পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
লকডাউন উঠে গেছে। বাজারে আসতে শুরু করেছে মৌসুমের সেরা ফল আম। ইতোমধ্যে গুটি জাতের আম, লিচু বাজারে এসেছে। সরকার বেঁধে দেয়া সময় আগামীকাল হতে গাছ থেকে পাড়া শুরু হবে বনেদি জাতের আম। গোপালভোগ, রানী পছন্দ, ক্ষিরসাপাতি পর্যায়ক্রমে আসবে ল্যাংড়া, আম্রপালি, ফজলি, লক্ষণভোগ, আশ্বিনাসহ নানা জাতের আম। কেমিক্যালমুক্ত ও পরিপক্ক আম ভোক্তাদের কাছে তুলে দেবার জন্য ক’বছর ধরে স্থানীয় প্রশাসন বৈঠক করে আম পাড়ার সময় সূচি ঠিক করে দেয়া হয়। এবারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
এখন রাজশাহী অঞ্চলের লাখো লাখো গাছে কোটি কোটি আমের দুলানী। চার জেলায় বাগান রয়েছে ৮০ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে। এরমধ্যে চাপাইনবাবগঞ্জে ৩০ হাজার হেক্টরের বেশি, নওগাঁয় প্রায় ২৫ হাজার হেক্টরে। রাজশাহীতে ১৮ হাজার হেক্টরে আর নাটোরে প্রায় ৫ হাজার হেক্টরে। আর ফলন হয় আট থেকে ১০ লাখ মেট্রিক টন। বাণিজ্য হয় কয়েক হাজার কোটি টাকার। আর মাস তিনেকের জন্য লাখ দুয়েক শ্রমিক জড়িয়ে পড়ে আম কেন্দ্রিক কর্মকান্ডে। এখানকার অর্থনীতিতে ‘আম’ ভাল ভ‚মিকা রেখে আসছে।
এবার মুকুল ভালো এলেও হঠাৎ বৃষ্টিতে বেশ ক্ষতি হয়। ফলে উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটেছে। তার সঙ্গে যোগ হয় কোভিড-১৯ এর যন্ত্রণা, লকডাউন। বেশ খানিকটা অনাদরে বেড়ে উঠেছে আম। তারপর শেষ মুহূর্তে এসে ঘূর্ণিঝড় আম্পান আর ঝড়ো হাওয়ায় ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ আম ঝরে যায়। কাঁচা পাকা আম ক্রেতার সঙ্কট চাষিকে ভাবিয়ে তোলে।
লকডাউনের কারণে এবার আসেনি ঢাকা, চট্টগ্রাম থেকে পাইকারী ব্যবসায়ীরা। বাগান দু’তিনবার হাত বদল হয়। সেটিও হয়নি। ফলে লকডাউনের কারণে আমের হাট বসবে কিনা, আম কীভাবে বিক্রি হবে এসব নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় ছিল চাষিরা। যদিও বিধি-বিধান মেনে আম বাজার বসানোর ব্যাপারে প্রশাসন আশ্বাস দিয়ে আসছিল। অবশেষে আম পাড়ার আগ মুহূর্তে লকডাউন তুলে নেয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীরা তৎপর হতে শুরু করেছে। তবে রফতানি নিয়ে শঙ্কা রয়েই গেছে।
আম-লিচু আর শাক-সবজি ব্যবসায়ীদের পণ্য পরিবহনের জন্য সরকার এগিয়ে এসেছে। ডাক বিভাগের গাড়ির পাশাপাশি রেল বিভাগ আমের রাজধানী চাপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকা রুটে একজোড়া ‘ম্যাংগো স্পেশাল ট্রেন’ আগামীকাল থেকে চলাচল শুরুর ঘোষণা দিয়েছে। সরকারের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে আম উৎপাদক ও ব্যবসায়ীরা। তাছাড়া লকডাউন তুলে নেয়ার কারণে কুরিয়ার সার্ভিসের ভ্যানগুলো আসতে শুরু করেছে। কুরিয়ারের পার্শ্বেল অফিসগুলোয় চলছে প্রস্তুতি। চাপাইনবাবগঞ্জের সবচেয়ে বড় আম বাজার কানসাটে শুরু হয়ে গেছে বেচাকেনা। রাজশাহীর বানেশ্বর বাজারেও শুরু হয়েছে।
গতকাল রাজশাহীর বড় বাজার সাহেব বাজার এলাকা ঘুরে দেখা যায় আম-লিচুর বেচাকেনা। নগরীর শিরোইল বাস টার্মিনালের সামনে বসে গেছে আমের বাজার। যারা বাসে কিংবা ট্রেনে ঢাকা যাচ্ছেন তারা দু’এক ঝুড়ি আম কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। সব মিলিয়ে আর সপ্তাহখানেকের মধ্যে পুরো দমে জমে উঠবে আমের বাজার। বাজারে আম আসা শুরু হলেও দামের দিকে খুব একটা সুখবর নেই ক্রেতাদের জন্য। শুরুতেই গোপালভোগ আকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে দু’হাজার তিনশ’ থেকে আড়াই হাজার টাকা মণ দরে। অন্য সময় সাধারণত গোপালের দাম এত থাকে না। দেড় হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি হয়।
শুরুতে গোপালের এমন দামে বনেদি জাতের আমের দাম কী হবে তা অনিশ্চিত। ক্রেতা-বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহের ওপর নির্ভর করবে। সবচেয়ে বড় কথা এবার আমের উৎপাদনে খানিকটা হলেও বিপর্যয় ঘটেছে। তারপরও ফলের রাজা আম বাজারে আসছে। সাধ আর সাধ্যের মধ্যে সমন্বয় ঘটিয়ে স্বাদ নেয়ার প্রচেষ্টার কমতি থাকবে না এ মধু ফলের।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।