Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

করোনা ভাইরাসের প্রার্দুভাব কাটিয়ে ঘুঁরে দাঁড়াচ্ছে মংলা বন্দর

মংলা উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১১ মে, ২০২০, ৩:১৩ পিএম

দেশে করোনা ভাইরাসের প্রার্দুভাব কাটিয়ে ঘুঁরে দাঁড়াচ্ছে মংলা বন্দর। প্রথম দিকে জাহাজ আগমন ও পণ্য লোডিং আনলোডিং কাজ কিছুটা কমে গেলেও এখন সব ধকল সামলে নিয়েছে এই বন্দরটি।তাই বেড়েছে কর্ম চাঞ্চল্যতার । বন্দর কর্তৃপক্ষ মনে করছেন এ বন্দরের তাদের আয় সাড়ে ৩শ’ কোটি টাকার কাছাকাছি পৌঁছাবে ।
একাধিক সূত্র জানায়, করোনা ভাইরাসের বিরুপ প্রভাব পড়েছে আর্ন্তজাতিক বাজারে। বিশ্বব্যাপী আমদানী-রফতানী বানিজ্যে মন্দা দেখা দিয়েছে। করোনার প্রভাব মোকাবেলায় গত ২৬ মার্চ থেকে সরকারি ভাবে দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা ও ব্যবসা বাণিজ্যর পরিধি সীমিত করায় নানা শংকার মধ্যে পড়েন মংলা বন্দর ব্যবহারকারী । দেশে করোনার প্রার্দুভাবের প্রথম দিকে এ বন্দরে জাহাজ আগমন ও পণ্য খালাস বোঝাই কাজে কিছুটা প্রভাব পড়লেও ধীরে ধীরে তা কেটে গিয়ে বন্দর বর্তমানে কর্ম চঞ্চল হয়ে পড়েছে। এ বন্দরে এখন গড়ে প্রতিদিন ১০/১১টি জাহাজের অবস্থান থাকছে।

বন্দরের ট্রাফিক বিভাগ সূত্র জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারীতে ১শ’টি জাহাজ ভেড়ে বন্দরে এবং ১২ লাখ ৯৬ হাজার মেট্রিক টন আমদানি ও ১৪ হাজার ২শ’৩৬ টন পণ্য এ বন্দর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রফতানী হয়েছে। ফেব্রুয়ারী মাসে ৭০টি জাহাজ আসে বন্দরে এবং ৯ লাখ ৫১ হাজার ৫শ’ মেট্রিক টন পণ্য আমদানী ও রফতানি হয় ১১ হাজার ৫শ’ ৩৯ মেট্রিক টন পণ্য। মার্চ মাসে ৭৩ টি পণ্যবাহী বানিজ্যিক জাহাজ ভেড়ে এবং ১০ লাখ ৮৪ হাজার ৬শ’৪৪ মেট্রিক টন পণ্য আমদানি ও ৭ হাজার ৬শ’২১ মেট্রিক টন পণ্য বিদেশে রফতানি হয়েছে।এপ্রিল মাসেও ৭১টি দেশী-বিদেশী বানিজ্যক জাহাজের আগমন ও নির্ঘমন সহ ৮ লাখ ৬৯ হাজার মেট্রিক টন সার, গম, কয়লা, কিংকার, সিরামিক সহ কন্টেইনারজাত নানা পণ্য আমাদানী হয় এ বন্দরে। একই সঙ্গে হিমায়িত চিংড়ি ও পাটজাতসহ বিভিন্ন পণ্য বিশ্ব বাজারে রফতানী হয়েছে ৭শ’১৯ মেট্রিক টন। এ ছাড়া চলতি অর্থ বছরের এপ্রিল পর্যন্ত বন্দরে রিকন্ডিশন গাড়ী আমাদনী হয়েছে ১১ হাজার ৭শ’৪৭টি। কিন্ত আমাদনীর ক্ষেত্রে কিছুটা হ্রাস পেয়েছে কন্টেইনারজাত পণ্য, রিকন্ডিশন গাড়ী ও মেজিনারীজ সহ অন্য পণ্য সামগ্রী।

সূত্র আরো জানায়, সব মিলিয়ে চলতি অর্থ বছরের (২০১৯-২০২০) এ পর্যন্ত মংলা বন্দরে ৯৯ লাখ ৬১ হাজার মেট্রিক টন পণ্য আমাদনী ও রফতানী হয়েছে। এ পর্যন্ত বন্দরের আয় হয়েছে ২শ’৮৩ কোটি টাকা। ২০১৮-২০০৯ অর্থ বছর আমদানী-রফতানির পরিমান ছিল ১ কোটি ১৩ লাখ মেট্রিক টন পণ্য। রিকন্ডিশন গাড়ী আমদানী হয়েছিল ১২ হাজার ৬শ’৯৫টি।

মংলা বন্দর ব্যবহারকারি ও মেসার্স নুরু এন্ড সন্স এর মালিক আলহাজ এইচ এম দুলাল জানান, বন্দর কর্তৃপক্স সঠিক ভাবে বন্দর পরিচালনা করার জন্য বন্দরে বিরুপ প্রভার পড়েনি । বন্দর ব্যবহারে তিনি সন্ঠুষ্ঠি প্রকাশ করেছেন ।

মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (ট্রাফিক) মোঃ মোস্তফা কামাল বলেন, বর্তমানে বন্দর জেটিতে আমদানী ও রফতানী পণ্যসহ ৩ হাজার ৯০ একক কন্টেইনার রয়েছে। তবে কন্টেইনার নিয়ে বন্দরে তেমন সমস্য না থাকলেও রিকন্ডিশন গাড়ীর ধারন ক্ষমতা কাছাকাছি হওয়ায় দ্রুত গাড়ী ছাড় নিতে আমদানীকারকদের বলা হয়েছে।তিনি আরও বলেন , গেল অর্থ বছরে এ বন্দরের আয় হয়েছিল ৩শ’২৯ কোটি টাকা। তবে চলতি অর্থ বছরও আয় এর কাছাকাছি পৌছাতে সক্ষম হবো।

মংলা বন্দর ব্যবহারকারী ও কন্টেইনারের মাধ্যমে পণ্য আমদানীকারক মোঃ কবির জানান, করোনা পরিস্থিতিতে বিদেশ থেকে কন্টেইনারে পণ্য আমদানীতে কিছু সংকট মোকাবেলা করতে হচ্ছে তাদের। তবে সংকটের মধ্যেও তারা পণ্যবাহী কন্টেইনার আমদানী অব্যাহত রেখেছেন। তিনি আরো বলেন, করোনার প্রভাব আরও দীর্ঘয়ায়িত হলে তাদের ক্ষতির পরিমান ৩ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে।

এ বিষয় মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, মংলা বন্দরে ৭ দিন কোন রেন্ট নেই কিন্তু চট্রগ্রাম বন্দরে প্রথম ৪দিন কোন রেন্ট ছিলনা। অপরদিকে ২০ ফিট ও ৪০ ফিট কন্টেইনার মংলা বন্দরে প্রতিদিন রেন্ট ৩ ও ৬ ডলার কিন্তু চট্রগ্রাম বন্দরে প্রতিদিন রেন্ট ৬ ও ১২ ডলার। এ বন্দরে জাহাজ ও কন্টেইনার জট কোনটাই নেই । ধরন ক্ষমতার ৪০ ভাগ জায়গা ফাঁকা রয়েছে। তাই মংলা বন্দর কতৃপক্ষ কন্টেইনার ষ্টোরেন্ট ভাড়া মওকুফের বিষয়টি ভাবছেন না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ