নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বিশেষ সংবাদদাতা : শুধুই টেস্ট ব্যাটসম্যানের স্টিকারটা লেগে গেছে তার। ২০১৫ বিশ্বকাপে মেলবোর্নে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তার ব্যাটিংটা ধরেনি মনে, সেই থেকে ১৭ মাস ওয়ানডেতে ব্রাত্য মুমিনুল। টুয়েন্টি-২০-তে সেখানে দলের বাইরে ২৭ মাস। টেস্টে বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের কারো গড় তার ধারেকাছে নয়, ৩ বছরের টেস্ট ক্যারিয়ারে মুমিনুলের গড় যেখানে ৫৬.০০, সেখানে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাকিবের গড় ৩৯.৭৬, তামীমের ৩৯.৪৬। টেস্ট ম্যাচে টানা ফিফটির রেকর্ডকে বিশ্বরেকর্ডে পরিণত করার সুযোগ হাতছাড়া করেছেন গত বছর। ফতুল্লায় বৃষ্টিবিঘিœত টেস্টে ভারতের বিপক্ষে ২০টি রান করতে পারলেই ডি ভিলিয়ার্সের টানা ১২ ম্যাচে টেস্ট ফিফটির রেকর্ডে বসাতে পারতেন ভাগ। তবে টানা ১১ ম্যাচে ফিফটিতে (৪ সেঞ্চুরি, ৭ ফিফটি) শেভাগ, গম্ভীর, ভিভ রিচার্ডের মতো লিজেন্ডারি ব্যাটসম্যানদের রেকর্ডে ভাগ বসানো কম কিসের? ২ বছর ৬ মাস ২৭ দিনের মধ্যে এমন রেকর্ডই শুধু নয়, বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের মধ্যে টেস্টে দ্রুততম হাজারি ক্লাবের সদস্যও তিনি। মাত্র ১১ টেস্টেই হাজার রানের মাইলফলক ছুঁয়েছেন।
অথচ, গত এক বছরে সাকিব, তামীম, মুশফিকুররা সীমিত ভার্সনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার সুযোগ পেলেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে মুমিনুলের বর্ষপূর্তির সামনে দাঁড়িয়ে। আর ১১ দিন হলেই টেস্টহীন বর্ষপূর্তি কাটাবেন কক্সবাজারের এই ছেলেটি। টেস্টের বাইরে বাংলাদেশ দীর্ঘদিন, আক্ষেপটা তাই একটু বেশিই টেস্টের ওয়ান্ডার বয়ের। গত বছরের ৩ আগস্টের পর টেস্টের বাইরে বাংলাদেশ, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পরবর্তী টেস্ট খেলতে এখনো অপেক্ষা তিন মাসের। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বাইরে এত লম্বা সময় কাটানোর যন্ত্রণা ভালই টের পাচ্ছেন মুমিনুলÑ‘আমি বছরে তিন-চারটা খেলার সুযোগ পাই। মানুষের প্রত্যাশা কি, তা জানি না। কিন্তু আমার নিজের আকাক্সক্ষা অনেক বেশি। কারণ একটা বছরে আর কতটাই টেস্ট পাব।’
টি-২০ বিশ্বকাপকে গুরুত্ব দিয়ে আইসিসি’র ফিউচার ট্যুর প্রজেক্ট ( এফটিপি) থেকে বরাদ্দকৃত টেস্ট পর্যন্ত দিয়েছে বাদ বিসিবি, সে কস্টটা একটু বেশিই পাচ্ছেন মুমিনুল। ঘরোয়া ক্রিকেটে দীর্ঘ পরিসর ম্যাচে রানের মধ্যে থেকেও টেস্ট খেলার সুযোগ পাননি। সে কারনেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হোমে প্রতীক্ষিত টেস্ট সিরিজের দিকে তাকিয়ে তিনি। সাকিব,তামীমরা গত ১ বছরে সীমিত পরিসরের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেললেও দীর্ঘ পরিসর ম্যাচের বাইরে ছিলেন, সে কারনেই ১৪ মাস পর টেস্টে অবতীর্ণ হওয়ার আগে অন্যদের ভাবনা যেখানে টেস্টে মানিয়ে নেয়া, সেখানে টেস্টে মানিয়ে নেয়ার দুর্ভাবনা পিছু নিচ্ছে না মুমিনুলেরÑ‘অনেক দিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলার মধ্যে নেই। তাই হয়তবা অনেকে মনে করছেন একটু সমস্যা হবে কিনা? আশা করি আমার বেলায় এমন কোনো সমস্যা হবে না। কারণ এর মধ্যে আমি বিসিএল ও জাতীয় লিগ খেলেছি। চার দিনের খেলার মধ্য দিয়ে টেস্ট খেলার মতই টাচে ছিলাম। অন্যরা ওভাবে ছিলো না। সে কারনেই অন্যদের চেয়ে আমি একটু এগিয়ে থাকবো।’
টেস্টে ফিরেই পারফরর্ম করতে চান মুমিনুল। নিজের ক্যারিয়ারের অতীত থেকে এমন আত্মবিশ্বাসই পাচ্ছেন এই বাঁ হাতি মিডল অর্ডারÑ‘বিশ্বকাপের পর আমি পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্টে ফিরে দু’টি ফিফটি করেছি। অনেকেই বলাবলি করেছে, ওই সময়ে ওই রান করা কষ্টকর। সাকিব ভাই, তামিম ভাই পর্যন্ত বলেছেন, এতদিন বাইরে থাকার পর এভাবে খেলা কঠিন। কঠিন হলেও আমি ওভাবে চিন্তা করি না। এক বছর পর হোক, কিংবা দশ বছর পর, পারফর্ম না করলে বাদ পড়ে যাবো, তা জানি। এমনিতেই আমরা টেস্ট কম খেলি, তাই টেস্টে ফিরে পারফর্ম করতেই হবে।’
টেস্ট স্টিকার লেগে যাওয়ায় ওয়ানডে এবং টি-২০তে ফিরতে সমস্যা হচ্ছে। টেস্টের স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যান শুনতে হচ্ছে তাকে। এমন পরিণতি নিয়ে মিশ্র অনুভূতি তারÑ‘কষ্টও লাগে না, গর্বও হয় না। এই জিনিসটা আমি নিজে তৈরি করেছি। টেস্টে আমার গড় ভালো। ওইভাবেই আমি নিজেকে তৈরি করেছি।’
সদ্য সমাপ্ত ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে ৫০ ওভারের ম্যাচে দারুণ পারফর্ম করেছেন। ১৬ ম্যাচে করেছেন ভিক্টোরিয়ার এই মিডল অর্ডার ৬৭১ রান। সর্বাধিক ৭টি ফিফটি, স্ট্রাইক রেটটাও দারুন ( ৯৫.৯৯)! সর্বাধিক রান সংগ্রাহকদের তালিকায় ৫ম। এমন ব্যাটিংয়ে ওডিআই ক্রিকেটে মুমিনুলের প্রত্যাবর্তন প্রত্যাশা করছেন অনেকে। তবে এক্ষুনি ওয়ানডেতে ফেরার স্বপ্ন দেখছেন না মুমিনুল। টেস্টে পারফর্ম করে ফিরতে চান ওয়ানডেতেÑ‘টেস্ট ছাড়া অন্য ফরম্যাট নিয়ে আপাতত চিন্তা করছি না। যেভাবে আমাকে টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, তাতে ওয়ানডেতে ঢুকতে হলে আমাকে আগে টেস্টে ভালো খেলতে হবে। ওই জায়গাটা শক্তিশালী রেখে আমাকে অন্য ফরম্যাটের কথা ভাবতে হবে। যদি টেস্টে খুব ভালো পারফর্ম করি তাহলে ভবিষ্যতে কোচ ও নির্বাচকরা ওয়ানডের কথা বিবেচনা করবেন। আগে টেস্ট তারপর অন্য ভার্সনের ক্রিকেট।’
বিভিন্ন দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে সাকিব-মুস্তাফিজুরের পারফরমেন্স থেকে প্রেরনা পাচ্ছেন মুমিনুলÑ‘আগে খেলতে সাকিব ভাই। এখন মুস্তাাফিজ। মুস্তাফিজকে এখন অন্য লেভেলের মনে হয়। দেখতেও ভালো লাগে এবং নিজের মধ্যেও আত্মবিশ্বাস জেগে উঠে। ওরা যেরকম পারছে আমিও সেরকম স্বপ্ন দেখছি।’
লর্ডস টেস্টে ইংল্যান্ডকে ছিন্নভিন্ন করেছেন পাকিস্তানি লেগ স্পিনার ইয়াসির শাহ। সে কারণে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আসন্ন টেস্ট সিরিজে ইতিবাচক পারফরমেন্সে লেগ স্পিনারের প্রয়োজন অনুভব করছেন মুমিনুলÑ‘ওয়ানডের মত আমরা টেস্টে অতটা ভালো না। তবেআমাদের দেশের কন্ডিশনে আমরা খুব ভালো দল। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তাই পজিটিভ ফল আশা করতে পারি। আমাদের এখন মুস্তাাফিজ আছে, সাকিব ভাই আছে। আমাদের একটা ভালো লেগ স্পিনার থাকলে অনেক ভালো হবে। ’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।