মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : চীন সীমান্তবর্তী পূর্ব লাদাখে অঞ্চলে ভারী অস্ত্রশস্ত্র, ট্যাঙ্ক এবং বাঙ্কারের সংখ্যাও দ্রুত বাড়াচ্ছে ভারত। নতুন রাস্তাঘাট, বিমানঘাঁটি এবং টহলদারি বাড়িয়ে পূর্ব লাদাখকে দুর্ভেদ্য করে তোলার প্রক্রিয়া প্রায় শেষের পথে। কৌশলগত গুরুত্বের কারণেই এই সীমান্ত সুরক্ষার উদ্যোগ নিয়েছে ভারত। সীমান্তের অন্য পাশে চীন কিন্তু এই ধরনের সামরিক প্রস্তুতি অনেক আগেই সেরে ফেলেছে। তবে ভারতের একই ধরনের তৎপরতাকে মোটেই ভাল চোখে দেখছে না বেইজিং।
ভারত ও চীনের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে সমস্যা দীর্ঘদিনের। লাদাখ এবং অরুণাচল প্রদেশে ভারতের নিয়ন্ত্রণে যে অংশ রয়েছে তার অনেকটাকেই চীন নিজের বলে দাবি করে। তাই দুই দেশের মধ্যে কোনও স্থায়ী সীমান্ত এখনও চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি। লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল (এলওএসি)-কে সীমানা হিসেবে মেনে নিয়ে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী এবং সেনা টহলদারি চালাচ্ছে। ১৯৬২ সালে এই সীমান্ত বিরোধ থেকে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল চীন-ভারত। ভারতের পক্ষে লাদাখ বা অরুণাচলে প্রায় কোন সামরিক প্রস্তুতিই ছিল না। ফলে চীনা বাহিনী ভারতের অনেকটা ভিতরে ঢুকে পড়েছিল। সেই অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রেখেই ৬২-উত্তর পরিস্থিতিতে এলএসি বরাবর ভারতীয় বাহিনীর উপস্থিতি বাড়ানোর পরিকল্পনা হয়। কিন্তু চীনের প্রস্ততির তুলনায় তা ছিল সামান্য। সীমান্ত চৌকি পর্যন্ত বড় বড় রাস্তা বানিয়ে, বিপুল সামরিক পরিকাঠামো গড়ে তুলে সীমানায় চীন সব সময়ই ভারতকে চাপে রাখতে চেয়েছে।
২০১২ থেকে লাদাখ এবং অরুণাচলে দ্রুত সামরিক পরিকাঠামো বাড়ানো শুরু করে ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। প্রথমেই এলএসি বরাবর টহলদারি বাড়ানো হয়। ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী ইন্দো-টিবেটান বর্ডার পুলিশ (আইটিবিপি)-এর হাতে অনেক ভারী অস্ত্রশস্ত্র তুলে দেওয়া হয়। নতুন নতুন রাস্তা, বিমানঘাঁটি এবং ফর্টিফায়েড বাঙ্কার তৈরি করা শুরু হয়। ৫ বছরের মধ্যে লাদাখ সীমান্তে ভারতের সামরিক প্রস্তুতির ছবি পুরোপুরি বদলে দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল তৎকালীন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে।
চীন সীমানা বরাবর গুরুত্বপূর্ণ কৌশলের এলাকাগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রত্যেকটি এলাকায় পাহাড়ের গায়ে এখন উঁকি দিচ্ছে ভারতীয় সেনার ফর্টিফায়েড বাঙ্কার। সেনা চৌকিগুলিতে অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র পৌঁছে, সৈন্যসংখ্যা কয়েকগুণ বেড়েছে, ভারী গোলাবর্ষণের পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ হল পূর্ব লাদাখে ভারতীয় সেনা এবার মোতায়েন করেছে ট্যাঙ্ক বাহিনীও। শুধু লাদাখের পাহাড়ে নয়, জলভাগেও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। প্যাংগং লেকে টহল দিচ্ছে ভারতের সশস্ত্র বাহিনী। ফলে দুই দেশের সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছে মাঝেমধ্যেই। গত কয়েক বছরে নজরদারি বেড়ে যাওয়ার পর চীনা সেনার সঙ্গে এ নিয়ে বেশ কয়েক বার সংঘাত হয়েছে ভারতীয় বাহিনীর। বিতর্কিত এলাকায় চীনা ওয়াচ টাওয়ার তৈরি করতে শুরু করায় ২০১৫ সালের শেষ দিকে ভারতীয় বাহিনী একবার গোলাবর্ষণ করে সেই নির্মীয়মান টাওয়ার ভেঙে দেয়। সেই সংঘাত এখন আর কোনও পক্ষই চাইছে না। তাই ২০১৫ সালের শেষ দিক থেকে এ পর্যন্ত আর সীমা লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু বেশ কয়েক বার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়েছে। ফ্ল্যাগ মিটিং-এর মাধ্যমে মেটানো হয়েছে সে সব সমস্যা।
কিন্তু তবু চীন সীমান্তে সংঘাত হচ্ছে, পরিস্থিতি উত্তপ্ত হচ্ছে। ভারতের দাবি, এগুলোর সিংহভাগের পিছনেই চীনের প্ররোচনা রয়েছে। দুর্গম পূর্ব লাদাখ যাতে আকাশপথেও সুরক্ষিত থাকে সে ব্যবস্থাও পাকা। ১৬ হাজার ফুট উঁচুতে অবস্থিত দৌলত বেগ ওলদিতে যুদ্ধবিমানের জন্য অ্যাডভান্সড ল্যান্ডিং গ্রাউন্ড তৈরি করে ফেলেছে ভারত। দুর্গম কারাকোরাম পর্বতের মধ্যদিয়ে চীনের মধ্যে ঢোকার জন্য যে রাস্তা কৌশলগত ভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, সেই কারাকোরাম গিরিপথের মাত্র ১৬ কিলোমিটার দক্ষিণে এই বিমানঘাঁটি তৈরি করেছে ভারত। সূত্র : এবিপি, ওয়েবসাইট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।