বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা। উপকার করতেন সবার। ছিলেন এলাকার গর্ব। কিন্তু করোনার কারণে বদলে গেলো দৃশ্যপট। যাকে নিয়ে সবাই গর্ব করতো সেই মানুষটির মৃত্যুর পর তার লাশ দেখতেও কেউ এলো না। বরং লাশ দাহ করতে দিলো না। কারণ তিনি যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। সেই প্রিয় মানুষটাই সবার চক্ষুশূলে পরিণত হলো। এমনকি তার দাহে আপনজন বলতে কেউ ছিলেন না।
জানা যায়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে কর অঞ্চল-৩ এর উপ-কর কমিশনার শুধাংশ সাহার মৃত্যুর পর লাশ তার গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জে দাহ করতে স্বজনদের বাধা দেয়ায় প্রশাসনের সহায়তায় তার শ্বশুর বাড়িতে দাহ করা হয়েছে।
ঘাটাইলের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার সরকার নিজে উপস্থিত থেকে তার লাশ দাহ করেছেন বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শুধাংশ সাহার স্ত্রী মানসী দাশ জানান, তার স্বামী করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত সোমবার (৮ জুন) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করে। তার গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি উপজেলার গাড়ামাসি গ্রামে। মৃত্যুর পর নিজ বাড়িতে শুধাংশের মৃতদেহ দাহ করার কথা ছিল। কিন্তু করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করায় গ্রামের লোকজন ও তার স্বজনরা বিরোধীতা করায় সেখানে দাহ করা সম্ভব হয়নি। পরে বাধ্য হয়ে আমার বাবার বাড়ি (শুধাংশের শ্বশুর বাড়ি) টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার আনেহলা ইউনিয়নের পাড়াগ্রামে তার লাশ নিয়ে যায়। সেখানেও দাহ না করার জন্য গ্রামের লোকজন রাজি ছিল না। পরে উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় তার মৃতদেহ পারিবারিক শ্মশানঘাটে দাহ করা হয়।
তিনি আরো বলেন, আমি ও আমাদের ৬ বছরের মেয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ঢাকার বাসাতেই চিকিৎসা নিচ্ছি। করোনা আক্রান্ত হওয়ায় বাসা লকডাউন করা হয়েছে। বাসা থেকে বের হতে দিচ্ছে না। মৃত্যুকালে আমার স্বামীর কাছে যেতে পারি নাই। তার শেষকৃত্য দেখতে পারি নাই। মেয়েও তার বাবাকে শেষ দেখা দেখতে পেলো না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার সরকার বলেন, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, পুলিশ প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের লোকজন নিয়ে আমি নিজে উপস্থিত থেকে গতকাল মঙ্গলবার (৯ জুন) বিকেলে উপজেলার পাড়াগ্রামে শুধাংশ সাহাকে শ্বশুরবাড়ির পারিবারিক শ্মশানঘাটে শুধাংশ সাহার লাশ দাহ করি। তার স্ত্রী ও সন্তান করোনা আক্রান্ত থাকায় আসতে পারেনি। আর দাহে পরিবারের কেউ উপস্থিত ছিল না।
তিনি উপজেলা প্রশাসনের ফেসবুক ওয়ালে আরো লিখেছেন, ‘কিছুদিন আগেও যে ছেলেটাকে নিয়ে এলাকাবাসী গর্ব করত? যার পরিচয় দিতে সবাই আত্মীয়-স্বজন, ভাই বোন, বন্ধু বান্ধব, প্রতিবেশী গর্ববোধ করত? পরক্ষণেই সেই আদরের ছেলেটি চক্ষুশূল হয়ে গেল?
কি তার অপরাধ? তার অপরাধ একটাই সে বৈশ্বিক মহামারীর শিকার। সে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরন করেছে!
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।