বিএনপি নেতা সাজুর তত্ত্বাবধানে বিজয় দিবস র্যালিতে বিপুল নেতাকর্মীর অংশগ্রহন
ঢাকা-১৪ আসনের বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ও দারুসসালাম থানা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এস
করোনাভাইরাসকে গুজব আর ষড়যন্ত্র বলে সরকার ও তাদের মন্ত্রীরা উড়িয়ে দিতে চেয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, আমরা শুরু থেকেই সরকারকে করোনাভাইরাসের তা-ব সম্পর্কে সতর্ক করে আসছিলাম। প্রস্তুতি গ্রহণের আহবান জানাচ্ছিলাম। অথচ ২০ মার্চেও পত্রিকায় তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদ সাহেব বলছেন, ‘বিএনপি করোনা সম্পর্কে গুজব ছড়ায়’। ২১ মার্চের পত্রিকায় ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন, ‘আমরা করোনার চেয়েও শক্তিশালী’। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন সাহেব বলে দিয়েছেন ‘করোনা মারাত্মক রোগ নয়; এটা সর্দি-জ্বরের মতো’। করোনা ঝুঁকির সময় এই সরকার আতশবাজির আলোকোৎসব করলো, ভোট করলো, কোন কোন মন্ত্রী খুব কনফিডেন্টলি বললেন, ‘করোনা এদিকে আসবে না, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বললেন, ‘চীনের চেয়ে বড় করোনা হাসপাতাল বানাবো’, এক মন্ত্রী বললেন, দুনিয়ায় যেকোন দেশের তুলনায় আমরাই সবচেয়ে ভালো প্রস্তুত”।
বুধবার (১৩ মে) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ভিডিও কনফারেন্সে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ মনে করেছিল, জনগণকে ডা-া মেরে ঠা-া রেখে কিংবা জনগণের বিরুদ্ধে র্যাব-পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি মোকাবেলা করবে। তবে এতদিন পরে এসে অবশেষে ওবায়দুল কাদের সাহেবরা মনে হয় পরিস্থিতির ভয়াবহতা একটু আঁচ করতে পেরেছেন। মঙ্গলবার ওবায়দুল কাদের সাহেব স্বীকার করেছেন, দেশের করোনা পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। যেভাবে ক্রমশ: বেড়ে চলছে আক্রান্তের সংখ্যা তাতে সামনের দিকে পরিস্থিতি আরো খারাপ হওয়ার ইঙ্গিত পাচ্ছি।’ তারা যে করোনার চেয়েও শক্তিশালী, তাহলে এখন সেই শক্তি কোথায় গেল? এখন কেন তারা ঘরের ভিতর বসে শুধু অসত্য ও বিভ্রান্তির ধারাবিবরণী দিচ্ছেন?
তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বিস্তার লাভের পর থেকেই স্বাস্থ্য সেবা ভেঙ্গে পড়েছে। এর উপর লকডাউন শিথিল করা হয়েছে। সরকার বনিকদের সাথে আপোষ করতেই শিথিল এই লকডাউন। এতে করোনা বিস্তারের পথ আরও প্রশস্ত করা হলো। দেশজুড়ে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থাপনা এখনও নড়বড়ে। একদিকে যেমন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালগুলো ঠিকভাবে সেবা দিতে পারছে না, অন্যদিকে অন্যান্য জটিলতার রোগীরাও চিকিৎসা পেতে গিয়ে হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা ত্রাণ চুরিতে মেতে উঠেছে অভিযোগ করে রিজভী বলেন, আমরা বলেছিলাম, এই ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দেয়ার জন্য। এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জনগণ প্রতিবাদ করলে আইসিটি আইনে মামলা করা হচ্ছে। ভার্চুয়াল মিডিয়ায় প্রতিবাদী মানুষকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। রাতের অন্ধকারে চোখ তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এই ভয়াবহ দুর্দিনেও ক্ষমতাসীনরা দেশকে মগের মুল্লুকে পরিণত করেছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, কিছু বন্ধ কিছু খোলা, এই বন্ধ এই খোলা, সিদ্ধান্তহীনতা ও ঘন ঘন সিদ্ধান্ত বদলের অস্থিরতা, আয়হীন মানুষের হাতে খাদ্য ও বাঁচার উপকরণগুলো পৌঁছাতে ব্যর্থতা, ছুটি না লকডাউন তা নিয়ে ধোঁয়াসা এবং এইসবের কারণে মানুষের বাইরে আসা আর এই বাইরে আসার জন্য সরকারের সব ব্যর্থতার দায় জনগণের ওপর চাপাবার চালাকি করা হচ্ছে।
বিএনপি নেতাকর্মীরা জেল, জুলুম, হয়রানি ও নির্যাতন নিপীড়ণের শিকার হচ্ছে অভিযোগ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, জাতির এই সংকটময় মুহুর্তে জনগণের দল হিসেবে বিএনপি বসে নেই। ‘সতর্কতা-সহায়তা-মানবিকতা’, এই চেতনায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আহবানে সারাদেশে চলছে বিএনপির মানবিক সহায়তা কর্মসূচি। তবে জনবিচ্ছিন্ন সরকার বিএনপির এই ইতিবাচক কাজ সহ্য করতে পারছেনা। কোথাও কোথাও আমাদেরকে যেমন ত্রাণ বিতরণে বাধা দেয়া হচ্ছে তেমনিভাবে আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হচ্ছে, তাদেরকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। অপরদিকে নিরাপদ স্থানে বসে গণমাধ্যমে সরকারের মন্ত্রী ও তাদের নেতারা বিএনপির এই মহতী উদ্যোগের বিরুদ্ধে উপহাস ও তাচ্ছিল্য করে যাচ্ছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।