Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

লকডাউন: ধীরে চলুন

ভাষ্যকার | প্রকাশের সময় : ২ মে, ২০২০, ২:৪৫ পিএম | আপডেট : ৩:০৩ পিএম, ২ মে, ২০২০

দেশে করোনাভাইরাসের সামাজিক ট্রান্সমিশন শুরু হয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞদের ভাষায় করোনার ‘সামাজিক ট্রান্সমিশন’ সবচেয়ে ভীতিকর। অদৃশ্য এই ভাইরাসের সংক্রমন রোধে সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। সারাবিশ্বের মতোই বাংলাদেশ সরকার সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করতে স্কুল-কলেজ-মাদরাসা, মার্কেট, পরিবহন বন্ধ, অফিস-আদালত ছুটি দিয়েছে। একই সঙ্গে খাদ্য ও ওষুধের দোকান ছাড়া সবকিছু বন্ধ। মানুষকে ঘরের মধ্যে থেকে ‘করোনা যুদ্ধে’ সহায়তা করতে বলা হচ্ছে। এতে সাফল্য এসেছে। সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করায় অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশে এখনো করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কম। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা থেকে রক্ষা পেতে আরো কিছুদিন লকডাউন ধরে রাখা উচিত। কথায় আছে ‘প্রিভেনশন ইজ বেটার দেন কিউর’।
৩ মে ভারতের লকডাউন তুলে নেয়ার কথা ছিল। পহেলা মে জরুরী বৈঠক করে লকডাউন ১৭ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। শ্রীলংকা ও আয়ারল্যান্ড লকডাউনের মেয়াদ বাড়িয়েছে। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন লকডাউন তুলে দেয়ার সাহস পাচ্ছেন না। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হম্বিতম্বি করলেও লকডাউন তুলে দেয়ার সাহস দেখাচ্ছেন না। ইন্দোনেশিয়া গণপরিবহন আরো কিছুদিন বন্ধ রাখার কথা জানিয়ে দিয়েছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সেরে উঠলেও রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর এখনো করোনাক্রান্ত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, তাড়াহুড়ো করে লকডাউন তুলে নিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে। বাংলাদেশে ইতোমধ্যে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৮ হাজার ৭৯০ জন। ৫জন পুলিশ, দুজন সাংবাদিক এবং কয়েকজন ডাক্তারসহ প্রাণ হারিয়েছেন পৌনে দুইশ মানুষ। আইন শৃখলা বাহিনীর ৮ শতাধিক সদস্য, ১৭ কারারক্ষি, সংসদ ভবনে দায়িত্বপালনরত আনছার, ৫৪০ ডাক্তারসহ প্রায় ১২শ স্বাস্থ্যকর্মী, ৪০ সাংবাদিক করোনায় আক্রান্ত। নওগাঁ-২ এমপি শহীদুজ্জামান সরকার করোনায় আক্রান্ত। গার্মেন্টস অধ্যুষিত এলাকা সাভার, নারায়ণগঞ্জ, মিরপুর, গাজীপুর হট স্পট। ইতোমধ্যে হাজার গার্মেন্টস খুলে দেয়া হয়েছে। বেশির ভাগই নিয়ম মানছেন না। জেনেশুনে কি কেউ বিষ পান করতে চায়?
সামনের পৃথিবী অনিশ্চিত। মানুষ না বাঁচলে অর্থ দিয়ে কি হবে? আগে জীবন তারপর উন্নয়ন। লকডাউন মানুষ মানিয়ে নিয়েছে। খাদ্য ও অতি প্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহন চলছে। জনশক্তি কম লাগায় অর্থনীতির অক্সিজেন কার্গো চালু করা যেতে পারে। কিন্তু গণপরিবহন চালু করা হবে আত্মঘাতি।
উন্নত দেশগুলোতে লোকসংখ্যা কম হওয়ার পরও গণপরিবহন খুলে দেয়ার সাহস দেখাচ্ছে না। আমাদের গণপরিবহনে প্রচ- ভীড় হয়। সংক্রমন আরো ছড়িয়ে পড়বে।
আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে রমজানে ব্যবসায়ীরা মার্কেট খুলে দেয়ার দাবি জানাচ্ছে। করোনাভাইরাস কাপড়ের মাধ্যমে ছড়ায়। মার্কেট খুললেই মহিলারা হুমড়ি খেয়ে পড়বেন; মেয়েদের স্বভাব ১০টি কাপড় উল্টেপাল্টে একটি কিনবেন। ওই কাপড় আরেকজন উল্টেপাল্টে দেখবেন। এতে অনেকের মধ্যে সংক্রমন ছড়িয়ে পড়বে। খাদ্যের মতো বস্ত্র মানুষের মৌলিক চাহিদার হলেও দুইতিন মাস বস্ত্র না কিনলেও সমস্যা হয় না। ব্যবসায়ীরা এতো অধৈর্য্য হচ্ছেন কেন? মার্কেট এক সাপ্তাহ খোলা থাকলেই সারা বছরের ব্যবসা হয়ে যায়। করোনা থেকে বাঁচতে মানুষকে আরো ধৈর্য ধরতে হবে। আমরা দেখেছি যেখানে লেকডাউন শিথিল সেখানে করোনা সংক্রমন ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। সরকারের পলিসি মেকারদের সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।



 

Show all comments
  • শওকত আকবর ২ মে, ২০২০, ৪:০২ পিএম says : 0
    সময় উপযোগী লেখার জন্য ভাষ্যকারকে ধন্যবাদ।১৫ তারিখ পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে!এমন সিদ্ধান্ত ই সঠিক হবে।।
    Total Reply(0) Reply
  • Rahmatullahbabu ২ মে, ২০২০, ৫:৪৭ পিএম says : 0
    সময় উপযোগী মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ