Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

করোনায় নিস্তব্ধ নগরীতে কৃষ্ণচূড়ার লালআভা

সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে | প্রকাশের সময় : ৩ মে, ২০২০, ৩:২৮ পিএম

করোনার কালো থাবায় নিস্তব্ধ নগরীতে গাছে গাছে কৃষ্ণচূড়ার লালআভা সৃষ্টি করেছে বৈচিত্র্যময় পরিবেশ। বন্ধ অফিসপাড়া থেকে শুরু করে অনেকটাই মানুষশূণ্য গ্রামের সবুজ প্রান্তর, আঁকাবাঁকা মেঠোপথ ও বাড়ির আঙ্গিনা ছাড়িয়ে রক্তরাঙা ফুল কৃষ্ণচূড়ার নয়নাভিরাম সৌন্দর্য্য রাঙিয়ে তুলেছে কুমিল্লা নগরীর পথ-প্রান্তর। করোনা ভীতিতে এ সৌন্দর্য্য উপভোগ করার মানুষজনের বড়ই অভাব নগরীতে। এরপরও কৃষ্ণচূড়ার রঙে প্রকৃতি সেজেছে মোহনীয় রূপে।
বাংলা প্রকৃতির রূপরঙ্গের প্রথম ঋতু গ্রীষ্ম। আর এ গ্রীষ্মেই ফুটে কৃষ্ণচূড়া। কৃষ্ণচূড়ার আদিনিবাস পূর্ব আফ্রিকার মাদাগাস্কারে হলেও সমগ্র এশিয়া জুড়ে কৃষ্ণচূড়ার জুড়ি নেই। ভারত ও পাকিস্তানে কৃষ্ণচূড়া গুলমোহর নামেই পরিচিত। বাংলাদেশে দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই কৃষ্ণচূড়া চারিদিকে ছড়িয়ে দেয় তার রক্তরাঙা রূপ। বাংলাদেশের সব জেলাতেই কৃষ্ণচূড়ার অস্তিত্ব রয়েছে। গ্রামের সবুজ প্রান্তর ঘিরে নানা গাছগাছালির ভিড়েও দেখা মেলে কৃষ্ণচূড়ার। নগর জীবনেও মানুষের পরম দৃষ্টির সীমানায় স্থান করে নিয়েছে পূর্ব আফ্রিকায় জন্ম নেয়া রক্তরাঙা কৃষ্ণচূড়া।
কুমিল্লা নগরীর রাস্তার বিভিন্ন মোড়ে ও গুরুত্বপূর্ণ অফিস, বাসভবনে অসংখ্য কৃষ্ণচূড়া গাছ ডাল-পালা ছাড়িয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এসব গাছে গাছে ফুটে থাকা রক্তরাঙা ফুল পুরো নগরকে রাঙিয়ে তুলেছে। নগরীর ছোটরার চিড়িয়াখানার পেছনে জেলা প্রশাসকের বাসভবন ও কার্যালয়ে, পুলিশ সুপারের বাসভবন ও কার্যালয়ে, পুলিশ লাইন এলাকায়, শিল্পকলা একাডেমি, কুমিল্লা প্রেসক্লাব ও গণপূর্ত ভবন চত্বরে, মোগলটুলি টেলিগ্রাফ অফিসের সামনে, ফোজদারী মোড়ে, জেলা পরিষদ ও নগর ভবনের রাস্তার পাশে, রেইসকোর্স সড়কের কৃষি ব্যাংকের সামনে, বাদুরতলা চার্চের সামনে, ধর্মসাগররের দক্ষিণ পাড়ে মহিলা মহাবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে, পার্ক চত্বরে, এতিহাসিক রাণীর কুটিরের ভেতরে ধর্মসাগরের পাড়ে, স্টেশন ক্লাবের গেইটে, ঈদগাহের পেছনে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অফিস আঙ্গিনায় ও ধর্মসাগরের পূর্বপাড়ে, জিমনেসিয়ামের সামনে, কুমিল্লা জিলাস্কুল চত্বরে, বাঙলা রেস্তোরার সামনে, চকবাজার রোডের ঐতিহ্যবাহী আমীরদীঘির উত্তর পাড়ের সড়কের পার্শ্বে এবং হাউজিং এস্ট্রেটের অধিকাংশ বাড়ীর সামনেসহ নগরীর বিভিন্ন স্থানে দেখা মিলবে কৃষ্ণচূড়া গাছের।
এবছর এমন সময় কৃষ্ণচূড়ার আর্বিভাব ঘটেছে, যখন সারা বিশ্ব করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। বিশেষ করে বাংলাদেশে গ্রীষ্ম ঋতুর এসময়টিতে করোনার প্রকোপ ব্যাপক বেড়েছে। অঘোষিত লকডাউনে সারাদেশ। পথেঘাটে মানুষের চলাফেরা নেই বললেই চলে। করোনার কারণে এবারে যেনো কৃষ্ণচূড়া ফুলের রক্তিম জাগরণ পথচারিদের মুহূর্তের জন্য হলেও শিহরণ জাগাচ্ছে না আর রোদ্দুর দুপুরে কৃষ্ণচূড়ার ছায়ায় প্রশান্তি নেয়ার মানুষজনও নেই। কেবল বাসা বাড়ির সামনে বা নগরীর উঁচু ভবনের ছাদ বা বেলকনি থেকেই মানুষ উপভোগ করছে কৃষ্ণচূড়ার ছড়িয়ে দেয়া লালআভার সৌন্দর্য্য।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ