রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
হাওর অঞ্চলে এখনো সরকারিভাবে ধান কেনা শুরু হয়নি। বাধ্য হয়ে কৃষক অনেক কম দামে পাইকারদের কাছে ধান বিক্রি করছেন। এতে তাদের মণ প্রতি লোকসান হচ্ছে কমপক্ষে ২০০টাকা থেকে ২২০ টাকা। এ লোকসান থেকে বাঁচাতে বিভিন্ন বাজারে কেন্দ্র স্থাপন করে সরাসরি ধান কেনার জন্য কৃষকরা দাবি জানিয়েছেন।
গত ২৬ এপ্রিল থেকে সরকারিভাবে কৃষকের ধান কেনার কথা থাকলেও তা এখনো শুরু হয়নি। নেত্রকোণা জেলা প্রশাসক মইনুল ইসলাম গতকাল বলেন, কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এর মধ্যে মদন, মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুড়ি উপজেলায় বিভিন্ন ইউনিয়নে লটারির মাধ্যমে কৃষকদের নির্বাচন করা হচ্ছে। এরপর পর্যায়ক্রমে অন্যান্য উপজেলায়ও ধান কেনার এ প্রক্রিয়া শুরু হবে।
স্থানীয় কৃষকরা বলছেন সরকারিভাবে মাঠ পর্যায়ে ধান কেনা কার্যক্রম শুরু হতে আরও ১৫ দিন লাগবে। কারণ কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনার প্রক্রিয়া অনেক জটিল। প্রতিটি উপজেলার ইউনিয়ন পর্যায়ে লটারি করে কিছু সংখ্যক কৃষকের কাছ থেকে ধান কেনা হবে। গত বছর যে সব কৃষক সরকারের কাছে ধান বিক্রি করেছেন তারা এবার এ সুযোগ পাবেন না। তাই এসব জটিল প্রক্রিয়ার আবর্তে পড়ে সব কৃষক সরকারের কাছে নির্ধারিত ১০৪০ টাকা মূল্যে ধান বিক্রি করতে পারেন না। এসব জটিল প্রক্রিয়া শেষ করে সরকার যখন ধান কেনা শুরু করবে ততদিনে কৃষক তাদের প্রয়োজনে কম দামে পাইকার বা ফড়িয়াদের কাছ ধান বিক্রি করে দেবেন। এরপর সরকার তাদের লক্ষমাত্রা পূরণ করার জন্য পাইকার বা ফড়িয়াদের কাছ থেকে ধান কিনে নেবে। এতে করে কৃষক সর্বস্বান্ত হলেও লাভবান হবে মধ্যস্বত্বভোগী পাইকার ও ফড়িয়ারা।
লোকসানের হাত থেকে বাঁচাতে হাওর অঞ্চলে বিভিন্ন বাজারে কেন্দ্র স্থাপন করে সরাসরি ধান কেনার জন্য দাবি জানিয়েছেন কৃষকরা। নেত্রকোণা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার ডিঙ্গাপোতা হাওর এলাকার মান্দার বাড়ি গ্রামের কৃষক কদ্দুস মিয়া বলেন, সারা বছরে তাদের এই একটি মাত্র ফসল। এই বোরো ধান বিক্রি করে তাদের সবার পরনের কাপড় থেকে শুরু করে সংসারের যাবতীয় সব কিছু করতে হয়। তাই ধান মাড়ানোর সাথে সাথে তা বিক্রি করতে হয়। এখন তারা প্রয়োজনেই পাইকারের কাছে কম দামে ধান বিক্রি করছেন। সরকার যদি সরাসরি বিভিন্ন বাজারে কেন্দ্র স্থাপন করে ধান কেনা শুরু করতো তাহলে কম দামে তাদের ধান বিক্রি করতে হতো না। তিনি বিভিন্ন বাজারে সরাসরি ধান কেনার জন্য দাবি জানান।
সরকার এবার ২৬ টাকা কেজি অর্থাৎ ১০৪০ টাকা মণ দরে ধান কেনার ঘোষণা দিয়েছে। কৃষক এখনো সে দামে ধান বিক্রি করতে পারছেন না। তারা পাইকারদের কাছে ৬৮০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা মণ দরে ধান বিক্রি করছেন। সরকারি হিসাবে প্রতি মণ ধানের উৎপাদন খরচ ৮৫০ টাকা। আর কৃষকদের হিসাবে প্রতি মণ ধানের উৎপাদন খরচ ৯০০ টাকারও বেশি। বর্তমানে কৃষক বিক্রি করছেন ৬৮০ টাকা থেকে ৭০০ টাকা। প্রতি মণে লোকসান হচ্ছে ২২০ টাকা। হাওরের অনেক কৃষক দাদন ব্যবসায়ী-এনজিওসহ বিভিন্ন স্থান থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে ধান চাষ করে এখন কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। শ্রমিক সঙ্কটে দিশে হারা কৃষকদের পাশে এবার ধান কাটায় মানবিকতার হাত বাড়িয়ে এলাকার বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ দাঁড়িয়েছেন। তবে সরকার এখন কৃষকের ধান কিনতে তাদের পাশে নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।