মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বিশ্বের জানা নয়টি পারমাণবিক শক্তির একটি হচ্ছে পাকিস্তান। দেশটি তাদের পারমাণবিক অস্ত্র ভাণ্ডার ও ডকট্রিন ক্রমেই বিকশিত করছে। পাকিস্তান চায় ভূমি, আকাশ ও সমুদ্রে নিজস্ব পারমাণবিক ত্রয়ী হাসিল করতে।
ভৌগলিক অবস্থানের কারণে বিচিত্র নিরাপত্তা সমস্যার মোকাবেলা করতে হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিকে। এ কারণে তারা চায় তার পারমাণবিক অস্ত্রগুলোকে প্রাণবন্ত ও পাল্টা হামলায় বিপুল ধ্বংসলীলা সাধনের উপযোগী করতে।
ভারতের সাথে সংঘাতের পরপরই ১৯৫০-এর দশক থেকে পাকিস্তানের পরমাণবিক কর্মসূচি শুরু। প্রেসিডেন্ট জুলফিকার আলি ভুট্টোর সেই ১৯৬৫ সালে করা বিখ্যাত উক্তি স্মরণ করা যেতে পারে, ‘ভারত যদি এই বোমা বানায় তাহলে ঘাস খেয়ে, এমন কি না খেয়ে থেকে হলেও আমরা এটা বানাবো।’ ১৯৭১ সালের পর পাকিস্তানের পারমাণবিক কর্মসূচি নতুন গতি পায়। এক দিকে ভূখণ্ড হারানো, অন্যদিকে ভারতের পারমাণবিক কর্মসূচির খবর পাকিস্তানকেও একই পথে ধাবিত করে। ১৯৭৪ সালে ভারত স্মাইলিং বুদ্ধ নামে তার প্রথম পারমাণবিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়, যা এই উপমহাদেমকে পারমাণবিকীকরণের পথে নিয়ে যায়।
১৯৭৫ সালে পরমাণু বিজ্ঞানী ডক্টর এ কিউ খান বিদেশ থেকে ফিরে এলে পাকিস্তানের পরমাণু কর্মসূচি বিপুল গতি লাভ করে। তিনি সেন্ট্রিফিউজ ডিজাইন ও জ্বালানি সমৃদ্ধকরণ প্রক্রিয়া জোরদার করতে প্রয়োজনীয় ব্যবসায়িক চুক্তিগুলো করেন। ইউরোপীয় দেশগুলো এতে সহায়তা করে। বোমা তৈরির কাজ ১৯৭৮ সালেই শেষ হয় এবং ১৯৮৩ সালে এর ‘কোল্ড টেস্ট’ করা হয়। এরপর ১৯৯৮ সালে ভারত যখন টানা তিন দিনে ছয়টি বিস্ফোরণ ঘটায় তখন পাকিস্তান পাল্টা জবাবে এক দিনে পাঁচটি ও তিন দিন পর আরেকটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়।
একটি বোমা তৈরিতে কতটুকু সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের প্রয়োজন হয় সেই বিবেচনায় মনে করা হয় ১৯৯৮ সালে পাকিস্তানের হাতে ৫ থেকে ২৫টি বোমা ছিলো। এখন সেই ভান্ডারে ১৩০ থেকে ১৪০টি বোমা রয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ২০১৫ সালে কার্নেগি এনডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস অ্যান্ড স্টিমসন সেন্টার বলেছিলো যে পাকিস্তান বছরে ১২টি পারমাণবিক বোমা বানানোর ক্ষমতা রাখে। সেই হিসেবে শিগগিরই দেশটি বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম পারমাণবিক অস্ত্র ভাণ্ডারের অধিকারী হতে যাচ্ছে। অন্য বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বলছেন, পাকিস্তান নিকট ভবিষ্যতে ৪০ থেকে ৫০টির বেশি বোমা বানাতে পারবে না।
পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে স্ট্রাটেজিক প্লানিং ডিভিশনের নিয়ন্ত্রণে এবং এগুলো মূলত পাঞ্জাব প্রদেশে রাখা। ডিভিশনের ১০ থেকে ১৫ হাজার সদস্য ও গোয়েন্দা বাহিনী বোমাগুলো পাহারা দিচ্ছে। দুর্ঘটনা এড়াতে পাকিস্তান বলছে শুধু শেষ মুহূর্তে সাংকেতিক নির্দেশনা দিয়েই এগুলো সক্রিয় করা যাবে।
পাকিস্তানের পারমাণবিক মতবাদ মূলত তার চেয়ে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামরিক দিক দিয়ে বহুগুণ শক্তিশালী ভারতকে লক্ষ্য করে প্রণীত। দুই দেশের মধ্যে চিরাচরিত শত্রুতা পারমাণবিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে পারে।
ভারতের মতো পাকিস্তানের কোন ‘প্রথম আঘাত নয়’ মতবাদ নেই। প্রচলিত যুদ্ধে ভারতীয় বাহিনীর সুবিধা বাতিল করে দিতে পারমাণবিক অস্ত্র, বিশেষ করে স্বল্পমাত্রার পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের অধিকার রাখে পাকিস্তান।
পাকিস্তানের পারমাণবিক ত্রয়ী হলো স্থল, জল ও আকাশ – এই তিন পথে পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপের ক্ষমতা। পাকিস্তান তার আমেরিকান এফ-১৬ বিমানগুলো সংস্কার করে পারমাণবিক অস্ত্র বহনের উপযোগী করেছে। ফ্রান্সের তৈরি জাগুয়ার ফাইটারেরও একই সক্ষমতা রয়েছে। স্থলভিত্তিক ডেলিভারি সিস্টেমে রয়েছে বেশ কয়েক ধরনের ক্ষেপনাস্ত্র। যেমন হাতফ। এই সিরিজে ৫টি ক্ষেপনাস্ত্র রয়েছে। এছাড়া আছে শাহিন ক্ষেপনাস্ত্র। সাগর থেকে ছোড়ার জন্য পাকিস্তান তৈরি করেছে বাবুর শ্রেনীর ক্রুজ মিসাইল। এর মধ্যে বাবুর-২ হলো সবচেয়ে আধুনিক ও নিখুঁত আঘাত হানতে সক্ষম।
পাকিস্তান স্পষ্টতই এমন এক পারমাণবিক সক্ষতা গড়ে তুলেছে যেটা শুধু প্রতিরোধের কাজ করবে না, পারমাণবিক যুদ্ধও করা যাবে। পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্র ভারতকে প্রচলিত যুদ্ধ শুরু করতে বাধা দিচ্ছে। এর মানে হলো এটা প্রতিরোধক হিসেবে কার্যকর। এরপরও দুই চিরশত্রুর মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না। সূত্র: এসএএম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।