মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংকুচিত হয়েছে মার্কিন অর্থনীতি। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে লকডাউন জারি করায় অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে দেশটিতে। এটাই এ সংকোচনের কারণ। ধারণা করা হচ্ছে পরবর্তী প্রান্তিকে অবস্থা আরও খারাপ হবে।
বুধবার প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বিশ্বের বৃহত্তম এই অর্থনীতি বার্ষিক ৪ দশমিক ৮ শতাংশ হারে সংকুচিত হয়েছে। ২০১৪ সালের পর এই প্রথম সংকুচিত হলো মার্কিন অর্থনীতি। এখন প্রশ্ন উঠছে, এই অবস্থা আরও কতদূর যাবে এবং ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে দেশটির কত সময় লাগবে।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি নির্ধারকেরা বলছেন, করোনা মহামারি যুক্তরাষ্ট্রসহ সারা বিশ্বে অভ‚তপূর্ব মানব ও অর্থনৈতিক ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে অনেক পরিবারকে সরাসরি অর্থ প্রদানসহ নানা ধরনের পদক্ষেপ নিতে ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের পুনরুদ্ধার প্যাকেজ ঘোষণা করেছে মার্কিন সরকার। ফেডারেল রিজার্ভও সুদের হারকে শ‚ন্যের কাছাকাছি নামিয়ে আনাসহ অনেক জরুরি পদক্ষেপ নিয়েছে।
বুধবার ফেডারেল রিজার্ভ চেয়ারম্যান জেরোমি পাওয়েল বলেন, সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে অর্থনীতি ঘুঁরে না দাঁড়ানো পর্যন্ত ব্যাংক যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, তা অব্যাহত থাকবে। তবে তিনি সতর্ক করেছেন, চলমান সংকট অর্থনীতির ওপর ‘ব্যাপক ভার’ চাপিয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘কেউ যদি বলেন, আরও কিছু করার দরকার আছে কি না। আমার উত্তর হবে হ্যাঁ।’
মার্চের মাঝামাঝি থেকে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ২ কোটি ৬০ লাখের বেশি মানুষ বেকারভাতার জন্য আবেদন করেছেন। মার্কিন ব্যবসায়িক কর্মকাÐ এবং ভোক্তাদের আস্থা ঐতিহাসিক পর্যায়ে কমে গেছে। পূর্বাভাসকারী ব্যক্তিরা আশঙ্কা করছেন, এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাসের মধ্যে অর্থনীতি ৩০ শতাংশ সংকুচিত হতে পারে। মুডি এনালেটিকসের প্রধান অর্থনীতিবিদ মার্ক জান্দি বলছেন, এমনটা আর হয়নি, অভ‚তর্প‚র্ব। অর্থনীতি একেবারে সমতলে চলে গেছে।
মার্কিন অর্থনীতির সংকোচন করোনাভাইরাস মহামারির প্রভাবে বিশ্বব্যাপী মন্দার একটি অংশ। চীনের অর্থনীতি পর্যন্ত প্রথম প্রান্তিকে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে। ১৯৯২ সালের পর যা সর্বোচ্চ ত্রয়মাসিক সংকোচন। গতকাল জার্মানিও শুনিয়েছে হতাশার কথা। জার্মানি বলছে যে তার অর্থনীতি এই বছর রেকর্ড ৬ দশমিক ৩ শতাংশ সংকুচিত হতে পারে।
করোনা মহামারির শুরু হওয়ার আগে চলতি বছর মার্কিন অর্থনীতিতে ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হবে বলে আশা করা হচ্ছিল। এপ্রিলের মাঝে এসে সব পাল্টে গেছে। বিশ্বের প্রায় ৯৫ ভাগ দেশেই লকডাউন জারি রয়েছে। যদিও কিছু কিছু দেশ একটু একটু করে লকডাউন উঠিয়ে নিচ্ছে, তবে সামনে অনেক দেশে তা বহাল থাকবে। সূত্র : নিউ ইয়র্ক টাইমস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।