বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
প্রতীকী ছবিআসন্ন ঈদ উপলক্ষ্যে ঢাকায় নানামুখী অপরাধ ঠেকাতে সতর্ক রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঈদে আর্থিক লেনদেন বাড়ার কারণে ছিনতাইকারী ও অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা সক্রিয় হয়ে ওঠে। অপরাধের মাত্রা বেড়ে যায়। করোনা ভাইরাস আসার পর ঢাকায় অপরাধের মাত্রা কমে গিয়েছিলো। কমে মামলার সংখ্যাও। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে আবার অপরাধের মাত্রা বেড়ে গেছে। রাজধানী ঢাকার একাধিকস্থানে ছিনতাই ও টাকা লেনদেনকে কেন্দ্র করে খুনের ঘটনা ঘটেছে। এতে আরও সতর্ক হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
যেসব সড়কে ছিনতাইসহ নানামুখী অপরাধের ঘটনা ঘটে থাকে, সেখানে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। আগে যেসব ছিনতাইকারী ও অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা পুলিশের জালে আটকা পড়ে জেলে গিয়েছিলো তারা জামিনে মুক্ত হয়ে কারাগারের বাইরে আছে, নাকি এখনও অবধি কারাগারে আছে তা খোঁজ নিচ্ছে পুলিশ। এছাড়াও রাজধানীর ব্যাংক পাড়া মতিঝিলসহ ব্যবসায়ী অঞ্চলগুলোতে বিশেষ নজরদারি গড়ে তুলেছে পুলিশ । ঈদের পরও যাতে অপরাধের মাত্রা পুলিশের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকে সেদিকেও খেয়াল রাখবে আইনশৃংঙ্খলা বাহিনী। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) আব্দুল বাতেন জানান, ঈদে জননিরাপত্তার বিষয়টি আমলে নেয়া হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক রয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কয়েকদিন আগে যাত্রাবাড়ীতে প্রকাশ্যে সাইফুল ইসলাম সবুজ নামে এক ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে ৫৫ লাখ ৬৯ হাজার টাকা ছিনতাই করে ছিনতাইকারীরা। বেলা ১১টার দিকে যাত্রাবাড়ীর জনপদ মোড়ে প্রকাশ্যে এ ঘটনা ঘটে। সাইফুল ইসলাম সবুজ ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং এজেন্সি মারফুস এন্টারপ্রাইজ ও এইচ-২৪ এন্টার প্রাইজের মালিক। এ ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় তিনি একটা মামলা করেছেন। পুলিশ গতকাল পর্যন্ত এই ঘটনায় অভিযুক্তদের কাউকে শনাক্ত বা গ্রেপ্তার করতে পারেনি। গত ৩রা মে পুরান ঢাকার বাবুবাজারের মামা-ভাগনে ফলের আড়তের ম্যানেজার জুয়েল মিয়া ইসলামপুরে একটি বেসরকারি ব্যাংকে টাকা জমা দিতে যান। ব্যাংকের ভেতর ঢোকার ঠিক আগে তাকে ঘিরে ফেলে ছিনতাইকারীরা। অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ধস্তাধস্তি করে তারা টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। স্পটের কাছেই চলছিলো র্যা বের ভ্রাম্যমাণ আদালত। চেঁচামেচিতে র্যা ব সদস্যরা ধাওয়া দিয়ে দুই ছিনতাইকারীকে আটক করে ওই টাকা উদ্ধার করে।
সূত্র জানায়, করোনা ভাইরাস উপলক্ষ্যে ঢাকাসহ সারাদেশে লকডাউন চলছিলো। কিছুদিন হলো লকডাউন শিথিল করেছে সরকার। এ কারণে ঢাকায় আর্থিক লেনদেন বেড়েছে। এতে ছিনতাইকারী ও অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা আরও বেশি সক্রিয় হয়ে উঠেছে। সূত্র আরও জানায়, ঢাকার বিভিন্ন স্থানে দায়িত্ব পালনকারী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অধিকাংশ কর্মকর্তা ও সদস্য করোনা ভাইরাসজনিত নানা কার্যক্রমে ব্যস্ত। এতে সাধারণ চেকপোস্টে ডিউটি কমে গেছে। এছাড়াও মৌসুমী গ্রেপ্তার অভিযানও কমে গেছে। করোনা ভাইরাসের কারণে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে যেমন জনসমাগম কম ছিল, তেমনি সড়কও ছিল ফাঁকা। এতে আবার অপরাধীরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
ঈদে ক্রয়-বিক্রয়, ব্যবসা বাণিজ্য, অর্থের লেনদেন বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে চুরি, ছিনতাই, দস্যুতাসহ মলম পার্টি ও অজ্ঞান পার্টির কার্যক্রমত্ত বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা থাকে। সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই পুলিশ সতর্ক রয়েছে।
ডিএমপি সূত্রে জানা গেছে, যারা মোটা টাকার অংক লেনদেন করবে তারা যাতে পুলিশের কাছে আগাম তথ্য প্রদান করে থাকে। তাদের মানি নিরাপত্তায় ডিএমপির এস্কর্ট প্রদান করবে। বিষয়টি আর্থিক নিরাপত্তার কারণে পুলিশের পক্ষ্য থেকে এই অনুরোধ করা হয়েছে। কারণ দীর্ঘদিন ধরে ছিনতাইকারীরা সক্রিয় ছিল না। তারা টাকা ছিনতাই করতে গিয়ে বড় ধরনের অঘটন ঘটিয়ে দিতে পারে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধারণা। সেই বিষয়টি আমলে নিয়েই তারা এই উদ্যোগ নিয়েছে। এছাড়াও যেসব স্থানে আগে থেকে চেকপোস্ট ছিল সেখানেত্ত নিরাপত্তা অধিক বাড়ানো উদ্যোগ নেয়ার পাশাপাশি ঢাকার গুরুত্বপূর্ণস্থানে চেকপোস্ট বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশ। ঈদ পরবর্তী সময়েও এ উদ্যোগ বলবৎ থাকবে বলে জানা গেছে।
রাজশাহীতে প্রতিদিন হুহু করছে বাড়ছে করোনা রোগী। রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. এনামুল হক জানান, গত বৃৃহস্পতিবার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে ৫১টি নমুনা পাঠানো হয়। শনিবার সকাল ১০টায় তারা রিপোর্ট পাঠায়। এর মধ্যে ৭টিতে করোনা পজেটিভ পাওয়া যায়।
তবে এদের মধ্যে রাজশাহী নগরীতে কোন করোনা রোগী পাওয়া যায়নি। জেলার তানোর উপজেলায় করোনা শনাক্ত হয়েছেন ৩ জন। এছাড়া পবা উপজেলায় একজন, পুঠিয়ায় একজন ও দুর্গাপুরের একজনের শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে তানোর উপজেলায় মোট ৯ জনের করোনা শনাক্ত হলো। এদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন তানোর থানার দুই পুলিশ সদস্য।
তানোরে তিনজন আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকা থেকে ফিরেছেন দুইজন। এদের একজনের বাড়ি উপজেলার কোয়েলহাট গ্রামে। অন্যজনের বাড়ি মহাদেবপুর গ্রামে। তারা ঢাকা থেকে ফেরার পর কোয়ারেন্টাইনেই আছেন। এছাড়া এদের মধ্যে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওয়ার্ড বয় রয়েছেন।
পুঠিয়ায় নারায়ণগঞ্জ ফেরত এক শ্রমিকের করোনার রিপোর্ট পজেটিভ পাওয়া যায়। এনিয়ে গত ৬দিনে পুঠিয়ায় তিনজনের করোনা শনাক্ত হলো। আক্রান্ত রোগী উপজেলার জিউপাড়া ইউনিয়নের বিলমাড়িয়া গ্রামের চান্দু মন্ডলের ছেলে আবুল কালাম (৪০)। তিনি গত ১৭ মে নারায়নগঞ্জ এলাকা থেকে বাড়ি ফিরেছেন। বাড়ি ফেরার পরদিন ১৮ মে তার নমুনা সংগ্রহ করা হয় এবং ২২ মে তার নমুনা পরীক্ষায় করোনা পজেটিভ আসে। বর্তমানে তাকে হোস আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তার বাড়ি লকডাউন করে দিয়েছে দিয়ে উপজেলা প্রশাসন।
দুর্গাপুরে আক্রান্ত হয়েছেন একজন কিশোর। তিনি সাভারের মোহাম্মদ আলী ইয়াকুব হোসেন স্কুলের দশম শ্রেণী ছাত্র। তার নাম তুষার আহমেদ (১৬)। তার বাবা পোশাকশ্রমিক। তিনি গত ১৫ মে গাজীপুর থেকে রাজশাহী আসলে অসুস্থবোধ করলে ১৯ মে নমুনা সংগ্রহ করে স্বাস্থ্যকর্মিরা। বর্তমানে সে ্উপজেলার কিসমত গণকৈড় গ্রামে নিজ বাসার আইসোলেশনে আছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।