নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস ডেস্ক : এন্টিগুয়ার স্যার ভিভ রিচার্ডস স্টেডিয়ামের দুই বোলিং প্রান্তের নামকরণ করা হয়েছে দুই ক্যারবীয় গ্রেট বোলারের নামে। ‘স্যার অ্যান্ডি রবার্ট এন্ড’ ও অপর প্রান্তের নামকরণ করা হয়েছে ‘স্যার কার্লি অ্যামব্রোস এন্ড’। এই দুই সাবেক ডানহাতি ফাস্ট বোলার ১৪৫ টেস্টে ২২.৫৩ গড়ে নিয়েছেন ৬০৭ উইকেট। যার মধ্যে ৫ উইকেট নিয়েছেন ৩৩ বার, দশ উইকেট ৫ বার। আজ যখন এই মাঠে ভারতের বিপক্ষে চার ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শুরু হবে তখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের চার ফাস্ট বোলারের মিলিত উইকেট সংখ্যা ৫৬টি! গড় ৪০.৩৯, কোন ৫ উইকেট নেই।
প্রায় তিন বছর পর মাঠে গড়াচ্ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ভারতের মধ্যকার ৫ দিনের ক্রিকেট ম্যাচ। দু’দলের পরিসংখ্যান বলছে, মোট দু’দলের মোট ৯০ বারের মুখোমুখিতে ৩০ বার জিতেছে দ্বীপাঞ্চলের দলটি, ১৬ বার ভারত। বাকি ৪৪টি ম্যাচই হয়েছে ড্র। ইতিহাসের এই পরিসংখ্যান কেবল ক্যারবিয় ক্রিকেটের পুরোনো ঐতিহ্যকেই স্বরণ করিয়ে দেয়। জয়ের পাল্লাটা উইন্ডিজের দিকে বেশ ভারি হলেও প্রায় সব অর্জনই সেই ঊনবিংশ শতাব্দীর! ভারতের তাদের সর্বশেষ জয় প্রায় দেড় দশক আগের, সেই ২০০২ সালে! কিংস্টনে সেবার কার্ল হুপারের দল সৌরভ গাঙ্গুলির দলকে হারিয়েছিল ১৫৫ রানে। এখন পর্যন্ত ওটিই হয়ে আছে ভারতের বিপক্ষে ক্যারবীয়দের শেষ সুখস্মৃতি।
সেই আর এই উইন্ডিসকে দেখলে শুধু আফসোসই করতে হয়। দুই প্রজন্মেকে আলাদা করতে মাত্র একটি তথ্যই যথেষ্ঠ। বর্তমান দলের চার পেসারের সম্মিলিত টেস্ট অভিজ্ঞতা হল ৩১ ম্যাচ আর ৫৬ উইকেট! আপাত দৃষ্টিতে এই গোলা-বারুদ নিয়ে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী দলের বিপক্ষে লড়াইয়ে নামা, গুলতি দিয়ে হাতি মারার মতই বৈ কিছুই নয়।
অথচ, এই ওয়েস্ট ইন্ডিজের নামের পাশেই এ বছর যোগ হয়েছে তিন তিনটি আইসিসি’র চ্যাম্পিয়ন শিরোপা। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ, নারী অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ এবং টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। কিন্তু টেস্ট ক্রিকেটে চিত্রটা এর সম্পূর্ণ বিপরীত। সেই আগস্ট ২০১২ সালের পর বাংলাদেশ আর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাদে টেস্ট সিরিজ জয়ের কোনো রেকর্ড নেই তাদের নামের পাশে।
দীর্ঘ দিন তাদের বোলিং আক্রমণের অন্যতম ভরসার প্রতীক জেরম টেইলর কিছুদিন আগেই নিয়েছেন অবসর। আরেক অভিজ্ঞ কেমার চোচ থেকেছেন উপেক্ষিত। এর অবশ্য যুক্তি সংগত কারণও আছে। গত অস্ট্রেলিয়া সফরে এই দুই বোলারের মিলিত উইকেট সংখ্যা ছিল ২টি, গড় ২৫২! ওভার প্রতি খরচাটাও প্রায় ছ’য়ের কাছাকাছি (৫.৭৯)। এরপরও ৮৩ টেস্ট আর ২৫২ উইকেট নেওয়া উদ্বোধনী বোলিং জুটিকে এভাবে উপেক্ষা করার মাশুল হয়তো দিতে হবে ক্যারবীয়দের। কার্লোস ব্রেথওয়েট, শ্যানোন গ্যাব্রিয়েল, জেসন হোল্ডার ও মিগুয়েল কামিনসকে নিয়ে গড়া ক্যারবিয় এই বোলিং আক্রমণকে বলা হচ্ছে তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে দুর্বল পেস আক্রমণ।
এ তো গেল দলে বোলারদের বর্তমান চিত্র। ব্যাটিংয়ে? ৭৪ টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা যার নামের পাশে সেই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান দিনেশ রামদিনকে নেওয়া হয়নি দলে। সেই সাথে ক্রেগ ব্রেথওয়েট ও ড্যারেন ব্রাভো না থাকায় টপ অর্ডারেও জন্ম দিয়েছে বড় প্রশ্নবোধক চিহ্নের। ব্যাটিংয়ের সবচেয়ে বড় ভারটি বহন করতে হবে মার্লন স্যামুয়েলকে। সম্প্রতি টি-টোয়েন্টিতে অসাধারণ ব্যাটিংও করছেন স্যামুয়েল। কিন্তু চিন্তার বিষয় হল, শেষ ৯ টেস্ট ইনিংসের একটিতেও বিশোর্ধ্ব ইনিংস নেই তার নামে! এর পরও বোলিংটাই ক্যারবিয়দের বড় দুঃশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
তবে, এতকিছুর পরও জয়টা যে ভারতের জন্য সহজ হবে, তা বলা যাবে না। পরিসংখ্যান অন্তঃত তাই বলে। মধ্য আমেরিকার দেশটিতে শেষ দুই সফরে (২০০৬ ও ২০১১ সালে) ভারত সিরিজ জিতেছিল ঠিকই, কিন্তু ৪ ও ৩ ম্যাচ সিরিজের দু’টি জয়ই ছিল মাত্র ১-০ ব্যবধানে। তাদের শেষ টেস্টটা হয়েছিল ডমিনিকায়। সেই ম্যাচটিও এখনো অনেক আলোচনার জন্ম দেয়। জয়ের জন্য ১৫ ওভারে ভারতের দরকার ছিল ৮৬ রান, হাতে ছিল ৭ উইকেট। এমন পরিস্থিতিতেও দু’দলের অধিনায়ক ম্যাচের ফল ড্র মেনে নিয়ে কদমর্দন করেন।
টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে বিরাট কোহলিও এখনো নতুন। একই সাথে অনিল কুম্বলের কোচিং ক্যারিয়ারটাও এখন অভিষেকের অপেক্ষায়। লক্ষ্যটা সিরিজ জয় হলেও কাজটা তাই একেবারে সহজ হবে না সফরকারীদের জন্য।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।