Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

করোনা চিকিৎসায় রেমডেসিভির ব্যবহারের অনুমতি যুক্তরাষ্ট্রের

জুনেই আসতে পারে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ মে, ২০২০, ৮:৫৪ পিএম

করোনা মোকাবেলায় গত কয়েক দিনে বার বার উঠে এসেছে ‘রেমডেসিভির’ ওযুধের নাম। এ বার ঝুঁকি সত্তে¡ও করোনা আক্রান্তদের উপর জরুরিকালীন ভিত্তিতে এই ওযুধ ব্যবহারের ছাড়পত্র দিল হোয়াইট হাউস। শুক্রবার হোয়াইট হাউসে এ কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এদিকে, জুন মাসের মধ্যেই অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যাকসিন পরীক্ষার ফলাফল জানা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

কয়েক দিন আগেই চীনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে রেমডেসিভির ব্যর্থ বলে জানা গিয়েছিল। কিন্তু তার পরেই শীর্ষস্থানীয় মার্কিন মহামারি বিশেষজ্ঞ অ্যান্টনি ফসি দাবি করেন, এই অ্যান্টিভাইরাল ওযুধটি করোনা-চিকিৎসায় কাজ দিচ্ছে। তার পর সারা বিশ্বের চিকিৎসক মহলে আলোচনা শুরু হয় রেমডেসিভিরকে নিয়ে। ফসি জানিয়েছিলেন, ‘আমরা বহু পরীক্ষা চালিয়ে দেখেছি, করোনা আক্রান্ত রোগীদের সারিয়ে তুলতে রেমডেসিভির প্রায় ৩১ শতাংশ বেশি দ্রুততার সঙ্গে কাজ করছে। প্রায় ১১ দিনে সুস্থ হয়ে উঠছেন অনেকে।’ এই ওষুধ প্রয়োগে রোগীদের কোনও পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়ার শিকার হতে হয়নি বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। এই দাবিই করোনা প্রতিরোধে আশার আলো দেখায়।
এর পরই হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে দেয়া হল রেমডেসিভির ব্যবহারের অনুমতি। আমেরিকার ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)-র তরফে জানানো হয়েছে, কোভিড-১৯ আক্রান্তদের মধ্যে যাদের অবস্থা গুরুতর, যাদের রক্তে অক্সিজেনের হার ব্যাপক ভাবে কমে গিয়েছে, যাদের ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছে তাদের উপরেই প্রথম প্রয়োগ করা হবে এই ওষুধ। ফসি জানিয়েছেন, ‘এই ওষুধের কয়েক কোটি ডোজ আগামী বছরের জানুয়ারীর মধ্যেই তৈরি হয়ে যেতে পারে। বেসরকারী সংস্থাগুলোও এটি প্রস্তুত করার চেষ্টা করছে।’
গত শুক্রবার এফডিএ-এর কমিশনার স্টিফেন হানকে সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। করোনা মোকাবিলায় এই ওযুধের ব্যবহারকে ‘খুব আশাব্যঞ্জক পরিস্থিতি’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। রেমডেসিভির তৈরির পিছনে রয়েছে মার্কিন ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা গিলিড সায়েন্সেস। গিলিডের সিইও ড্যানিয়েল ও’ডে বলেছেন, ‘হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের উপর প্রথম ব্যবহার করা হবে এটি।’ এই ওষুধের প্রথম ১৫ লাখ ডোজ বিনামূল্যে দেয়ার কথা আগেই ঘোষণা করেছিল গিলিড। জানা গেছে, যে কোনও অ্যান্টি ভাইরালের কাজই হচ্ছে শরীরে বাসা বাঁধা ভাইরাসকে ধ্বংস করা এবং তার বংশবৃদ্ধি আটকে দেয়া। এ ক্ষেত্রেও একই রকম ভাবে করোনা-আক্রান্তের শরীরে ওই মারণ ভাইরাসের বংশবৃদ্ধি রুখে সংক্রমণ ঠেকাবে রেমডেসিভির।
এদিকে, যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালানো হচ্ছে। আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে এই পরীক্ষার ফলাফল অর্থাৎ, এটি করোনা প্রতিরোধে পুরোপুরি সক্ষম ও মানব দেহের জন্য নিরাপদ কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে আশা করছেন সেখানকার গবেষকরা।
এ বিষয়ে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর জন বেল জানান, ছয় সপ্তাহ অর্থাৎ জুন মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে মানবদেহে ভ্যাকসিনের প্রভাব সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। তারপরই এটি সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। প্রথম দফায় এই টিকা দেয়া হবে ব্রিটেনের এনএইচএস কর্মীদের। এখন পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে থাকা করোনাভ্যাকসিন তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। তাদের সঙ্গে আছে ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট আস্ট্রাজেনকা। ভ্যাকসিন উৎপাদন ও বৃহৎ পরিসরে বণ্টনের বিষয়ে আস্ট্রাজেনকার সঙ্গে অক্সফোর্ডের সমঝোতার বিষয়টি বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয়েছে।
দ্য মিরর জানায়, এই সমঝোতার ফলে দ্রুতই বিশ্বের সব প্রান্তে পৌঁছে দেয়া যাবে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন। ইতিমধ্যে মানবদেহে এই ভ্যাকসিন প্রবেশ করানো হয়েছে। এতে বৃটেনের শত শত স্বেচ্ছাসেবী অংশ নিয়েছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, করোনা প্রতিরোধে এই ভ্যাকসিন কাজ করার সম্ভাবনা রয়েছে।
আরেকটি সম্ভাবনাময় ভ্যাকসিন হলো এমআরএনএ-১২৭৩। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বাস্থ্য সংস্থা ও মডার্না বায়ো কোম্পানি যৌথভাবে এই ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করছে। বৈজ্ঞানিকভাবে উন্নত মানের টেকনোলজি প্রয়োগ করে এই ভ্যাকসিন তৈরি করা হচ্ছে। কোভিড-১৯ ভাইরাসের জেনেটিক পদার্থ, যা অপরিহার্য এ ভাইরাসের বেঁচে থাকার জন্য, সেটাকে পৃথক করে তৈরি করা হয়েছে এই ভ্যাকসিনে। এটারও পরীক্ষা শুরু হয়ে গেছে মানুষের শরীরে। শিগগিরই জানা যাবে এই ভ্যাকসিনের সার্থকতা। সূত্র : ডেইলি মেইল, দ্য গার্ডিয়ান।



 

Show all comments
  • Faisal Ahmad ৩ মে, ২০২০, ১:১৯ এএম says : 0
    করোনা চিকিৎসায় হয়ত এটি একটি কার্যকরি ঔষধ হতে পারে। ইনকিলাবকে ধন্যবাদ যে, আমাদেরকে এমন হতাসার মুহুর্তে এই সংবাদটি প্রচার করেছে। অবশ্য আমি আগে থেকে তার সাথে এর ব্যাপারে পরিচিত। আমি একটি স্বাস্থকর জীবানু পরিস্কারকারী ওয়াশিং মেশিন সম্পর্কে জানি যা করোনা ভাইরাসসহ যে কোন ভাইরাস যুক্ত কাপড়-চোপড় নিমিশেই পরিষ্কার করে দিতে পারে। এটি আমাদের বাংলাদেশি পণ্য ওয়ালটনের এই মেশিনটি অল্পদামে গুণেমানে শেরা
    Total Reply(0) Reply
  • Jahid Hasan ৩ মে, ২০২০, ১:২১ এএম says : 0
    আলহামদুলিল্লাহ
    Total Reply(0) Reply
  • Mujibur Rahman ৩ মে, ২০২০, ১:২২ এএম says : 0
    মার্কিন বৃটিশ চিকিৎসায় করোনা প্রতিষেধক হিসেবে বিভিন্ন ওষুধের পরীক্ষা নিরীক্ষা চালানোর জন্য অভিবাসী আক্রান্তদের ব্যবহার করতে পারে, সেই দুই দেশের মৃত্যু হারও বাড়তে পারে।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Abu Tahar ৩ মে, ২০২০, ১:২২ এএম says : 0
    আল্লাহ যেদিন হুকুম করবেন সেদিন সফল হবেন।
    Total Reply(0) Reply
  • Tanzid Choudhury ৩ মে, ২০২০, ১:২৩ এএম says : 0
    Not for all of the COVID conditions.
    Total Reply(0) Reply
  • তানিয়া আক্তার ৩ মে, ২০২০, ১:২৪ এএম says : 0
    করুনাতে মরার আগে গরীব মানুষেরা না খেয়ে মরবে আগে কত মানুষ মারা গেছে তখন কিছু হয় নাই আর এখন অন্য কারণে মারা গেল মানুষ বলে করণায় মারা গেছে
    Total Reply(0) Reply
  • Md Jafor Khan ৩ মে, ২০২০, ১:২৪ এএম says : 0
    এই ওষুধ কি শুধু যুক্তরাষ্ট্রে আছে নাকি সারা পৃথিবীতে বাংলাদেশে কবে আসবে
    Total Reply(0) Reply
  • Faisal Ahmad ৩ মে, ২০২০, ১:৪৬ এএম says : 0
    খুবই দারুন একটি পোষ্ট যা আমাদের মনের মধ্যে আশার সঞ্চার করছে। ইনকিলাবকে ধণ্যবা।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রেমডেসিভি-যুক্তরাষ্ট্র
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ