বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
দক্ষিণাঞ্চলে করোনা সংক্রমনে আরো ১ জনের মৃত্যু সহ নতুন করে ৭০জন আক্রান্তের মধ্যে দিয়ে এ সংখ্যা হাজার অতিক্রম করার মাধ্যমে আরো ভয়াবহ পরিস্থিতির জানান দিচ্ছে। মঙ্গলবার দুপুরের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় পটুয়াখালীর কলাপাড়ার নয়াপট্টি এলাকার ৩০ বছর বয়সী এক যুবকের মৃত্যুর মধ্যে দিয়ে জেলাটিতে করেনা সংক্রমনে ৫ জনের মৃত্যু হল। ফলে বরিশাল বিভাগের মৃত্যুর মিছিলে সংখ্যা ২১-এ দাড়াল। অপরদিকে বরিশালের প্রথম শ্রেণীর বেসরকারী রাহাত-আনোয়ার হাসপাতালের প্রতিষ্ঠঠতা ডা. আনোয়ার হোসেন করেনা সংক্রমিত হয়ে গত রাতে ঢাকার একটি হাসপাতালে মরা গেছেন। নিজ হাসপাতালে রোগী দেখার সময় তার তীব্র শাসকষ্ট শুরু হলে সোমবার দুপুরে দ্রুত এয়ার এ্যম্বুলেন্সে ঢাকায় নেয়ার পরে রাত ৩টায় তার মৃত্যু ঘটে।
তবে বরিশাল মহানগরীর পরিস্থিতি এখনো ভয়াবহ হলেও স্বাস্থ্য বিভাগের সুপারিশের আলোকে লক ডাউন করার কোন উদ্যোগ নেই। গোটা মহানগরী চরম স্বাস্থ্য ঝুকিতে থাকলেও কারো কোন হেলদোল নেই। উল্লেখিত ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণাঞ্চলে মোট আক্রান্ত ৭০ জনের মধ্যে বরিশাল জেলার সংখ্যাটিই ৫৭। যার মধ্যে মহানগরীতে আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৫৩। আর আক্রান্তের এ সংখ্যার মধ্যে ২০ জনই মহানগর পুলিশ সহ বিভিন্ন আইনÑশৃংখলা বাহিনীর। এছাড়া চিকিৎসক ও চিকিৎসা কর্মীও রয়েছেন আরো অন্তত ৮ জন। নগরীর প্রতিটি এলাকার ঘরে ঘরেই কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। তবে এসময়ে নতুন করে আরো ৬১ জন সহ মোট ২৯৩ জন করেনা সংক্রমিত রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়েছেন বলে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে। ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়াদের মধ্যে বরিশালে ৪৪, ঝালকাঠীতে ৯, ভোলাতে চার ও পিরোজপুরে ৩জন রয়েছে।
বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি জেলা হাসপাতাল-এর আইসোলেশন ওয়ার্ড থেকে গত ২৪ ঘন্টায় ১৮ জনকে ছাড়পত্র দেয়ার পরেও চিকিৎসাধীন রয়েছে ১৮ জন। অপরদিকে শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ড থেকে গত ২৪ ঘন্টায় ৫ জনকে ছাড়পত্র দেয়ার পরেও চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা এযাবাতকালের সর্বোচ্চ ৩৪ জনে উন্নীত হয়েছে। এ হাসপাতালটির আইসোলেশন ও করেনা ওয়ার্ডে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার ৩১৯ জন রোগীকে ভর্তি করার পরে ১০৭ জনের দেহে করেনা ভাাইরাস সনাক্ত হয়েছে। চিকিৎসার পরে ৫৬ জন সুস্থ্য হয়ে ঘরে ফিরেছেন। অপরদিকে করেনা সংক্রমিত হয়ে মারা গেছেন দশজন। অপরদিকে হাসপাতালটির আইসালেশন ওয়ার্ডে ভর্তিকৃত ২১২ জনের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৪৭ জনের । দেড়শ জনকে ছাড়পত্র ও অন্যত্র রেফার করা হয়েছে বলে জানা গেছে। গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতালটিতে ভর্তিকৃত ১২ জনের রক্ত পরিক্ষায় ৬জনের দেহে করেনা ভাইরাস সনাক্ত হয়েছে।
দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি জেলার বিভিন্ন সরকারী হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত যে মোট ৮৮৪ জনকে ভর্তি করা হয়েছে তার মধ্যে ৩৯৮ জনই ছাড়পত্র লাভ করেছেন বলে জানা গেছে। তবে দক্ষিণাঞ্চলের সরকারী হাসপাতালে করেনা সংক্রমিত রোগী ভর্তির হার এখনো আশাব্যঞ্জক নয়। এ পর্যন্ত আক্রান্ত তালিকভ’ক্ত ১ হজার ৬৪ রোগীর মধ্যে মাত্র ২২৪ জন সরকারী হাসপাতালে করোনা চিকিৎসা সুবিধা গ্রহন করেছেন।
মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলে যে ১ হাজার ৬৪ জন করোনা সংক্রমিত রোগী চিঞ্হিত হয়েছে, তারমধ্যে বরিশালের অবস্থা উদ্বেগজনক। আক্রান্তের সংখ্যা ৬৭৪, মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। এ জেলার আক্রান্তের সিংহভাগই বরিশাল মহানগরীর। মৃত্যু হয়েছে একজনের। ৯০ জন আক্রান্ত ও ৩ জনের মৃত্যু নিয়ে এরপরের অবস্থান পিরোজপুরের। ৮২জন আক্রান্ত ও দুই জনের মৃত্যু নিয়ে ছোট জেলা বরগুনার পরস্থিতিও উদ্বেগজনক। পটুয়াখালীতে আক্রান্ত ৮২ জন হলেও মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। দ্বীপ জেলা ভোলাতে আক্রান্তের সংখ্যা ৭০, মৃত্যু হয়েছে দুই জনের। দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে ছোট জেলা ঝালকাঠীতেও আক্রান্তের সংখ্যা ৬৬,মৃত্যু হয়েছে দু জনের।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।