স্পোর্টস ডেস্ক : আগেই অঘটন না ঘটে গেলে গত বছরের উইম্বলডন আর যুক্তরাষ্ট্র ওপেন ফাইনালের রিপ্লে দেখা যাবে এ বছরের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের সেমিফাইনালেই। লন্ডন আর নিউইয়র্কের গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালে দু’বারই জোকোভিচের কাছে হেরেছিলেন ফেদেরার। মেলবোর্নের গ্র্যান্ড স্ল্যামে তার শোধ তুলতে পারলে বোনাস হিসেবে রজারের সামনে অনেকটাই খুলে যাবে চার বছরের অধরা আঠারো নম্বর গ্র্যান্ড স্ল্যাম ট্রফি হাতে তোলার সরণিও। অস্ট্রেলীয় ওপেনে সিঙ্গলসের ড্র ঘোষিত হওয়ার পর দেখা যাচ্ছে, জোকার-রজার এক অর্ধে এবং অন্য অর্ধে পড়েছেন নাদাল-মারে। ফর্মে না থাকা নাদালকে অবশ্য কোয়ার্টার ফাইনালেই প্রাক্তন অস্ট্রেলিয়ান ওপেন চ্যাম্পিয়ন ভাভরিঙ্কার চ্যালেঞ্জ সামলাতে হবে। তবে তার আগে সেই স্টেজে এসব তারকাদের পেঁৗঁছানো তো চায়। আর সেই যাত্রার শুরুটা হচ্ছে কিন্তু আজ থেকেই। বছরের প্রথম গ্রান্ড স্লাম অস্ট্রেলিয়ান ওপেন রোমাঞ্চ নিয়েই বসে আছে বলা যায়।
এদিকে, মেয়েদের ড্র-তে আবার আধুনিক জমানার দুই মহাতারকা সেরেনা আর শারাপোভা শেষ আটেই মুখোমুখি হতে চলেছেন। যদি না তার আগেই কোনো অঘটন ঘটে যায়। মেলবোর্নে ছ’বারের চ্যাম্পিয়ন সেরেনা আর মাত্র সাত ম্যাচ দূরে স্টেফি গ্রাফের ২২ গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেতাবের রেকর্ড ছোঁয়া থেকে। এবং এই মর্মে এখন থেকেই সেরেনা ভক্তকুলের টুইট আছড়েপড়া শুরু হয়ে গিয়েছে টেনিসগ্রহজুড়ে। শারাপোভা ২০০৪-এ সেরেনাকে শেষ বার হারালেও এই ‘ডুয়েল’ এখনো মেয়েদের টেনিসের মেগাম্যাচ হিসেবে স্বীকৃত। শারাপোভা-রাউন্ডের আগে-পরেও সেরেনার জন্য দু’জন কড়া প্রতিদ্বন্দ্বী ড্র অনুযায়ী অপেক্ষা করছেন মেলবোর্নে। প্রি-কোয়ার্টারে প্রাক্তন এক নম্বর ওজনিয়াকি এবং সেমিফাইনালে গত ডব্লিউটিএ ফাইনালস চ্যাম্পিয়ন রাদওয়ানস্কা। তাছাড়া, সেরেনার বর্তমান ফিটনেস নিয়েও থাকছে প্রশ্ন। গত সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র ওপেনে তার ‘ক্যালেন্ডার ইয়ার গ্র্যান্ড স্ল্যাম’ স্বপ্ন চুরমার হওয়ার পর থেকেই হাঁটুর চোটে ভুগছেন মার্কিন কৃষ্ণকলি। খেলেননি বছর শেষের ডব্লিউটিএ ফাইনালস কিংবা সদ্য ব্রিসবেন কিংবা সিডনিতে। যদিও এ দিন সেরেনা বলেছেন, ‘না খেললেও অনেক দিন ধরে ট্রেনিং করছি। সবকিছু ঠিক আছে।’
বরং সেরেনা-মাশাদের অন্য অর্ধটায় অপেক্ষাকৃত সহজ লড়াই। ওই অর্ধে মূলত লড়াইটা মুগুরুজা, কের্বারের মতো উঠতি তারকা এবং প্রবীণ ভেনাস উইলিয়ামস, ধারাবাহিকতার অভাবে ভোগা হালেপের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
তবে বছরের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যামের আগে টেনিসমহলের সবচেয়ে বেশি চর্চার বিষয়-জোকোভিচের ক্যালেন্ডার গ্র্যান্ড স্ল্যাম। বিশ্বের এক নম্বর তারকা গত মৌসুমে তিনটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম, এটিপি ট্যুর ফাইনালসহ ১১টা ট্রফি জিতেছিলেন। নতুন বছরের মাত্র ১৬ দিন কেটেছে, কিন্তু এখনই প্রাক্তন বিশ্বসেরা ম্যাটস ভিল্যান্ডারের মতো টেনিস বিদগ্ধও বলে দিচ্ছেন, ‘যদি এবার অস্ট্রেলিয়ান ওপেন জিততে পারে নোভাক, তা হলে দু’হাজার ষোলোয় ওর ক্যালেন্ডার গ্র্যান্ড স্ল্যাম হয়ে যাবে। নোভাকের অবিশ্বাস্য এনডিওরেন্স আর ফিটনেসের চূড়ান্ত পরীক্ষা নিতে পারে মেলবোর্নের টানা দু’সপ্তাহের চল্লিশ ডিগ্রির অসহ্য আবহাওয়া। কিন্তু সেটাতেও নোভাক যদি কাহিল না হয়, তা হলে তার পর প্যারিস, লন্ডন বা নিউইয়র্কে ওকে মনে হয় কিছুই আটকাতে পারবে না।’
সব মিলিয়ে টেনিসে বেশ রোমাঞ্চকর বছর অপেক্ষা করছে বলা যায়। এখন দেখার বিষয় বছরের শুরুটা কে কেমনভাবে করেন। এজন্য আজ প্রথম দিনেই কোর্টে নামছে টেনিসের সব মহাতারকারা। পুরুষ এককে নাম্বার ওয়ান ও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন নোভাক জোকোভিচের প্রতিপক্ষ ইয়েন চুং (৫১)। সুইচ তারকা রজার ফেদেরারের প্রতিপক্ষ  নিকোলাস ব্যাসিলাশভিলি (১১৭)। ওদিকে নারী এককে নাম্বার ওয়ান ও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন সেরেনা উইলিয়ামসের প্রতিপক্ষ ক্যামিলা জিওর্জি(৩৫) এবং রুশ তারকা মারিয়া শারাপোভার (৫) প্রতিপক্ষ নাও হিবিনো (৫৬)।