বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণ চলাকালে তেল সমৃদ্ধ দেশ ওমানে লাখ লাখ বাংলাদেশি কর্মী চাকরি হারানোর ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছে। দেশটির রাজধানী মাস্কাটস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের খামখেয়ালি ও চরম উদাসিনতায় প্রবাসী কর্মীরা কনস্যুলেট সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। নতুন পাসপোর্টের জন্য প্রবাসী কর্মীদের মধ্যে চলছে হাহাকার। চার পাঁচ মাস যাবত নতুন পাসপোটের জন্য আবেদন জমা দিয়েও পাসপোর্ট পাচ্ছে না কর্মীরা।
দূতাবাস থেকে নতুন পাসপোর্ট না পাওয়ায় অনেকেরই ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। ওমান সরকার অভিবাসী কর্মীদের ভিসার মেয়াদ বর্ধিতকরণে অনলাইনে আবেদন নিতে শুরু করেছে। কিন্ত পাসপোর্ট না থাকায় অনলাইনে ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য আবেদনও করতে পারছেন না তারা। সরকারি বরাদ্দের ত্রাণও ঘরবন্দি অনেকেরই ভাগ্যে জুটেনি। আজ বৃহস্পতিবার ওমান থেকে একাধিক সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ওমান শাখার সহ সভাপতি মীর আহমদ মিরু আজ বৃহস্পতিবার মাস্কাট থেকে ইনকিলাবকে জানান, গত ১৭ মার্চ দেশটিতে লকডাউন শুরু হওয়ায় প্রবাসীদের সকল প্রকার কাজ-কর্ম বন্ধ। ঘরবন্দি প্রায় ৮ লাখ প্রবাসী কর্মীর কোনো খোঁজ খবর নেয়ার লোকও নেই। প্রতিদিন শত শত অসহায় প্রবাসী কর্মী বাংলাদেশ দূতাবাসে ফোন করেও কাউকে পাচ্ছে না। সবচেয়ে বেশি দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে লক্ষাধিক অবৈধ বাংলাদেশি কর্মী। বিশেষ ব্যবস্থায় জরুরিভিত্তিতে নতুন পাসপোর্ট সরবরাহ ও মেয়াদ উত্তীর্ণ পাসপোর্টের নবায়ন করার সুযোগ না থাকায় লক্ষাধিক প্রবাসী কর্মী চাকরি হারানোর ঝুঁকির মুখে পড়েছেন। তিনি বলেন, প্রবাসী কর্মীরা ভিসার মেয়াদ যথা সময়ে বর্ধিত করতে না পারায় অনেককেই প্রতি মাসে ৪০ রিয়াল করে জরিমান গুনতে হবে। প্রবাসী মিরু অনতিবিলম্বে বিশেষ ব্যবস্থায় দূতাবাস থেকে প্রবাসী কর্মীদের পাসপোর্ট সরবরাহ এবং জরুরি কনস্যুলেট সেবা চালু করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
আজ মাস্কাটস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সেলর মেজর (অব) সুজাউল হকের সাথে একাধিক বার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এদিকে, দেশটিতে প্রবাসী বিশেষজ্ঞ ও পরামর্শকদের কর্মক্ষেত্রের চুক্তির মেয়াদ না বাড়াতে আদেশ দিয়েছেন ওমানের দেওয়ান রয়েল আদালত। টাইমস অব ওমানে এ সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে।
এতে জানানো হয়, গত মাসের শেষের দিকে ওমানের দেওয়ান রয়েল আদালত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। আদেশে পুরো ওমানের সরকারি-বেসরকারি কার্যালয়গুলোতে কর্মরত ৭০ শতাংশ বিদেশি পরামর্শক ও বিশেষজ্ঞের চুক্তি নবায়ন না করতে বলা হয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রমের সুযোগ রাখা হয় আদেশে। আর যাদের চুক্তির মেয়াদ রয়েছে তারা মেয়াদ পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন।
আদেশে বলা হয়, ওমানের সরকারি-বেসরকারি কর্মক্ষেত্রে পরামর্শক ও বিশেষজ্ঞ বা বিশেষ ব্যবস্থাপক পদে কমপক্ষে ৭০ শতাংশ ওমানের নাগরিককে নিয়োগ দিতে হবে।
এ ক্ষেত্রে ২৫ বছর বা তার অধিক সময় কাজ করেছেন এবং শিগগিরি অবসর গ্রহণ করবেন তাদের ক্ষেত্রে কিছুটা শিথিলতা রয়েছে আদেশে। তবে তাদের ক্ষেত্রে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের বেশি সময় না দেয়ার নির্দেশনা রয়েছে। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বিদেশি পরামর্শক ও বিশেষজ্ঞদের সংখ্যা মোট কর্মসংস্থানের ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে। আদেশটি পরিপালন করবে দেশটির রাষ্ট্রীয় নিরীক্ষা সংস্থা।
উল্লেখ্য,১৯৭৬ সাল থেকে গত ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত দেশটিতে ১৫ লাখ ১৩ হাজার ১৭৭ জন কর্মী চাকরি লাভ করে। প্রবাসী কর্মীরা কঠোর পরিশ্রম করে প্রচুর রেমিট্যান্স দেশে পাঠাচ্ছে। গত জানুয়ারি ফেব্রুয়ারি মাসে ওমান থেকে প্রবাসী কর্মীরা ১৮৬ দশমিক ৭৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দেশে পাঠিয়েছে।
বায়রার ইসির অন্যতম সদস্য গোলাম মাওলা রিপন আজ বৃহস্পতিবার ওমানের প্রবাসী বাংলাদেশিদের চাকরি হারানোর ঝুঁকির আশঙ্কা দেখা দেয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, মাস্কাটস্থ দূতাবাস থেকে প্রবাসী কর্মীরা কনস্যুলেট সেবা যথাসময়ে না পেলে তারা যাবে কোথায় ? তিনি অবিলম্বে ওমানে বাংলাদেশি কর্মীদের চাকরির নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে বাস্তবমুখী উদ্যোগ গ্রহণ এবং দূতাবাস থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় নতুন পাসপোর্ট সরবরাহের জোর দাবি জানান। অন্যথায় মধ্যপ্রাচ্যের এ দেশটির শ্রমবাজারে ধস নেমে আসতে পারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।