মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : সীমান্তফটকে ঘণ্টা বেজে উঠল। মেক্সিকো থেকে অবৈধভাবে আসা ১২ জন নাগরিককে নিয়ে সেখানে হাজির মার্কিন কর্মকর্তারা। এই ১২ জনের তল্পিতল্পা যা আছে, সব কাগজের ব্যাগে ভরা। পিঠে ব্যাকপ্যাক। এসব মানুষকে নিজে দেশে ফেরত পাঠানো হবে। যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হতে অবৈধভাবে আসা এসব মানুষকে ফেরত পাঠানোর ঘটনা নিয়মিত ঘটছে। এই বিতাড়ন আরও বেড়ে যাবে, যদি রিপাবলিকান পার্টির টিকিটে ক্ষমতায় আসেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে জয়ী হলে তিনি যে নির্বাচনপূর্ব অঙ্গীকারে অবিচল থেকে লাখো অভিবাসনপ্রত্যাশীকে তাড়িয়ে দেবেন, এ নিয়েও কারও সংশয় নেই। সান ইসিড্র সীমান্তে বিতাড়িত বেশিরভাগ মানুষকে বিমর্ষ দেখা যায়। তাদের অনেকের কাছে প্রয়োজনীয় পরিচয়পত্র বা কাগজপত্র থাকে না। সীমান্তে মেক্সিকান কর্মকর্তারা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তারা প্রকৃত মেক্সিকান কি না, যাচাই করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে নানা কৌশল খাটানো হয়। কোত্থেকে আসা হয়েছে, কাছের শহরের নাম কী, সঙ্গে পিস্তো আছে কি না এসব বিষয় জানতে চাওয়া হয়। আমেরিকার মধ্যাঞ্চলে অর্থকে তুচ্ছার্থে পিস্তো বলা হয়।
মেক্সিকোতে এ কথা প্রচলিত নয়। এমন একটা পরীক্ষা দেওয়ার পর মেক্সিকোতে ঢোকার সুযোগ মেলে। মেক্সিকোর সরকারি তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্রের থাকা ২ লাখ ৭০ হাজার মেক্সিকানের মধ্যে গত বছর ৩০ হাজার লোককে ফেরত পাঠিয়েছে সান ইসিড্র সীমান্ত দিয়ে। ক্যালিফোর্নিয়ায় সান ডিয়েগো ও তিজুয়ানাকে ওই দ্বার দিয়ে আলাদা করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসনপ্রত্যাশী মেক্সিকানদের মধ্যে শিশু, নিঃসঙ্গ কিশোর-কিশোরী, সন্তানসম্ভবা নারী ও বয়স্করা রয়েছেন। কেউ কেউ সীমান্ত পাড়ি দিয়েই আবার ফিরে আসে। কিছু লোক ভুয়া পরিচয়পত্র নিয়ে সীমান্ত পাড়ি দিতে গিয়ে ব্যর্থ হয়। অনেকে আবার ভুয়া পরিচয়ে যুক্তরাষ্ট্রে বছরের পর বছর বাস করে। এসব অবৈধ মেক্সিকানের ব্যাপারে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এসব ব্যক্তিকে ধর্ষক ও মাদক ব্যবসায়ী বলে ধিক্কার দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ক্ষমতায় এল এদের তাড়িয়ে দেবেন।
ট্রাম্পের এ ঘোষণার অনেকেই ক্ষুব্ধ।
হুয়ান কার্লোস নামের বিতাড়িত এক মেক্সিকানের মতে, ট্রাম্প এমন উদ্যোগ নিতে পারেন, যাতে তারা মেক্সিকোতেই ভালো আয় করতে পারেন। যাতে তাদের সীমান্ত পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসতে না হয়। ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন, তিনি সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আবার যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টা করবেন। তিনি বলেন, আমি যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে গেলে আমাকে জেলে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমি ফিরে যাবই। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে লাখো মানুষকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত বিতাড়িত হয়েছে দুই লাখ। স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে লাখো মানুষের। বৈধ কাগজপত্র নেই, এমন ১ কোটি ১০ লাখ মানুষকে বিতাড়নের কথা বলেছেন ট্রাম্প। এদের অধিকাংশই মেক্সিকান।
বিতাড়নের কারণে অনেক পরিবারকেই আলাদা হয়ে যেতে হচ্ছে। ১৭ বছর ক্যালিফোর্নিয়ায় বাস করার পর ৪৯ বছর বয়সী ইয়োলান্ডা ভেরোনাকে ফিরে যেতে হয়েছে মেক্সিকোতে। দুই ছেলেকে ফেলে আসতে হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। তিনি তার মতো স্বপ্নভঙ্গ মায়েদের নিয়ে গড়ে তুলেছেন একটি গ্রুপ। প্রতি বৃহস্পতিবার তার মতো বিতাড়িত মা-বাবা যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া সন্তানদের সঙ্গে দেখা করতে সীমান্তে আসেন। সন্তানদের সঙ্গে কথা বলে বুক হালকা করার চেষ্টা করেন। ট্রাম্পের সমালোচনা করে ভেরোনা বলেন, আমার ধারণা, ওই ভদ্রলোক (ট্রাম্প) অসুস্থ। সব মেক্সিকানই চোর বা ধর্ষক বা অজ্ঞ নয়। যুক্তরাষ্ট্রকে এত ক্ষমতাশীল দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে আমাদেরও অবদান রয়েছে। এএফপি ও ওয়েবসাইট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।