Inqilab Logo

বুধবার, ০৫ জুন ২০২৪, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৭ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

‘মানকাড’ বিতর্ক নিয়ে শেষ আটে উইন্ডিজ

প্রকাশের সময় : ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

রুমু, চট্টগ্রাম ব্যুরো : ৬ বল বাকি, জিততে হলে ৩ রান দরকার জিম্বাবুয়ে, হাতে ১ উইকেট। জিতলেই তারা যাবে কোয়ার্টার ফাইনালে, বাদ পড়বে ওয়েস্টইন্ডিজ। টান টান উত্তেজনার এমন ম্যাচ, তার শেষ হলো কিনা এভাবে! শেষ ওয়ারে বল করতে এসেছেন উইন্ডিজের কিমো পল। দৌড়ে এসে আম্পায়ারকে অতিক্রম করে লাফও দিলেন। কিন্তু বল ডেলিভারি না করে লাগিয়ে দিলেন নন-স্ট্রাইক প্রান্তের স্টাম্পে! ওপ্রান্তে তখন জিম্বাবুইয়ান রিচার্ড এনগাভারা। সমস্বরে আবেদন। দুই ফিল্ড আম্পায়ার আহসান রাজা ও ফিল জোন্স দুখ চাওয়া-চাওয়ি করে সিদ্ধান্ত দিলেন টিভি আম্পায়ার টিম রবিনসন রিপ্লেতে দেখলেন, এনগাভারা ক্রিজের বাইরে চলে গিয়েছিলেন বল ডেলিভারির আগেই। স্টাম্পে যখন লাগানো হলো, ব্যাট মাত্রই সীমা অতিক্রম করেছে। রান আউট!
গ্রæপে দুই দলেরই পয়েন্ট ছিল ২। জয়ী দল কোয়ার্টার ফাইনালে- এই সমীকরণ সামনে টসে জিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। ক্যারিবীয়দের দেওয়া ২২৭ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৪৯ ওভারে ৯ উইকেটে ২২৪ রান করেছিল জিম্বাবুয়ে। এরপরই ‘মানকাড’ বিতর্ক। এর আগে আরো ৮বার এমন অদ্ধুত আউট দেখেছে ক্রিকেট বিশ্ব। ১৯৪৭ সালের ১৩ ডিসেম্বর অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়ে ভারতের ভিনু মানকড় দুবার (প্রস্তুতি ম্যাচ ও পরে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে) অস্ট্রেলিয়ার বিল ব্রাউনকে এভাবে আউট করেছিলেন। এ কারণেই এই আউটের এমন নাম।
ক্রিকেটের আইনে এটি আউট। কারণ এই আউটের নিয়ম না থাকলে নন স্ট্রাইকিং প্রান্তের ব্যাটসম্যান তো বল ডেলিভারির আগেই অনেকটা পথ এগিয়ে থেকে অন্যায় সুবিধা নিতে পারত। যদিও মানকাডে আউট হওয়ার সময় ব্যাটসম্যানের অন্যায় সুবিধা নিতে চাওয়ার বদলে মুহূর্তের অসতর্কতাই বেশি করে দেখা যায়। তাই এই আউট ক্রিকেটীয় চেতনার সঙ্গে যায় কি না, এ নিয়ে সব সময় বিতর্ক হয়। হচ্ছে গতকালও। তাতে নিরুত্তাপ যুব বিশ্বকাপ রীতিমতো আগুনে উত্তাপ ঝরাচ্ছে। ম্যাচ শেষে দুই ভাষ্যকার ইয়ান বিশপ আর মপু মবঙ্গওয়া ঝাঁজাল বিতর্কেই নেমে পড়েছিলেন। সারা বিশ্বে ক্রিকেট তারকরাও টুইট করছেন। এমন অদ্ভুত উপায়ে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ থেকে বাদ যেতে হওয়ায় জিম্বাবুয়ে যেমন ম্যাচ শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের খেলোয়াড়দের সঙ্গে হাতও মেলায়নি। হু হু কান্নায় ভেঙে পড়েছে জিম্বাবুয়ের অনেকে। এভাবে বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়তে কার-ই-বা ভালো লাগে!
টুইটারেও সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটাররা পক্ষে-বিপক্ষে লিখছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বশেষ এমন আউটের শিকার হওয়া ইংল্যান্ডের জস বাটলার টুইট করে লিখেছেন, ‘যা দেখলাম তা বিশ্বাস হচ্ছে না। এটা লজ্জাজনক।’ দারুণ রোমাঞ্চকর লড়াইটি এমন লজ্জাজনকভাবে শেষ হওয়াটা যেন মানতেই পারছেন না নিউ জিল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক স্টিফেন ফ্লেমিং, ‘সঠিক কিংবা ভুল, মূল কথাটা হলো দারুণ জমে ওঠা একটি লড়াইয়ে দু:খজনক পরিসমাপ্তি হলো।’ ইংল্যান্ডের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক ওয়েন মর্গ্যান তো ক্যারবীয়দের আচরণটাই মানতে পারছেন না, ‘অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে অসম্মানজনক আচরণ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের লজ্জা পাওয়া উচিত!’ অস্ট্রেলিয়ার প্রধান কোচ ও সাবেক ব্যাটসম্যান ড্যারেন লেম্যানের কাছে এটা কোনোভাবেই আউট নয়, ‘অবিশ্বাস্য, আউট না।’ দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটার আলভিরো পিটারসেন আউটের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন, ‘অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপে যা হলো তা সমর্থন করতে পারছি না। হয়তো কোনো চিন্তা-ভাবনা ছাড়াই সিদ্ধান্তটা নেওয়া হয়েছে।’ কেউ কেউ আবার ক্রিকেটের আইনে এটি আউট, আইনের বাইরে ক্যারিবীয় যুবারা কিছু করেনি মন্তব্য করে সমর্থনও করছেন। এই যেমন ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার টিনো বেস্ট অবশ্য উত্তরসূরিদের পক্ষেই লিখেছেন, ‘দারুণ খেলেছ, ওয়েস্ট ইন্ডিজ অনূর্ধ্ব-১৯ দল, চালিয়ে যাও ছেলেরা।’

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ‘মানকাড’ বিতর্ক নিয়ে শেষ আটে উইন্ডিজ
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ