Inqilab Logo

বুধবার ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হঠাৎ লকডাউনের শিথিলতা ডেকে আনতে পারে বিপদ

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১ মে, ২০২০, ১:০৩ পিএম

করোনাকালের অর্ধশত দিন পেরিয়ে অনেকটাই শিথিল হয়ে পড়েছে লকডাউন। বাজারে মানুষের ভিড়, পাড়া-মহল্লার প্রায় সব ধরনের দোকানপাট খোলা। রাস্তার মোড়ে মোড়ে মানুষ আর মানুষ। অলি-গলিতে চলছে আড্ডা। প্রধান সড়কে গাড়ির জটলা। ব্যস্ততম এলাকাগুলোতে যানজট। সব মিলে এ যেন ‘লকডাউন’ ‘লকডাউন’ খেলা। টেলিভিশনের খবরে দেখানো হচ্ছে, নগরীর সায়েন্সল্যাবরেটরি মোড়, আজিমপুর মোড়, সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজাসহ বিভিন্ন পয়েন্টে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর কড়া নজরদারি চলছে। গাড়িগুলোর চালক ও আরোহীকে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর মুখোমুখি হতে হচ্ছে। অথচ ভিতরের রাস্তাগুলোতে মানুষে মানুষে সয়লাব।

নগরীর এ চিত্র দেখে অনেকেই মনে করছেন, সরকার কোনো ঘোষণা ছাড়াই লকডাউন শিথিল করেছে। অপরিকল্পিত এ শিথিলতা বাংলাদেশকে ঝুঁকিতে ফেলছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, হঠাৎ করে শিথিলতা ডেকে আনতে পারে বড় বিপদ। তাই দরকার সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা। আর তা বাস্তবায়ন করতে হবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনেই। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, এমন সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী নয় বরং সুরক্ষা মাথায় রেখে জীবিকার পথ খুলে দেয়া।

গত বৃহস্পতিবার (৩০ এপ্রিল) পর্যন্ত দেশে ৬৪ হাজার ৬৬৬ টি নমুনা পরীক্ষা করে ৭ হাজার ৬৬৭ টি জনের শরীরে কভিড উনিশ শনাক্ত করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। মৃতের সংখ্যা ১৬৮ আর মোট সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৬০ জন। সে হিসেবে এই মুহূর্তে দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা সাত হাজার তিন'শ উনচল্লিশ।
এই সংখ্যা কেবল শনাক্তকৃত রোগীর। এদিকে লকডাউনের একমাস পেরিয়ে সীমিত পরিসরে পোশাক কারখানা খুলে দেয়া আর দোকানপাটে শিথিলতার পাশাপাশি ঘোষণা এসেছে স্বল্প পরিসরে বিমান ও রেল চলাচলের। এরই প্রেক্ষিতে গত কয়েক দিনে রাস্তায় বাড়ছে সাধারণ মানুষের আনাগোনা। হঠাৎ করে এমন সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাতে পারছেন না বিশেষজ্ঞরা।

এ প্রসঙ্গে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক বে-নজির আহমেদ বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের করোনা সংক্রমণের ধারা অনুযায়ী লকডাউনটা আরো কিছুদিন থাকলে ভালো হয়। শনাক্ত ও চিকিৎসা ব্যবস্থা আরো জোরদান করা দরকার। এই যে লকডাউন প্রত্যাহার করার কারণে যদি রোগী অনেক বেড়ে যায়। তাহলে আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অনেক ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, জীবন আর জীবিকার এই টানাপোড়েনে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আরো সতর্কভাবে। আর এমন সিদ্ধান্ত যেনো আত্মঘাতী না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

অধ্যাপক বে-নজির আহমেদ বলেন, কারখানা মালিকদের দায়বদ্ধতা থাকতে হবে। স্বাস্থ্য বিভাগসহ অন্য সব সংস্থার সাহায্যে এগিয়ে গেলে, সেটাই দেশের জন্য অনেক উপকারী হবে।

তবে বিষয়টি ভিন্নভাবে দেখছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ঝুঁকির কথা মাথায় রেখেই অর্থনৈতিক দিকটাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় অতিরিক্ত সচিব মো. হাবিবুর রহমান খান বলেন, বিষয়টিকে আত্মঘাতী বলা যাবে না। যদি স্বাস্থ্যগতভাবে দেখি, তাহলে ভাববো এটা খুলে দেয়ার দরকার নেই। যদি মানুষের জীবিকার বিষয়টি দেখতে হয়, তাহলে লকডাউন খুলেই দিতে হবে।
এ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন নিশ্চিত করবে বলেও জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। কিন্তু তা কতোটুকু নিশ্চিত করা হচ্ছে সে প্রশ্ন বার বার ঘুরে ফিরে আসছে সাধারণ মানুষের মনে।



 

Show all comments
  • ash ১ মে, ২০২০, ২:৩৮ পিএম says : 0
    OK, BANGLADESH E MANUSH JODI ADDDA DIE MORTE CHAY THEN MORUK !! MUSK BADHO TA MULOK KORA WICHITH !!
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: লকডাউন

১১ আগস্ট, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ