Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উপবৃত্তির টাকা যথাসময়ে না পাওয়ার শঙ্কায় চার শতাধিক শিক্ষার্থী

প্রকাশের সময় : ২১ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইসলামপুর (জামালপুর) উপজেলা সংবাদদাতা

চাহিদার চেয়ে বিতরণ সিটে ভুলক্রমে টাকা কম লেখায় উপবৃত্তির টাকা যথাসময়ে না পাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার চারটি মাদরাসার ৪ শতাধিক শিক্ষার্থী। জ্যেষ্ঠদের (তদারকি কর্মকর্তা) একটি ক্ষুদ্র ভুলে ওইসব কোমলমতি কনিষ্ঠ শিক্ষার্থীদের দিতে হচ্ছে মহামাসুল। জানা যায়, একটি ক্ষুদ্র ভুলে চার শতাধিক শিক্ষার্থীর উপবৃত্তির টাকা যথাসময়ে পাওয়া অনিশ্চিত করে দিয়েছে। অপরদিকে, একটি স্বার্থন্বেষী মহল ওই ক্ষুদ্র ভুলকে দুর্নীতি আখ্যা দিয়ে অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এতে ইসলামপুরের যমুনা ভাঙনকবলিত এলাকার চারটি স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদরাসার ৪ শতাধিক দরিদ্র শিক্ষার্থী সময়মতো তাদের উপবৃত্তির টাকা পাবে কিনা এ নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে উপবৃত্তি কর্মসূচির আওতায় দেশের অন্যান্যের মতো ইসলামপুর উপজেলার চিনাডুলী, বীরসাপধরী, পূর্ব চিনাডুলী ও দেওয়ানপাড়া স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদরাসার ছাত্রছাত্রীর জন্য উপবৃত্তির টাকা বরাদ্দ দেয় সংশ্লিষ্ট দফতর। গত ১৬ জুলাই উপজেলার চিনাডুলী ইউনিয়নের দক্ষিণ চিনাডুলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ওইসব মাদরাসার শিক্ষার্থীদের মাঝে যথানিয়মে উপবৃত্তি টাকা বিতরণের কথা ছিল। কিন্তু এতে জটিলতা দেখা দেয় উপবৃত্তি টাকা বিতরণ সিটে তদারকি কর্মকর্তাদের একটি ক্ষুদ্র ভুল। আর ওই ক্ষুদ্র ভুলের জন্য মাদরাসা কর্তৃপক্ষ টাকা নিতে অস্বীকৃতি জানালে বিতরণের বিপরীতে টাকা ফেরত যায় সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে। জানা যায়, ওই ৪টি স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদরাসার ৪ শতাধিত শিক্ষার্থীর মাঝে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের উপবৃত্তির ১ম, ২য়, ৩য় ও ৪র্থ কিস্তির মোট ৩ লাখ ২৩ হাজার ২০০ টাকা বিতরণের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংকাররা ওই বিতরণ কেন্দ্রে উপস্থিত হন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ভুলক্রমে মাদরাসার উপবৃত্তি সুবিধাভোগী শিক্ষার্থীদের চাহিদার চেয়ে বিতরণ কেন্দ্রে টাকা কম নেয়ায় মাদরাসাগুলোর কর্তৃপক্ষ ওইদিন টাকা গ্রহণ করেননি। মাদরাসার প্রধান শিক্ষকরা জানান, ব্যাংক থেকে ভুলক্রমে টাকার অংক কম আসায় তারা ভুল সংশোধনের পর টাকা গ্রহণের আবেদন জানালে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ পরবর্তী সময় ওইসব মাদরাসা উপবৃত্তির টাকা বিতরণের তারিখ নির্ধারণ করেন। কিন্তু একটি কুচক্রি মহল মাদরাসার শিক্ষার্থীদের ‘ভুয়া’ বানাতে চায় বলে দাবি ভুক্তভোগীদের। তারা অভিযোগ করে জানান, দাবি মোতাবেক চাঁদা না পাওয়ায় একটি স্বার্থান্বেষী মহল তাদের ‘ভুয়া শিক্ষার্থী’ আখ্যা দিয়ে খবর চাউর করছে। পূর্ব চিনাডুলী স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদরাসার প্রধান শিক্ষক পারভীনা বেগম জানান, ভুলক্রমে টাকা কম আসায় আমরা টাকা গ্রহণ করিনি। সেটা কীভাবে দুর্নীতি হয়। চিনাডুলী স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদরাসার প্রধান শিক্ষক আব্দুল মোতালেব জানান, আমাদের কোনো ভুয়া উপবৃত্তি সুবিধাভোগি নেই। তাছাড়া সংশ্লিষ্ট শিক্ষা কর্মকর্তা যাচাই-বাছাই করেই তালিকা করেছেন। বীরসাপধরী স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদরাসার প্রধান শিক্ষক আব্দুস সাত্তার জানান, যেহেতু দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট শিক্ষা কর্মকর্তা উপবৃত্তি সুবিধাভোগিদের তালিকা অনুমোদন দিয়েছেন। সেহেতু অনিয়ম করার সুযোগ আমাদের হাতে নেই। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা খবর ছড়ানো হচ্ছে। দেওয়ান পাড়া স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদরাাসার প্রধান শিক্ষক তোতা মিয়া জানান, একটি স্বার্থান্বেষী মহল আমাদের বিরুদ্ধে অযথা মিথ্যা রটনা ছড়াচ্ছে। ইসলামপুর উপজেলার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার খোরশেদ আলম চৌধুরী জানান, মাদরাসাগুলোতে কোনো ভুয়া শিক্ষার্থী থাকার কথা নয়। কারণ সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করেই উপবৃত্তি সুবিধাভোগিদের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। এব্যাপারে ইসলামপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রতিটি উপবৃত্তি বিতরণ কেন্দ্রে ট্যাগ অফিসার নিয়োগ দিয়েছেন। তাদের উপস্থিতিতেই ব্যাংক কর্মকর্তারা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে উপবৃত্তির টাকা বিতরণ করছেন। ওইসব মাদরাসা শিক্ষার্থী ও কর্তৃপক্ষদের দাবি, যমুনা ভাঙনকবলিত এলাকার দরিদ্র শিক্ষার্থীরা যাতে যথাসময়ে তাদের উপবৃত্তির টাকা পায়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: উপবৃত্তির টাকা যথাসময়ে না পাওয়ার শঙ্কায় চার শতাধিক শিক্ষার্থী
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ