকষর্ণের জন্য কার্যক্রম শুরু করেছি।তিন বলেন অতিদ্রুত পটুয়াখালীতে একটি করোনা সনাক্তকরন ল্যাব চালু করা গেলে জেলাবাসীকে এ দূর্যোগের হাত থেকে রক্ষা করতে তা বড় ভুমিকা পালন করবে। এছাড়া পৌর এলাকার যেসব এলাকায় করোনা পজেটিভ সনাক্ত হচ্ছে, কেন্দ্রের মত হটস্পট চিহ্নিত করে সেসব এলাকায় প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেয়ার দ্রুত দাবী জানান জেলা প্রশাসনের কাছে।
পটুয়াখালীর সিভিল সার্জন ডা: মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, পটুয়াখালীতে করোনা সনাক্তকরনের জন্য ল্যাব প্রতিষ্টা জরুরী প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।

পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা হাসপাতালের সুপার ডা: এম এ মতিন বলেন ইতোমধ্যে পটুয়াখালী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে একটি করোনা সনাক্ত করন পিসি আর ল্যাব স্থাপনের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের বিষয়ে পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসককে তিনি একটি চিঠি দিয়েছেন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ