Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্লেগ কখনও নির্মূল হয়নি গুটিবসন্ত নির্মূল হয়েছে

মহামারীর শেষ : কবে, কীভাবে-০৩

দ্য নিউ ইয়র্ক টাইম্স | প্রকাশের সময় : ১৪ মে, ২০২০, ৯:০৩ পিএম

জোভান্নি বোকাচ্চিও লিখেছেন, ‘ফ্লোরেন্সে আজকাল মৃত ছাগলকে দেয়া সম্মানের চেয়ে বেশি মর্যাদা দেয়া হয় না মৃত মানুষকে।’ কিছু মানুষ তাদের বাড়িতে লুকিয়ে থাকে। অন্যরা প্রাদুর্ভাবের গুরুত্ব মেনে নিতে নারাজ। তাদের মহামারী মোকাবিলার উপায় নিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘ভরপুর মদ্যপান করা, জীবনকে পুরোমাত্রায় উপভোগ করা, গান গাওয়া এবং সম্মিলিতভাবে আনন্দ উপভোগ করা এবং একজন চাহিদা প্রকাশ করার সাথে সাথে বাকি সবাইকে সামিল করে সকলকে সন্তুষ্ট করা এবং সম্পূর্ণ পরিস্থিতিকে বিশাল রসিকতা হিসাবে অগ্রাহ্য করা।’ 

একটি মহামারীর সমাপ্তি ঘটেছিল, কিন্তু প্লেগ আবার ফিরে এসেছিল। ১৮৫৫ সালে চীন থেকে সবচেয়ে প্রাণঘাতী প্লেগ শুরু হয়ে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছিল। কেবল ভারতেই এতে ১২ কোটিরও বেশি লোক মারা গিয়েছিল। বোম্বের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মানুষকে প্লেগ থেকে মুক্তি দেয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে পুরো পাড়া পুড়িয়ে দিয়েছিল। ইয়েলের ইতিহাসবিদ ফ্রাঙ্ক স্নোডেন বলেছিলেন, ‘এতে কোনো পার্থক্য ঘটেছিল কিনা তা কেউ জানতে পারেনি।’
স্নায়ূর প্লেগ কী কারণে হয়েছিল তা পরিষ্কার নয়। কিছু পন্ডিত যুক্তি দিয়েছিলেন যে, শীতকালীন আবহাওয়া রোগ বহনকারী পোকাগুলিকে মেরে ফেলেছিল। তবে শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমে এর সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছিল বলে ড. স্নোডেন উল্লেখ করেছিলেন। বা সম্ভবত ইঁদুরগুলির ভেতর একটি পরিবর্তন ঘটেছিল। উনিশ শতকের প্লেগটি অতীতের কালো ইঁদুর দ্বারা নয় বরং বাদামী ইঁদুর দ্বারা বাহিত হয়েছিল, যা আরো শক্তিশালী, আরো ক্ষতিকর এবং মানুষ থেকে দ‚রে থাকার প্রবণতা সম্পন্ন। তিনি লিখেছিলেন, ‘আপনি অবশ্যই কোনো পোষা প্রাণীর ক্ষেত্রে এমনটি চাইবেন না।’
আরেকটি অনুমান হ’ল, জীবাণুটি কম মারাত্মক রূপে বিবর্তিত হয়েছিল। অথবা হতে পারে, মানুষের গ্রহণ করা পদক্ষেপ, যেমন গ্রাম পুড়িয়ে দেয়ার বিষয়টি মহামারীটি প্রশমিত করতে সাহায্য করেছিল। প্লেগ সত্যিকার অর্থে কখনো চলে যায়নি। যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পশ্চিমের তৃণভ‚মির কুকুরগুলির মধ্যে বিশেষ করে সংক্রমণ ঘটে এবং মানুষের মধ্যেও ছড়িয়ে যেয়ে থাকতে পারে।
ড. স্নোডেন বলেছিলেন যে, নিউ মেক্সিকোয় একটি হোটেলে থাকার পর তার এক বন্ধু সংক্রমিত হয়েছিল। তার কক্ষে পূর্ববর্তী অবস্থানকারীর একটি কুকুর ছিল, যা শরীরে জীবাণুযুক্ত পোকা বহন করছিল। এই ধরনের ঘটনা বিরল এবং বর্তমানে অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে সফলভাবে চিকিৎসা করা যেতে পারে, তবে প্লেগের কোনো ঘটনা ভয় বাড়িয়ে দেয়। যে রোগগুলির আসলে চিকিৎসাগতভাবে সমাপ্ত ঘটেছিল, সেগুলোর মধ্যে একটি হ’ল গুটিবসন্ত। তবে এটি বেশ কয়েকটি কারণে ব্যতিক্রমধর্মী: এর জন্য একটি কার্যকর প্রতিষেধক রয়েছে, যা আজীবন সুরক্ষা দেয়; কোনো প্রাণী ভারিওলা মাইনর নামের জীবাণুটি বহন করে না। তাই মানুষের মধ্যে এই রোগ নির্মূল করার অর্থ ছিল সম্পূর্ণভাবে নির্মূলকরণ; এবং এর লক্ষণগুলি এতটাই প্রকট যে, সংক্রমণটি সুস্পষ্ট এবং কার্যকর পৃথকীকরণ ও যোগাযোগ সন্ধানে সহায়তা করে। (চলবে)



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ