Inqilab Logo

সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দক্ষিণাঞ্চলে করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত

প্রতিদিনই আক্রান্ত হচ্ছে পুলিশ ও চিকিৎসা কর্মী

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৪ জুন, ২০২০, ১২:৫৯ পিএম

দক্ষিণাঞ্চলে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা অতীতের রেকর্ড অতিক্রম করার পাশাপাশি বরিশাল মহানগরীতে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটল। নগরীর কাজীপাড়া এলাকার নিজ বাসায় ৭৫ বছর বয়সি একজন পুরষের মৃত্যু ঘটেছে করেনা সংক্রমনে। এনিয়ে দক্ষিণাঞ্চলে ১৫ জন কোভিড-১৯ রোগীর মৃত্যু হল। বৃহস্পতিবার দুপুরের পূর্ববর্তি ৪৮ ঘন্টায় দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় নতুন করে করোনা ভাইরাস সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা ছিল দেড়শ। এরমধ্যে বুধবার ৮৬ ও বৃহস্পতিবার দুপুরের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় আরো ৫৭জন আক্রান্ত হয়েছে। বিগত দুদিনের এ রেকর্ডই এযাবতকালের সর্বোচ্চ। এসময়ে শুধু বরিশাল জেলায়ই আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১০৪। এনিয়ে দক্ষিণাঞ্চলে কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ৮০৬-এ উন্নীত হল। আর দক্ষিণাঞ্চলের হটস্পট বরিশাল মহানগরীতে এসময় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬০-এর বেশী। বুধবার দুপুরের আগের ২৪ ঘন্টায় সুস্থ্য হয়ে উঠেছেন আরো ১১ জন। তবে বৃহস্পতিবার সুস্থতার কোন খবর দিতে পাররেনি স্বাস্থ্য বিভাগ। এনিয়ে আক্রান্ত ৮০৬ জনের মধ্যে ১৫৯ জন সম্পূর্ণ সুস্থ্য হয়ে উঠেছে বলে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে। তবে এপর্যন্ত সরকারী হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন মাত্র ১৭৮জন। 

গত ৪৮ ঘন্টায় নতুন আক্রান্তদের মধ্যে পিরোজপুরে ৯, ভোলাতে ৭ এবং ঝালকাঠীতে ৫, বরগুনাতে ১০, আর পাটুয়াখালীতে আরো ৮ জন রয়েছে। বরিশাল মহানগরীতে প্রথম মৃত্যুর ঘটনায় জনমনে কিছুটা শংকা বাড়ছে। মহানগর পুলিশে সংক্রমন অব্যাহত রয়েছে। এপর্যন্ত পুলিশ ইউনিটে আক্রান্তের সংখ্যা শতাধীক বলে জানা গেছে। নগরীতে নতুন আক্রান্তদের মধ্যে পুলিশ ছাড়াও ডাক্তার, নার্স সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষও রয়েছে। খোদ শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই একাধীক চিকিৎসক ও নার্স ছাড়াও স্বাস্থ্য বিভাগীয় কর্মী রয়েছে। বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরেও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এছাড়া মহানগরীর প্রতিটি এলাকাতেই ইতোমধ্যে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। গোটা মহানগরী ইতোমধ্যে করোনার হটস্পটে পরিনত হলেও প্রতিরোধে জরুরী পদক্ষেপ গ্রহন না করলে তা মহামরীর রূপ নিতে পাড়ে বলে মনে করছেন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞগন।
দক্ষিণাঞ্চলের সব জেলাগুলো লক ডাউনের আওতামূক্ত করে শুধুমাত্র আক্রান্তদের বাড়ি ও সন্নিহিত প্রতিবেশীদের এর আওতায় রাখা হচ্ছে। নগরীর বাইরে বাবুগঞ্জ ও বাকেরগঞ্জ উপজেলার অবস্থাও নাজুক। এছাড়া উজিরপুর, বানরীপাড়া ও মুলাদীতেও একাধীক করোনা সংক্রমিত রোগী সনাক্ত হচ্ছে প্রতিদিন। গৌরনদীতেও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।
বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন সরকারী হাসপাতালগুলোর আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তিকৃত ৭৬৮ জনের মধ্যে ছাড়পত্র লাভ করেছেন ৩৪১ জন। গত ৪৮ ঘন্টায় বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ড থেকে ১১ জনকে এবং আইসোলেশন ওয়ার্ড থেকে ১২ জনকে ছাড়পত্র প্রদান করা হয়েছে। তবে এসময়ে হাসপাতালটির করোনা ওয়ার্ডে ও আইসোলেশন ওয়ার্ডে নতুন দুইজন করে ভর্তি হয়েছে। ফলে হাসপাতালটির করেনা ওয়ার্ডে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ৩১জন ও আইসোলেশনে ১৫ জন চিকিৎসাধীন ছিল। এ পর্যন্ত হাসপাতালটির করোনা ওয়ার্ডে সংক্রমিত ৬ জন ছাড়াও আইসোলেশন ওয়ার্ডে আরো ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। যাদের মধ্যে ৫জনের রক্ত পরিক্ষার ফলাফল পাওয়া যায়নি। তবে গত ৪৮ ঘন্টায় করোনা ওয়ার্ডে কোন মৃত্যু ছিলনা। গত ২৪ ঘন্টায় বরগুনাতে ৫ জন এবং বরিশাল ও ঝালকাঠীতে আরো ১জন করে করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ