Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

করোনা যুদ্ধে কর্মবীর কৃষক

মিজানুর রহমান তোতা | প্রকাশের সময় : ২৮ এপ্রিল, ২০২০, ৫:৩৪ পিএম

করোনার ভয়কে জয় করে মাঠে মাঠে ব্যক্তিক দুরত্বে কর্মবীর কৃষকদের ব্যস্ততা। খাদ্যের যোগান অব্যাহত রাখতে তাদের একদন্ড ফুরসত নেই। কর্মের চাকা ঘুরছে তো ঘুরছেই। শৃঙ্খলার সাথে কৃষকরা সরকারি নিয়ম ও বিধি বিধান মেনে করোনার সাথে রীতিমতো যুদ্ধ করে চলেছেন। তাদের কথা, করোনায় অনেকেই ঘরবন্দি। আমরা ঝুঁকি নিয়ে মাঠে কাজ করছি। দাবি, ফসলের উপযুক্ত মূল্য।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ ড. আবদুল মুঈদ মঙ্গলবার প্রসঙ্গক্রমে দৈনিক ইনকিলাবকে জানালেন, সারাদেশের মাঠে মাঠে পুরাদমে বোরো ধান কাটা চলছে। ভয়াবহ ভাইরাস করোনার মধ্যেও ঝড়-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে তাদের উৎপাদন যুদ্ধ চলছে। এখন শুধু ধান কাটা নয়, উৎপাদন চলছে সবজি, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ, পাট বপন বিশেষ করে আউশের বীজতলা তৈরীসহ ব্যাপক কর্মব্যস্ততা চলছে কৃষকদের। আমরা কৃষকদের মাস্ক, মাঠপর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদের পিপিই সরবরাহের ব্যবস্থা করছি। মূল কথা, করোনায় যাতে কৃষি উৎপাদন কোনভাবেই ব্যাহত না হয়, তার যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। সরকারও বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছে কৃষি উৎপাদনে। সারাদেশে বোরোতে ২ কোটি মেট্রিক টন চাল উৎপাদন হচ্ছে। আউশেও হবে এবার প্রায় অর্ধকোটি চাল।
মাঠপর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তা যশোরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ ড. আখতারুজ্জামান জানান, কৃষকদের প্রচন্ড আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে আউশ ধান উৎপাদনে। আমরাও উৎসাহিত করছি। বোরো ধান কাটার পর জমি ফেলে রাখবে না কৃষকরা। সাথে সাথেই বিভিন্ন ফসল উৎপাদনের দিকে ঝুকছে। করোনার মধ্যে কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তারা সাবধানতা অবলম্বন করে কৃষি উৎপাদনে নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, কৃষকদের সুবিধার্থে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ‘কৃষি যন্ত্রপাতি উন্নয়ন সহায়তা বাস্তবায়ন ও মনিটরিং সেল’ এর মাধ্যমে ৫০ থেকে ৭০% ভর্তুকি মূল্যে ধান গম লাগানো ও কাটার যন্ত্রপাতির (কম্বাইন হারভেস্টর, রিপার ও রাইস ট্রান্সপ্লান্টার) দেওয়া হচ্ছে। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এ্যাগ্রো প্রোডাক্ট প্রসেসিং টেকনোলজি ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস বলেন, করোনার মধ্যে কৃষকদের কৃষি উৎপাদন কোনভাবেই বিঘিœত না হয়, সেদিকে সংশ্লিষ্ট সবাইকে খেয়াল রাখা জরুরি।
খুলনার ডুমুরিয়ার মতিয়ার রহমান. যশোরের শার্শা উপজেলার শালকোনা গ্রামের জসিম উদ্দীন ও ফরিদপুরের নগরকান্দার হাসমত আলীসহ কয়েকজন কৃষক জানালেন, এই মুহূর্তে আমাদের দাবি ধানের উপযুক্ত মূল্য। করেনার মধ্যে অনেকেই ঘরবন্দি, আমরা ঝুঁকি নিয়ে মাঠে কাজ করছি, ধানের মূল্য ভালো পেলে কোন কষ্টই মনে হবে না।
এদিকে, কৃৃষকদের প্রণোদনার আওতায় এনে ক্ষতিপূরণ, পর্যাপ্ত চিকিৎসা, ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত, বিনাসুদে ঋণ ও কৃষি উপকরণ সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতি। সমিতির সভাপতি হাফিজুর রহমান ও সম্পাদক শাহজাহান কবির এক বিবৃতিতে বলেছেন, বাংলাদেশ অর্থনীতির ভিত্তি হচ্ছে কৃষি। করোনার আক্রমণে কৃষিকাজ বাধাগ্রস্ত হলে দ্বিতীয় ভয়াবহ বিপর্যয় দেখা দেওয়ার আশঙ্কা থাকবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ