মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : তুরস্কে সামরিক বাহিনীর একাংশের অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবার পর প্রেসিডেন্ট
রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান প্রথম যে সাক্ষাৎকারটি দেন সেটি ধারণ করে আমেরিকান স্যাটেলাইট টেলিভিশন সিএনএন। অভ্যুত্থান চলার সময় কিভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করা হয়েছে, অভ্যুত্থানের
সাথে জড়িতদের কী ধরনের শাস্তির ব্যবস্থা করা হতে পারে, গণমাধ্যমের ব্যাপারে দৃষ্টিভঙ্গি, ব্যর্থ
অভ্যুত্থানের মূল হোতা হিসেবে চিহ্নিত ফতেহউল্লাহ গুলেনের প্রত্যর্পণের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের
সাথে আলাপ-আলোচনার অগ্রগতি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে তিনি খোলামেলা কথা বলেছেন।
সিএনএন ইন্টারন্যাশনাল’স ‘কানেক্ট দি ওয়ার্ল্ড’-এর উপস্থাপক বেকি
অ্যান্ডারসন এই সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেন।
(পূর্ব প্রকাশের পর)
বেকি অ্যান্ডারসন : কখন হবে? চলতি সপ্তাহেই?
এরদোগান : চলতি সপ্তাহেই। পুরো প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছি।
বেকি অ্যান্ডারসন : মৃত্যুদ- একটি ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। অভ্যুত্থান চেষ্টার প্রেক্ষাপটে লোকজন এ নিয়ে কথা বলছে। আর আপনি বলছেন, জনগণ চাইলে আপনি মৃত্যুদ-াদেশ পুনর্বহালের জন্য সবার সাথে আলোচনা করবেন। আপনি কি এটা সমর্থন করেন? কারণ মৃত্যুদ-ের বিষয়টি গ্রিসে যাওয়া আট সৈন্য এবং যুক্তরাষ্ট্রে গুলেনের সাথেও স্পষ্টভাবে সম্পর্কিত হবে। এ নিয়ে কী ভাবছেন?
এরদোগান : এসব ঘটনার প্রেক্ষাপটে, ২০৮ জন নিহত হওয়ায় নাগরিকেরা তা বলছে। তারা বারবার মৃত্যুদ-াদেশের কথা বলছে। আমার প্রশ্ন হলো, আপনাদের যুক্তরাষ্ট্রে কি মৃত্যুদ-াদেশ নেই? আছে। রাশিয়ায়? আছে। চীনে? আছে। হ্যাঁ, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে নেই। আর আমাদের দেশে, আমাদের প্রশাসনে আগে ছিল। আমরা ইইউর সদস্যপদ লাভের আলোচনার জন্য মৃত্যুদ-াদেশ বিলুপ্ত করেছিলাম। এখন বিষয়টা নিয়ে পার্লামেন্টে আলোচনা হতে পারে। নিশ্চিতভাবেই বলছি, অতীতে আমাদের প্রশাসনই এটা বিলুপ্ত করেছিল। কিন্তু আমরা যেকোনো সময় আগের অবস্থায় ফিরে সেটা পুনর্বহাল করতে পারি। পার্লামেন্ট সিদ্ধান্ত নিলে সেটা বিবেচনায় রাখতে হবে।
বেকি অ্যান্ডারসন : তা হবে বলে কি আপনি মনে করেন?
এরদোগান : হতে পারে। কয়েকটি সন্ত্রাসী ঘটনার পর লোকজন এটা নিয়ে ভাবছে। তারা মনে করছে, এসব সন্ত্রাসীকে মেরে ফেলা উচিত। লোকজন এমনই ভাবছে। তাদের অবস্থান এটাই। তারা এ ছাড়া অন্য কিছু চায় না। অর্থাৎ যাবজ্জীবন বা আজীবন কারাদ-ে সন্তুষ্ট নয়। আমি কেন তাদের সারা জীবন কারাগারে রেখে খাওয়াব? লোকজন এ কথাই বলছে। তারা খুব তাড়াতাড়ি এর অবসান চায়। কারণ লোকজন তাদের স্বজনদের হারিয়েছে, তাদের প্রতিবেশীদের হারিয়েছে, তাদের শিশুদের হারিয়েছে। (অভ্যুত্থান চেষ্টার সময়) ৮০ বছর বয়স্ক, ১৫ বছরের, ২০ বছরের মানুষ (মারা গেছে)। এ কারণে লোকজন খুবই স্পর্শকাতর। এসব অনুরোধের মুখে আমাদের খুবই স্পর্শকাতরভাবে কাজ করতে হচ্ছে। আমি জনগণকে যা বলছি তা হলো, রাষ্ট্রদ্রোহিতার সুস্পষ্ট অপরাধ হয়েছে। আর আপনাদের অনুরোধ আমাদের সরকার কখনো প্রত্যাখ্যান করবে না। তবে সাংবিধানিক ব্যবস্থার আকারে পদক্ষেপ নিতে পার্লামেন্টারি সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এ জন্য নেতাদের বসতে হবে, এ নিয়ে আলোচনা করতে হবে। তারা এ নিয়ে আলোচনায় একমত হলে প্রেসিডেন্ট হিসেবে পার্লামেন্টের যেকোনো সিদ্ধান্ত অনুমোদন করব।
বেকি অ্যান্ডারসন : ইতোমধ্যেই, আমি অনুমান করছি, আপনি এই অভ্যুত্থানের দায়ে আটক হাজার হাজার লোকের জন্য যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করবেন, ঠিক তো?
এরদোগান : অবশ্যই, এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়ে গেছে। তবে এটা শেষ হতে কত সময় লাগবে, জানি না। অবশ্য বিচার বিভাগ এ নিয়ে কাজ করছে। আমাদের বিচার বিভাগের প্রয়াস অবশ্যই প্রশংসনীয়। এই কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে তারা দিন-রাত সারাক্ষণ যেভাবে পরিশ্রম করছে, তাতে কেবল তাদের প্রশংসাই করতে পারি। একই কথা প্রযোজ্য তুর্কি জাতীয় পুলিশের ক্ষেত্রেও। সশস্ত্রবাহিনীর মধ্যে আমাদের এমন লোক রয়েছে, যারা অভ্যুত্থানকারীরা যেভাবে চেয়েছিল, সেভাবে কাজ করতে অস্বীকার করেছিল। তারা অবশ্যই জনগণের সাথে রয়েছে। আমরা পাল্টা-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এই চেষ্টা দমন করতে পেরেছি।
বেকি অ্যান্ডারসন : আমরা যখন আটক ব্যক্তিদের নিয়ে এখানে আলোচনা করছি, তখন, আপনি বুঝতে পারছেন, ইনসারলিক এয়ারবেসে কী ঘটছে; তা আপনি জানেন। আমি জেনেছি, ঠিক আজকে সেখানে নতুন করে নিরাপত্তা অভিযান চলছে। সেখানে ১৫ হাজারের মতো মার্কিন সৈন্য রয়েছে। জেনারেটর বন্ধ হয়ে গেছে। মাঝেমধ্যেই বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। সেখানকার মার্কিন সৈন্যরা কি নিরাপদ? আর ওয়াশিংটনে অনেকে জানতে চাইতে পারেন, কারা করছে এমনটা? সেখানে এখন অনেক সামরিক ব্যক্তি রয়েছেন। ওয়াশিংটন কী কথা বলেছে?
এরদোগান : ওয়াশিংটন জানে, তুরস্কে কার সাথে কথা বলতে হবে। তারা আমাদের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাথে কথা বলেছে। তারা ওই সব স্থানেও কথা বলেছে। তাদের ফোনের জবাব দেয়া হয়েছে। তারা সবসময় সাড়া পেয়েছে। আমাকে বিষয়টা স্পষ্ট করতে দিন, ইনসারলিক নিয়েই কথা বলছি। তবে জেনে রাখুন, তুরস্কের সব ঘাঁটিতেই বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এর দরকার ছিল। আমরা বিদ্যুৎ বন্ধ করে না দিলে ওইসব ঘাঁটি থেকে বিমান উড়তে পারত। আর সন্ত্রাসীদের দখলে থাকা বিমান যদি উড়তে পারে, সেটা জনগণের জন্য এবং জাতির জন্য হবে মারাত্মক হুমকির কারণ। আমরা তা হতে দিতে পারি না। এ কারণেই আমরা এসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। নিশ্চিতভাবেই বলছি, এটা সাময়িক পদক্ষেপ, দ্বিতীয় নির্দেশনার আগ পর্যন্ত। আর দ্বিতীয় নির্দেশনায় অবশ্যই সব স্থানে বিদ্যুৎ চালু হবে। হবেই। তা নিয়ে কারোই কোনো উদ্বেগ বা চিন্তা করার দরকার নেই। এটা গ্রেফ স্বাভাবিক ও যৌক্তিক। যৌক্তিক কৌশল, যৌক্তিক পরিকল্পনায় কাজগুলো করা হচ্ছে। (চলবে)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।