পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তিদের লাশ দাফনে প্রথম দিকে আত্মীয়-স্বজনরাও এগিয়ে আসেনি। এ নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতর বেকায়দায় পড়ে। লাশ দাফনের বৃহৎ সংস্থা আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলামসহ অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলোকে ডেকে করোনায় মৃত ব্যক্তিদের লাশ দাফনে সহায়তা চায় স্বাস্থ্য অধিদফতর। কিন্ত মহামারীর এ বিপদের সময়ে কেউ স্বাস্থ্য অধিদফতরের আহবানে সাড়া দেয়নি। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা বিশিষ্ট শিল্পপতি সালমান এফ রহমানের পৃষ্ঠপোষকতায় ইসলামী এনজিও আল-মারকাজুল ইসলামী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত ও সন্দেহভাজন মৃত ব্যক্তিদের লাশ দাফনে সক্রিয় ভ‚মিকা রাখছে।
দেশ বিদেশ থেকে প্রতি বছর লাশ দাফনের জন্য মোটা অঙ্কের অনুদান বা চাঁদা আদায় করলেও জাতির এ ভয়াবহ দুর্যোগকালে আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলাম করোনায় মৃত ব্যক্তিদের লাশ দাফনে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এতে দেশের সাধারণ জনগণ হতবাক হয়েছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর নিরুপায় হয়ে করোনায় মৃত ব্যক্তিদের লাশ দাফনে ইসলামী এনজিও আল-মারকাজুল ইসলামীর সহায়তা চায়। আল-মারকাজুল ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হামযা স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রস্তাবে তাৎক্ষণিক সম্মত হন। তিনি করোনায় আক্রান্ত মৃত ব্যক্তিদের লাশ দাফনের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে অত্যন্ত সাহসিকতার সাথে এ কার্যক্রম শুরু করেন।
গত ২৯ মার্চ প্রথম রাজধানীর খিলগাঁও-তালতলায় করোনায় মৃত সন্দেহভাজন এক মহিলার লাশ দাফনের মাধ্যমে আল-মারকাজুল ইসলামী যাত্রা শুরু হয়। এ সংস্থাটির বর্তমানে ২ মহিলা কর্মীসহ ২২ কর্মী এবং ৪টি অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে করোনায় মৃত ও সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের লাশ দাফনের কার্যক্রম সক্রিয়ভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। গত বুধবার পর্যন্ত এ এনজিওটি করোনা পজেটিভ ২০২টি লাশ এবং সন্দেহভাজন ১০৯টি লাশসহ সর্বমোট ৩১১টি লাশ দাফন কাজ সম্পন্ন করেছে। এর মধ্যে ২৮২টি লাশ মুসলমানের আর ২৯টি লাশ সনাতন ধর্মের। পরিস্থিতি বেশি অবনতি হলে আরো ২২টি অ্যাম্বুলেন্স রির্জাভ রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। নড়াইল-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মুফতি শহিদুল ইসলাম ১৯৮৮ সালে প্রথম আল-মারকাজুল ইসলামী বাংলাদেশ নামে এনজিও প্রতিষ্ঠা করেন। এই সংস্থাটি ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিসের সেবামূলক কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। জাতির এ ভয়াবহ দুর্যোগকালে আল-মারকাজুল ইসলামী বাংলাদেশ এর মানবতাবাদী কার্যক্রমে বিভিন্ন সংস্থা, দু’টি আন্তর্জাতিক সংস্থাসহ অনেকেই সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হামযা বলেন, সংস্থাটি সরকারের সহযোগিতার মধ্য দিয়েই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও সন্দেহভাজনদের দাফন কাজে যুক্ত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের পরামর্শ নিয়েই করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত ব্যক্তিদের লাশ দাফনসহ অন্যান্য সেবামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। তিনি আমাদের সংস্থার প্রধান পৃষ্ঠপোষক। বিশিষ্ট শিল্পপতি সালমান এফ রহমান করোনায় মৃত ব্যক্তিদের কাফনের কাপড়, অ্যাম্বুলেন্সের জ্বালানি ও কর্মীদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করেছেন।
মোহাম্মদ হামযা জানান, সরকারের অনুরোধে অতিসম্প্রতি বাংলা একাডেমির সভাপতি ড. আনিসুজ্জামানের লাশ আজিমপুর কবরাস্থানে দাফনের কার্যক্রম সম্পন্ন করেছে আল মারকাজুল ইসলামী। করোনায় মৃত ও সন্দেহভাজন মৃত ব্যক্তিদের লাশ দাফনের সক্রিয় ভ‚মিকা রাখায় এনটিভি, চ্যানেল-৯, আন্তর্জাতিক সংস্থা আইসিআরসি ও বিডিআরসিএস আল-মারকাজুল ইসলামীর প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের সুপারিশে এ এনজিওটি সম্প্রতি রাজধানীর ডিএমপি হেডকোয়ার্টারে তিন দিন ১৫০ পুলিশকে করোনায় মৃত ব্যক্তিদের লাশ দাফনের কার্যক্রম ট্রেনিং দিয়েও ভ‚য়সী প্রশংসা লাভ করেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।