মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বিশ্বে করোনা মহামারীতে প্রাণহানির দিক থেকে শীর্ষস্থানে অবস্থান করছে আমেরিকা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ট্রাম্প প্রশাসনের ব্যর্থতা চরমে উঠেছে। করোনার বৈশ্বিক সঙ্কটের মধ্যেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে এনেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই সঙ্কটের মধ্যেই পুলিশের হাতে নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েড নিহত হওয়া এবং এ বিষয়ে বিভাজন সৃষ্টিকারী উস্কানিমূলক প্রতিক্রিয়া দেয়ার প্রতিবাদে ট্রাম্প ও তার প্রশাসনের বিরুদ্ধে আমেরিকা জুড়ে চলছে তুমুল বিক্ষোভ।
এ আন্দোলন ইউরোপ ও অস্ট্রেলিয়াতেও ছড়িয়ে পড়েছে। ৩২ দেশে পরিচালিত পিউ রিসার্চের এ সংক্রান্ত এক জরিপে দেখা গেছে, ট্রাম্পের ওপর কোনো আস্থা নেই বিশ্বের শতকরা ৬৪ শতাংশ মানুষের। এর অর্থ হচ্ছে, ট্রাম্পের বর্ণবাদী নীতিতে বিশ্বজনীন গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর সমর্থন নেই।
আমেরিকার অভ্যন্তরীণ নির্বাচনী জরিপেও সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের গ্রহণযোগ্যতা। গেল ৭ জুন এনবিসি এবং ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল আয়োজিত এক জরিপে দেখা গেছে, আমেরিকায় প্রতি ১০ নাগরিকের মধ্যে ৮ জনই মনে করেন, দেশটি নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে উঠেছে এবং মাত্র ১৫ শতাংশ মনে করে সবকিছু নিয়ন্ত্রণে আছে। ডেট্রয়েট ফ্রি প্রেসের সাম্প্রতিক জরিপ অনুযায়ী, মিশিগানে ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেনের চেয়ে ১২ শতাংশ পিছিয়ে আছেন ট্রাম্প। উইসকনসিন, অ্যারিজোনা, ওহাইও এবং টেক্সাসেও জনমত জরিপে ট্রাম্প বাইডেনের চেয়ে পিছিয়ে আছেন বলে দেখা গেছে।
এরমধ্যে, ট্রাম্পের বর্ণবাদী নীতি ও ব্যর্থ নেতৃত্বের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কঠোর সমালোচনা শুরু করেছেন রিপাবলিকান সদস্যরা। সাবেক রিপাবলিকান পররাষ্ট্রমন্ত্রী কলিন পাওয়েল জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসাবে তিনি ডেমোক্রেটিক দলীয় প্রার্থী জো বাইডেনকে সমর্থন দেবেন। নিজ দল রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন করবেন না সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডবিøউ বুশ এবং সেইসাথে জেব বুশ ও মিট রমনিও।
বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, আগামী ৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন সম্ভাব্য ভরাডুবি ও সার্বিক পরিস্থিতির চাপ ঠেকাতে মরিয়া ট্রাম্প তড়িঘড়ি একটি অনিরাপদ, অকার্যকর ও অপ্রমানিত করোনা ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিতে পারেন, যা নভেম্বরের নির্বাচনের প্রাক্কালে অক্টোবরের নির্বাচনী চমক হিসাবে কাজ করবে এবং এই সঙ্কটকালীন মুহূর্তে জনগণের মধ্যে আশার সঞ্চার করবে ও নাটকীয়ভাবে পরিস্থিতির মোড় ঘুরিয়ে দেবে।
ধারণা করা হচ্ছে, ট্রাম্প ভ্যাকসিনকে তার ট্রাম্প কার্ড হিসেবে ব্যবহার করে করোনার বিরুদ্ধে বিজয় ঘোষণা করবেন এবং দেশটির অর্থনীতি দ্রæত পুনরুদ্ধারের জন্য অবিলম্বে সমস্ত ব্যবসা আবার চালু করে দেয়ার কথা বলবেন। জরুরি ভ্যাকসিনের অনুমোদন ট্রাম্পকে সদম্ভে সংবাদ সম্মেলন করার এবং বিজয় ঘোষণার সুবর্ণ সুযোগ এনে দেবে এবং সেই প্রহসনমূলক ভ্যাকসিন রোগ বা সংক্রমণ রোধ করতে পারবে, তা প্রমাণ ছাড়াই লাখ লাখ বিতরণ করা হতে পারে।
এদিকে, করোনাভাইরাসের কারণে বেড়েছে বাড়ি বসে ইমেইলে ভোট দেয়ার প্রচেষ্টা। কিন্তু ট্রাম্প বারবার বলছেন, অনলাইন ভোট পদ্ধতি ভোট জালিয়াতদের উদ্বুদ্ধ এবং ডেমোক্র্যাটদের উপকার করবে। যদিও গত নির্বাচনে ট্রাম্পকে জেতানোর জন্য ভোট জালিয়াতির অভিযোগ ট্রাম্পের কথিত মিত্র রাশিয়ার প্রতিই ছিল।
তবে, এ সংক্রান্ত স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, এটি একটি ভিত্তিহীন দাবি। আমেরিকার ৫টি রাজ্যের বহু বছর ধরে ব্যবহার করা ইমেইল ভোটে খুব কমই জালিয়াতি হয়েছে এবং ভোট দিয়ে কোনো পক্ষই আলাদা সুবিধা পায়নি। এক্ষেত্রে বরং উভয়ের পক্ষে ভোটার বাড়িয়ে তুলতে পারে কার্যক্রমটি। তবে, ট্রাম্পের সমালোচকরা অভিযোগ করেছেন, নির্বাচনে হেরে যাওয়ার আশঙ্কায় ফলাফল চ্যালেঞ্জ করার জন্য এটি ট্রাম্পের পূর্ব প্রস্তুতির অংশ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।